বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২২ পূর্বাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক: অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৭৯৮-৬৭৬৩০১
মিসরের কারাগার থেকে এক তরুণীর মর্মস্পর্শি চিঠি…

মিসরের কারাগার থেকে এক তরুণীর মর্মস্পর্শি চিঠি…

we113আমার সুরমা ডটকম ডেক্স : ইসরা এল তাওয়েল কে যখন আটক করা হয় তখন তিনি কায়রোর একটি রেস্টুরেন্টে খাচ্ছিলেন। মিশরের নিরাপত্তা বাহিনী তাকে একটি ছোট ভ্যানে তুলে নেয়। দিনটি ছিল ১লা জুন। এরপর থেকে ২৩ বছর বয়সী এ তরুণী বন্দি আছেন আল কুয়ান্তার নারী কারাগারে। আদালতে একের পর এক শুনানির দিন পার হচ্ছে। বাড়ানো হচ্ছে বন্দীদশার সময়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে গুপ্তচরবৃত্তি, মিথ্যা তথ্য প্রচার আর বিচার ব্যবস্থাকে অবমাননা করার। ইসরা নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করে আসছেন। কারাগারে মানবেতর পরিস্থিতিতে দিন পার করছেন তিনি। হয়রানী, অপমান, নির্যাতন নিত্যদিনের ঘটনা। অসহায় ইসরা নিজের কষ্টের কথা জানাতে পরিবারকে চিঠি লেখা শুরু করেন। তার সাম্প্রতিক একটি চিঠি অনুমতি সাপেক্ষে প্রকাশ করে আল-জাজিরা। মর্মস্পর্শী ওই চিঠিতে ইসরা লিখেছেন, আমাকে উঠিয়ে আনা হয়েছে দু মাস পার হয়ে গেছে। আমি এখনও বিষয়টা মেনে নিতে পারছি না। এখনও প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠলেই অস্থিরতা গ্রাস করে আমাকে। নিজেকে প্রশ্ন করি। আমি কোথায়? আমি কাঁদি আর বলি, আমি শুধু বাড়িতে যেতে চাই। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আমাকে যখন আটকে রাখা হয়েছিল আমার মনে হয়েছিল আমি মৃত। মনে হয়েছিল সময় থমকে গেছে। ১৫ দিন আমার চোখ বেধে রাখা হয়েছিল। মনে হয়েছিল আমি কবরের মধ্যে আছি। আর আশা করছিলাম আল্লাহ আমাকে এখান থেকে আবার বাঁচিয়ে তুলবেন যেমন তিনি মৃতদের কবর থেকে পুনুরুত্থাণ করেন। আমাকে অপহরণের পর ১৫ দিন নামাজ পড়তে পারিনি। পাক-পবিত্র হওয়ার জন্য গোসল করতে পারিনি ১৭ দিন পর্যন্ত। দেশের এই নিরাপত্তা বেষ্টনীর ভেতরে আমার সঙ্গে যা কিছু হয়েছে একদিন আমি সব বলবো। আমি কারাগারকে ঘৃণা করি। আমি আগে কারাগারকে ভয় করতাম। কিন্তু এখন আর ভয় করি না। ৫ মিটার /৩ মিটার সেলে এখন আমার জীবন। পুরো সেল জুড়ে তেলাপোকা আর পোকামাকড়ের আস্তানা। এখানেই আমার খাবার রাখতে হয়। এখানেই জামাকাপড়। মনে হয় যেন বাথরুমের ভেতর রান্নাঘর আর একখানা বিছানা রাখা হয়েছে, যেখানে আমি থাকছি। শুধুমাত্র একটা সময়ই নিজেকে জীবন্ত মনে হয়। প্রতি সপ্তাহে আধাঘণ্টার যখন আমার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে দেয়া হয় তখন। শেষ যেদিন সবার সঙ্গে দেখা হয় সেদিন আমি মায়ের কাছে কেঁদে ফেলি। আমি তাকে বলি আমাকে ছেড়ে যেও না। আমি তাকে কষ্ট দিতে চাইনি। কিন্তু নিজেকে আটকে রাখতে পারিনি। কারাগারে আমরা সবাই অপেক্ষ করি যে ফেরেশতারা আসবে আর আমাদেরকে রক্ষা করবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com