শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০৫ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক: অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৭৯৮-৬৭৬৩০১
ঈদের আনন্দ নিরানন্দে পরিণত-ছাতকে একটি ইউনিয়নে সহস্রাধিক হতদরিদ্র ঈদে সরকারি বরাদ্ধ পায়নি

ঈদের আনন্দ নিরানন্দে পরিণত-ছাতকে একটি ইউনিয়নে সহস্রাধিক হতদরিদ্র ঈদে সরকারি বরাদ্ধ পায়নি

চান মিয়া, বিশেষ সংবাদদাতা (সুনামগঞ্জ): ছাতকে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ভিজিএফ ও ভিজিডিসহ অন্যান্য সরকারি ত্রাণ সামগ্রি না পেয়ে একটি ইউনিয়নের হতদরিদ্র লোকজনের ঈদের আনন্দ নিরানন্দে পরিণত হয়েছে। এদের মধ্যে ঈদের দিনেও চুলোয় হাড়ি বসেনি সহ¯্রাধিক গরিব পরিবারের। সরকার নগদ টাকা দেয়ার পরও হাতে ছিলনা তাদের সওদা ক্রয়ের টাকা। এভাবে সরকার একের পর এক বরাদ্ধ দিয়ে ফসলহারা দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ালেও এবারের ঈদে গোটা ইউনিয়নে রহস্যজনক কারণে গরিবদের বরাদ্ধ হাতে পৌঁছায়নি। জানা গেছে, উপজেলার দূর্গম এলাকা খ্যাত ভাতগাঁও ইউপির দরিদ্রদের মধ্যে ঈদের আগেই বিতরণের জন্যে ৩০ কেজি চাল ও নগদ ৫শ’ টাকা করে ৮শ’ ২০টি ভিজিএফ কার্ড বরাদ্ধ দেয়া হয়। কিন্তু এগুলো এখনো বিতরণ না করায় হতদরিদ্র পরিবারে ঈদের আনন্দ যেন নিরানন্দে পরিণত হয়। তবে ইউনিয়নে জনপ্রতি ১০ কেজি করে ভিজিডির আড়াই হাজার কার্ডের মধ্যে ৪নং ওয়ার্ডের হায়দরপুর গ্রামের সিংহভাগ দরিদ্র পায়নি। ফলে বৃহস্পতিবার বিকেলে হাজি মরম আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ত্রাণ বঞ্চিত মানুষের প্রতিবাদ সভায় এসব অভিযোগ করা হয়। ৪ গোষ্ঠির সমন্বয়ে গঠিত হায়দরপুর গ্রামের ৩ গোষ্ঠির লোকজন আয়োজিত সভায় বক্তব্য রাখেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান গিয়াস মিয়া, সাবেক সদস্য চন্দন মিয়া, আবদুল কুদ্দুছ, মধু মিয়া, মতিউর রহমান, জিতু মিয়া, আবুল খয়ের, হুশিয়ার উদ্দিন, খালিক উদ্দিন, সুনা মিয়া, আবুল কালাম, হাজি আব্দুর রজাক, সিজিল মিয়া, আবদুল করিম, প্রবসী সিরিল আহমদ, নূর উদ্দিন, জনি মিয়া, সাবু মিয়া, আনা মিয়া, হাফিজুল হক, আবদুল হক, হাজি আবদুল আহাদ প্রমূখ। বক্তারা ইউপি সদস্য মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে গ্রামের ৩ গোষ্ঠির গরিবদের সমুদয় মালামাল আত্মসাতের অভিযোগ এনে বলেন, দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে সরকারি সব ত্রাণ সহায়তা গ্রামবাসির মধ্যে বিতরণ না করে নিজেই আত্মসাত করেন। এ সময় সড়কের ১শতটি গাছ কেটে বিক্রির করে তিনি টাকা আত্মসাত করেছেন বলেও অভিযোগ করা হয়। এতে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হওয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়। সভায় মাছ ও ধানে ভরপুর ফাটার হাওর হায়দরপুর গ্রামের কৃষকদের আশা-আকাংখার প্রতিক উল্লেখ করে বলেন, বৃহৎ জনস্বার্থ উপেক্ষা করে গ্রামের জনৈক মানিক মিয়া নামের একজন পেশাদার দূর্নীতিবাজ কৌশলগতভাবে গ্রামবাসির নিয়ন্ত্রণ থেকে হাওরটি অবৈধভাবে লিজ নেয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এদের অপতৎপরতা রুখতে কঠোর কর্মসূচি গ্রহণেরও হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন বক্তারা। এ ব্যাপারে ৩ গোষ্ঠির লোকজন আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি সদস্য মনিরুল ইসলাম বলেন, গোপালপুর, শ্রীপতিপুর ও হায়দরপুর নিয়ে গঠিত ওয়ার্ডে জনপ্রতি ১০ কেজির ২শ’ ৭৫টি কার্ড বিতরণ করা হয়েছে। তবে গ্রামে ৪ গোষ্ঠির মধ্যে ৩ গোষ্ঠির লোকজনকে মালামাল থেকে বঞ্চিত করার প্রশ্নই আসেনা। যারা নিয়েছেন প্রত্যেকে ট্যাগ অফিসারের সামনেই টিপসহি দিয়ে মালামাল গ্রহণ করেছেন। এছাড়া সড়কের গাছ কাটার ৩০ হাজার টাকা তিনি এখনো জমা দেননি বলেও জানান। ইউপি চেয়ারম্যান আওলাদ হোসেন বলেন, ইউপি কমপ্লেক্সে মালামাল নেয়ার ব্যবস্থা না থাকায় অনেক পূর্বের ন্যায় জাউয়াবাজার থেকে মালামাল বিতরণ করা হচ্ছে। এবারেও এলাকাবাসির বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ঈদের আগে নগদ টাকা ও ৩০ কেজি করে চাল বিতরণ নিজ ইউনিয়ন ছাড়া অন্যত্র বিতরণে নিষেধ করায় তা স্থগিত রাখা হয়। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ নাসিরুল্লাহ খান বলেন, নোটিশের মাধ্যমে উপজেলার ১৩ ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা কর্তৃপক্ষকে ঈদের আগেই মালামাল বিতরণের তাগিদ করা হয়েছে। বিতরণ না করলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে জানান তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com