বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৪১ অপরাহ্ন
সিরাজী এম আর মোস্তাক: ২৭ নভেম্বর, ২০১৭ তারিখে উচ্চ আদালতে বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় মামলা পিলখানা হত্যাযজ্ঞের রায় হয়েছে। এতে ১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড, ১৮৫ জনের যাবজ্জীবন ও ২০০ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড হয়েছে। তবে আদালতের মনে হয়েছে, ঘটনার আগেই গোয়েন্দা সংস্থা কেন প্রয়োজনীয় তথ্য তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছে, তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন ও প্রকাশ করা উচিত। (দৈনিক প্রথম আলো-২৮ নভেম্বর, ২০১৭)। এ রায় হুবহু আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ের ন্যায়।
বাংলাদেশে অবস্থিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ১৯৭১ সালে সংঘটিত নারকীয় হত্যাযজ্ঞের বিচার চলছে। তাতে অপরাধী সংখ্যা অসংখ্য। প্রায় অর্ধশত অপরাধীর রায় হয়েছে। আরো বহু অপরাধীর বিচার চলছে। এ সকল অপরাধী সবাই বাঙ্গালি। এদের মধ্যে পাকিস্তানি অপরাধী একজনও নেই। ট্রাইব্যুনালটি আন্তর্জাতিক নামফলক সর্বস্ব হলেও তাতে পাকিস্তানি অপরাধীদের বিচার হয়নি। তাতে একতরফা শুধু বাঙ্গালিরা অভিযুক্ত হয়েছে। এতে বিশ্বজুড়ে সমাদৃত হয়েছে যে, ১৯৭১ সালে সংঘটিত সকল হত্যাকান্ড, ধর্ষণ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বাঙ্গালিরাই করেছে; পাকিস্তানিরা করেনি। বাঙ্গালীরাই ঘাতক, যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী। বাঙ্গালিরাই কথিত ৩০ লাখ শহীদের ঘাতক ও ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জত লুণ্ঠনকারী। এটি সুস্পষ্ট সাক্ষী-প্রমাণের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বাঙ্গালি বিচারপতিরাই এ রায় দিয়েছে। এতে বিন্দুমাত্র সন্দেহ বা সংশয়ের অবকাশ নেই। এটি সুস্পষ্ট ও বিধিবদ্ধ।
বিডিআর হত্যাকাণ্ডের রায়ও একইভাবে সম্পন্ন হয়েছে। ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে হত্যার রায় কোনো রকম তদন্ত ছাড়াই দেয়া হয়েছে। কারা দেশকে অস্থিতিশীল করতে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিল, তা তদন্ত হয়নি। সুদক্ষ গোয়েন্দা সংস্থা এতো বড় হত্যাকাণ্ডের তথ্য কেন গোপন করেছে, তা বিশ্লেষণ হয়নি। এছাড়া বড় বড় সেনা কর্মকর্তাদের হত্যার পিছনে কী স্বার্থ ছিল, তা খতিয়ে দেখা হয়নি। মৌলিক মানবাধিকার লঙ্ঘন করে অন্যায়ভাবে নিরীহ জোয়ানদেরকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। অর্থাৎ এ বিচার সম্পুর্ণ একতরফা হয়েছে।
শিক্ষানবিস আইনজীবি, ঢাকা।