খুলনায় শিশু রাকিবকে পৈশাচিকভাবে হত্যা মামলায় আদালতে সাক্ষী হিসেবে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে প্রত্যক্ষদর্শী শিশু নাবিল। তার বয়স ১০ বছর। নাবিল নগরীর টুটপাড়া এলাকার নাসেরের ছেলে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, বুধবার (৫ আগস্ট) বিকেলে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে নাবিল। তার নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে তিনি বিস্তারিত কিছু জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি।তিনি জানান, ছেলেটির বাবাকে অনেক অনুরোধ করে তাকে আদালতে নেওয়ার ব্যাপারে রাজি করানো হয়। মঙ্গলবার সকালে প্রত্যক্ষদর্শী শিশু নাবিল জানিয়েছিল, ‘আমি সোমবার (৩ আগস্ট) বিকেলে মামার বাসায় যাচ্ছিলাম। শরীফ মটরসের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় দেখি, রাকিবের মলদ্বারে পাইপ ঢুকিয়ে মেশিন দিয়ে হাওয়া দেওয়া হচ্ছে। “মেশিন দিয়ে যখন রাকিবের পেটের ভেতরে বাতাস ঢুকাচ্ছিল, তখন সে শুধু বলছিল- ‘মামা আর দিয়েন না, আমি মরে যাব’।” এরপর রাকিব ভাই বমি করলে তখন দোকান বন্ধ করে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়’।
তার দেওয়া এই বর্ণনা মঙ্গলবার ‘যেভাবে নির্যাতন করা হয় শিশু রাকিবকে’ শিরোনামে প্রকাশিত হয়েছিলো।
সোমবার মলদ্বারে কমপ্রেসার মেশিন দিয়ে বাতাস ঢুকিয়ে নিষ্ঠুর নির্যাতন চালিয়ে রাকিবকে হত্যা করেন টুটপাড়া কবরস্থানের পাশে শরীফ মোটর গ্যারেজের মালিক শরীফ ও তার সহযোগী মিন্টু। তাদের গ্যারেজ ছেড়ে অন্য কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার অপরাধে বিকেলে এ নির্যাতন চালান শরিফ ও মিন্টু। পরে নির্যাতনকারীরাই গুরুতর আহত অবস্থায় খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানকার চিকিৎসকরা রাকিবকে জরুরি ভিত্তিতে ঢাকায় পাঠানোর পরামর্শ দেন। খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে তার পরিবার ঢাকায় নেওয়ার পথে রাত ১২টার দিকে মারা যায় শিশু রাকিব।
নিহত রাকিবের বাবা টুটপাড়া সেন্ট্রাল রোডের দিনমজুর আলম হাওলাদার মঙ্গলবার সকালে খুলনা সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। আসামি করা হয় গ্যারেজ মালিক শরীফ (৩৫), সহযোগী মিন্টু মিয়া (৪০) ও শরীফের মা বিউটি বেগমকে (৫৫)। নির্যাতনের খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসী এক নারীসহ শরীফ ও তার ভাই মিন্টুকে পিটুনি দেন। পুলিশ আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে খুমেক হাসপাতালে ভর্তি করেছে। তাদেরকে হত্যা মামলায় আটক দেখিয়ে পুলিশি পাহারায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।