শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩১ অপরাহ্ন
মুহাম্মদ আব্দুল বাছির সরদার:
এক সময়ের গ্রাম-গঞ্জের ঐতিহ্য পলো বাইছ হারাচ্ছে তার সুনাম। এখন আর আগের মতো বিলে মাছ পাওয়া যায় না। মৎস্য ইজারাদাররা সরকার নিষিদ্ধ কুনো জাল দিয়ে মাছ মারার কারণে যেমনীভাবে মাছের সংখ্যা কমছে, তেমনীভাবে নষ্ট হচ্ছে মাছের বংশ বিস্তারও। সরকারের কাছ থেকে লিজ নিয়ে অধিক মুনাফার স্বার্থে তারা এ কাজটি করে যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, এক ধরণের বিষ প্রয়োগ করেও মাছ মারার অভিযোগ আছে তাদের বিরুদ্ধে।
প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার করিমপুর ইউনিয়নের সাকিতপুর মাদরাসার বার্ষিকসভার দিনে গতকাল বুধবার পলো বাইছ দিয়ে মাছ মারার এ উৎসব পালিত হয়। এটি প্রায় অর্ধশত বছর ধরে চলে আসছে। এ দিন মাছ ধরার জন্য এক সময় দিরাই উপজেলার পার্শ্ববর্তী জগন্নাথপুর, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ ও জামালগঞ্জ থেকে সৌখিন মাছ শিকারীরা মাছ ধরতে আসতেন। কালের পরিবর্তনে এখন আর আগের মতো মাছ পাওয়া যায় না বলে লোক সমাগম কম হয়। তারপরও দিরাই উপজেলাসহ পার্শ্ববর্তী কয়েক উপজেলার প্রায় সহস্রাধিক লোক মাছ ধরতে উপস্থিত হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সাকিতপুর গ্রামের হাওরে ৪টি সরকারি বিল রয়েছে। প্রতি তিন বছর মেয়াদি লিজ দেয়া হয় এ বিলগুলো। লিজ গ্রহীতারা তাদের টার্গেট মুতাবেক মৎস্য আহরণের পর সাকিতপুর মাদরাসার সভার দিনের জন্য একটি বিলকে সর্বসাধারণের মৎস্য আহরণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়। কোন ধরণের প্রচারণা ছাড়াই এ দিনের জন্য আশপাশের উপজেলার লোকজন অপেক্ষায় থাকে মাছ শিকার করতে। এক সময় এ বিলগুলোতে বড় বড় বোয়াল, সউল, রুই, গৎারসহ ছোট বড় অনেক মাছ পাওয়া যেত। তবে আগের সেই মাছ এখন খুব বেশি দেখা যায় না।
সাকিতপুর মাদরাসার সাবেক কৃতি ছাত্র, দিরাই দাখিল মাদরাসার সিনিয়র শিক্ষক ও উত্তর চান্দপুর নিবাসি ডা. মাওলানা মোঃ আব্দুল মুক্তাদির সরদার জানান, সাকিতপুর মাদরাসা প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রায় ৪৫ বছর ধরে এ গ্রামের বিলগুলোতে বার্ষিকসভার দিনে পরেঅ বাইছের উৎসব হয়। তবে আগের মতো এখন আর মাছ পাওয়া যায় না। মৎস্য চাষের আওতায় সরকার বিলগুলোকে সার্বিক পর্যবেক্ষণে রেখে মৎস্য আগরণ করতে মাছ চাষে রিজ গ্রহীতারা যেভাবে উপকৃত হতো, পাশাপাশি দেশীয় মাছের বংশবৃদ্ধিও হতো আশাতীত বলেও তিনি জানান। এ ব্যাপারে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সুদৃষ্টিও কামনা করেছেন তিনি।