সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৩:১৭ পূর্বাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম:
ধীরে ধীরে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’। এর গতিবেগ এখন ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১২০ কিলোমিটার। ফুঁলে-ফুঁসে গর্জে উঠেছে বঙ্গোপসাগর। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে ৪ নম্বর হুঁশিয়ারি সঙ্কেত দেখানো হচ্ছে। ‘বুলবুল’ আগামী ১০ নভেম্বর রোববার সুন্দরবনের ওপর দিয়ে দক্ষিণাঞ্চলে আঘাতের পূর্বাভাস দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞগণ। তবে ‘সিডর’র সমান বড় আঘাত নাও হতে পারে ‘বুলবুল’-এর। বর্তমানে ‘বুলবুল’ বাংলাদেশের উপকূল থেকে প্রায় সাড়ে ৫শ’ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে পূর্বে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন দ্বীপ থেকে পশ্চিমে সাতক্ষীরা-রায়মঙ্গল-সুন্দরবন পর্যন্ত ৭১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ তটরেখা বরাবর বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ২১টি জেলায় সমুদ্র উপকূলভাগে আজ শুক্রবার সকাল থেকে বিরাজ করছে গুমোট আবহাওয়া। আকাশ মেঘলা থেকে মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে। দুপুর থেকে চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে হালকা ও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। মাঝেমধ্যে বইছে দমকা হাওয়া। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে জারি করা হয়েছে ‘অরেঞ্জ অ্যালার্ট’।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ-ওডিশা এবং মিয়ানমার উপকূলেও আবহাওয়ার স্বাভাবিক অবস্থা আজ থেকে পাল্টে যেতে শুরু করেছে। সমুদ্র উত্তাল। সৈকতে আছড়ে পড়ছে সগর্জে ঢেউ। সামুদ্রিক মাছ শিকার প্রায় বন্ধ। পোতাশ্রয়ে ভিড়েছে হাজার হাজার মাছশিকারি ট্রলার নৌযান।
তাছাড়া বঙ্গোপসাগর-ভারত মহাসাগরে গত এক সপ্তাহ যাবৎ আমদানি-রফতানি পণ্যবোঝাই মার্চেন্ট জাহাজসমূহ চলাচল করছে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে। কেননা বুধবার মাঝরাতের পর ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ সৃষ্টি হওয়ার আগেই ভারত মহাসাগর-আরব সাগর এলাকায় অপর দুই ঘূর্ণিঝড় ‘কীয়ার’ এবং ‘মাহা’র প্রভাবে হঠাৎ করে সমুদ্র বিক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠে।
তিন ঘূর্ণিঝড়ের চোখ রাঙানিতে তটস্থ হয়ে পড়ে ভারত, ওমান, বাংলাদেশ, মিয়ানমারের কোটি কোটি উপকূলবাসী। শক্তিাশালী ঘূর্ণিঝড় ‘মাহা’ ভারতের গুজরাটে দুর্বল হয়ে পড়তে না পড়তেই বঙ্গোপসাগরে ‘বুলবুল’ বৃহস্পতিবার গভীর রাতে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়।
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞগণ জানান, সর্বশেষ গতি-প্রকৃতি অনুযায়ী ‘বুলবুল’ আগামী ১০ নভেম্বর রোববার বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এবং এর সংলগ্ন বাংলাদেশ ও ভারতের সুন্দরবন ও পশ্চিমবঙ্গ উপকূল অতিক্রম করতে পারে। ভারতের আবহাওয়া বিভাগ আভাস দিচ্ছে, ঘূর্ণিঝড়টির গতিবেগ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৩৫ কিলোমিটারে উঠতে পারে।
তবে বুলবুল উপকূলে আছড়ে পড়তে যদি বিলম্ব হয় অথবা প্রবল বৃষ্টিপাত হয় তাহলে শক্তি কমে যাবে। তখন বাংলাদেশ এবং সংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গ-ওডিশা উপকূলজুড়ে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এর প্রভাবে চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল ও ঢাকা বিভাগে মাঝারি থেকে ভারী ও অতি ভারী বর্ষণ, বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের মতিগতি ও দিক বদল হতে পারে যে কোনো সময়েই। বর্তমানে ‘বুলবুল’ বাংলাদেশের উপকূল থেকে প্রায় সাড়ে ৫শ’ থেকে সর্বোচ্চ ৭শ’ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে।