শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৪ অপরাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম: চিকিৎসার নামে মাদারীপুরের শিবচরে এক কবিরাজ বহু মেয়েকে ধর্ষণ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। চিকিৎসার নামে এক মাদ্রাসা ছাত্রীকে ধর্ষণের পর মেয়েটি অন্তঃসত্তা হয়ে পড়ে। সম্প্রতি মেয়েটির বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর ধর্ষণের ফলে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার ঘটনা প্রকাশ পেলে ঘর ভাঙ্গে নববধূ ওই মেয়েটির। এ ঘটনায় মেয়েটি থানায় মামলা করলে তাজেল মুন্সি নামের ওই কবিরাজকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
জানা গেছে, জেলার শিবচর উপজেলার শিরুয়াইল ইউনিয়নের সাদেকাবাদ গ্রামের উৎরাইল দাখিল মাদ্রাসার এক ছাত্রী অনেক দিন ধরে পেটের ব্যাথায় ভুগছিল। এ অবস্থায় তার মা পার্শবর্তী দত্তপাড়া ইউনিয়নের মগরা পুকুর পাড় গ্রামের কথিত কবিরাজ তাজেল মুন্সির (৫৫) নিকট নিয়ে যান। তাজেল মুন্সি প্রথম দিন মেয়েটিকে চিকিৎসা হিসেবে পানি পড়া দেয়। এর কয়েকদিন পরে তাজেল সাদেকাবাদ গ্রামে মেয়েটির বাড়ি যায়। সেখানে গিয়ে পেটে মালিশ করার জন্য তেল পড়া দিয়ে চলে আসে।
এর কয়েকদিন পর আবারও তাজেল চিকিৎসার নামে ওই বাড়িতে গিয়ে নিজেই মেয়েটির শরীরে তেল মালিশ করে মেয়েটিকে উত্তেজিত করে এবং এক পর্যায়ে তার সাথে শারীরিক সর্ম্পক স্থাপন করে। এবং ‘এটিই তার পেট ব্যথার চিকিৎসা’ বলে তা কাউকে না জানাতে বলেন। লজ্জা ও ভয়ে মেয়েটি এ ঘটনা কাউকে জানায়নি।
এ ঘটনার প্রায় তিন মাস পর দত্তপাড়ার এক মুদি দোকানির সঙ্গে মেয়েটির বিয়ে হয়। বিয়ের প্রায় দুই মাস পর শারীরিকভাবে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা সংক্রান্ত অসুস্থ হয়। গত ২৬ ডিসেম্বর সকালে তার স্বামী মেয়েটিকে নিয়ে স্থানীয় একটি হাসপাতালে আলট্রাসনোগ্রাম করালে মেয়েটি পাঁচ মাসের অন্তঃসত্বা বলে জানা যায়। এতেই নবদম্পত্তির মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ে। শুরু হয় চরম অশান্তি। একপর্যায়ে মেয়েটি তার স্বামীকে ধর্ষণের বিষয়টি জানায়। পরে মেয়েটিকে ডিভোর্স দেয় তার স্বামী।
২৮ ডিসেম্বর মেয়েটি দত্তপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে গিয়ে ওই কবিরাজের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ বুধবার বিকালে ওই কবিরাজকে গ্রেফতার করে। এরপরই বের হয়ে আসে চিকিৎসার নামে বহু মেয়েকে ধর্ষণের অজানা সব তথ্য। অন্তঃসত্ত্বা ওই মেয়েটি তাজেলের দৃষ্টান্তমুল শাস্তি দাবি করে বলেন, ‘ওর কারণে আমার সংসার ভেঙেছে। আমি ওর দৃষ্টান্তমুল শাস্তি দাবি করছি। ওর দ্বারা যেন আর কারও সংসার না ভাঙ্গে।’
দত্তপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য দাদন উদ্দিন মীনা বলেন, ওই ভন্ড কবিরাজের কারণে অনেকের সংসার ভেঙ্গেছে। অনেক মেয়ের সর্বনাশ করেছে চিকিৎসা দেয়ার নামে। ধর্ষণের কথা মান সম্মানের ভয়ে কেউ প্রকাশ করেনি। আমরা ওর কঠোর শাস্তি চাই। এ ব্যাপার শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির হোসেন বলেন, অভিযুক্ত তাজেল মুন্সিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।