বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:০৩ পূর্বাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম : ভিসা বাতিল করার কারণে ভারতীয় হাই কমিশনের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জনপ্রিয় গায়ক আসিফ আকবর। ভারতীয় হাইকমিশনের প্রতি তীব্র ঘৃণা প্রকাশ করে তিনি তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, পৃথিবীর অন্তত আটত্রিশটি দেশ ভ্রমণের পর দেড় ভরি ভারতীয় হাই কমিশনের এই অপমান আমার নয়, রাষ্ট্রের দেয়া সম্মাননার। রাষ্ট্রের অপমানের ভার বয়ে যাওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই আগামী সপ্তাহে সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে জাতীয় পুরস্কার রাষ্ট্রের কাছেই ফেরত দিয়ে দেবো। ভারতীয় হাইকমিশনের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে জনপ্রিয় এই কণ্ঠ শিল্পী তার ফেসবুকে দুই দিনে দুইটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। আসিফ আকবর তার প্রথম স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ২০০৪ সালে ভারতীয় হাই কমিশন আমার পাসপোর্ট আটদিন আটকে রেখে ভিসা দেয়নি। গত এগারো বছর ভিসা চাইনি, প্রয়োজন বোধ করিনি কখনোই। এবার ভারত থেকে সম্মানজনক দাওয়াতপত্র পেয়ে হাইকমিশনে গিয়েছিলাম ভিসার জন্য। পাঁচটি পাসপোর্টসহ যাবতীয় কাগজপত্র জমা দিয়েছি। এবারই প্রথম কাবিন নামা দিলাম, বলেছি প্রয়োজনে ডেথ সার্টিফিকেট দেয়া হবে। এগারো বছর পর দীর্ঘ ১৩ দিন পাসপোর্ট রেখে দিয়ে ১৪ দিনের মাথায় প্রদর্শিত হল ভারতীয় হাই কমিশনের ব্লক বাষ্টার সিনেমা-‘এখানে প্রশ্রাব করা নিষেধ’। এখানে নায়ক ভিলেন দুটোই আমি, ওরা টিকেটের কালোবাজারি মাত্র। দাওয়াতের মর্যাদা ভারতীয় হাইকমিশন বুঝবে না, এটা একটা স্রেফ ব্যবসা কেন্দ্র। এবারো ভিসা না দেয়ার কারণ ব্যাখ্যা করা হয়নি,তবে আদায় করা হবে। গত কয়েকদিন শরীরটা মোটেও ভাল যাচ্ছে না, এবার মেজাজটাও খিচড়ে গেলো। আমি অপমানিত, ক্রোধান্বিত,বিরক্ত। ভারতীয় হাইকমিশনের প্রতি তীব্র ঘৃণা প্রকাশ করছি। পরের বার ভিসা বাড়ী এসে দিয়ে যেতে হবে। ভারতীয় বন্ধুরা-যারা ভালোবেসে দাওয়াত দিয়েছেন আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। এবার শুরু হবে আসল লড়াই। আসিফ আকবর তার দ্বিতীয় স্ট্যাটাসে লিখেছেন, সতেরো বছরের সঙ্গীত ক্যারিয়ারের পুরোটা সময় ইন্ডাস্ট্রির মানুষের সুখে দুঃখে পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। নিজের স্বার্থে যুদ্ধ কখনোই করিনি, করবও না। ভারতীয় কোনো শিল্পীর সাথে বাংলাদেশ হাই কমিশন এ ধরনের আচরণ করলে ফুঁসে উঠতো পুরো ভারত। তারা তাদের সন্তানদের দেশে খাওয়াতে পারুক বা না পারুক , অন্তত এভাবে নিজ ভূখণ্ডে অপমানিত হতে দিত না। বাংলাদেশে এটা হবে না, আমি পথচলা শুরু করেছি এই ইন্ডাস্ট্রির ওপর ভরসা না করেই। সঙ্গীতের নানা পদের সংগঠন, তথাকথিত এজেন্ডাধারী বুদ্ধিজীবী, নাগরিক সমাজ কিংবা রাষ্ট্র কখনোই আমার পাশে দাঁড়াবে না জেনেই আমি আমার পথচলা অব্যাহত রেখেছি। রাষ্ট্রে অবরুদ্ধ আছি নয় বছর, তাতেও কোনো অসুবিধা নেই, দেশে তো থাকতে পারছি অন্তত …!!!
সর্বোচ্চ সম্মাননা জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছি দেশে যখন জরুরি অবস্থা চলছিল। এর সম্পূর্ণ কৃতিত্ব ‘রানী কুটির বাকী ইতিহাস’ ফিল্ম টিমের। কোনো দলবাজির মাধ্যমে এ সম্মাননা পাইনি। পৃথিবীর অন্তত আটত্রিশটি দেশ ভ্রমণের পর দেড় ভরি ভারতীয় হাই কমিশনের এই অপমান আমার নয়, রাষ্ট্রের দেয়া সম্মাননার। রাষ্ট্রের অপমানের ভার বয়ে যাওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই আগামী সপ্তাহে সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে জাতীয় পুরস্কার রাষ্ট্রের কাছেই ফেরত দিয়ে দেবো। ভারতীয় হাই কমিশনের গৃহপালিত শিল্পাঙ্গনের সমস্ত শিল্পীদের বলতে চাই, আমি এবং আমার পরিবার নানা ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি, হয়তো আরো হবো, কিন্তু আপনারাও জয়ী হননি। শুভাকাক্সক্ষীদের সবাই থামাতে চায় আমাকে, বুদ্ধি দেয়-মানিয়ে চলো। আমার উত্তর স্পষ্ট- যাই ঘটুক আমার জীবনে -আমি নতুন এবং তরুন প্রজন্মের সামনে বিশাল হয়ে থাকতে চাই-জীবিত কিংবা মৃত।