রবিবার, ০৬ Jul ২০২৫, ০২:২৪ পূর্বাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক: অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৭৯৮-৬৭৬৩০১
সংবাদ শিরোনাম :
আবনায়ে ক্বাদিম সাকিতপুর মাদরাসার কমিটি গঠন জুলাই গণঅভ্যুত্থান ছিল নব্য ফেরাউনের বিরুদ্ধে গণবিস্ফোরণ: ইউকে জমিয়ত সমাজ ও রাষ্ট্রের দুষ্টচক্রকে নির্মূল করে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে: বিভাগীয় কমিশনার খান মোঃ রেজা-উন-নবী সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা জমিয়তের প্রার্থী বাছাই সম্পন্ন সুনামগঞ্জ-৩ আসনে জমিয়তের হেভিওয়েট প্রার্থী হাফিজ মাওলানা সৈয়দ তামীম আহমদ দিরাই পৌরসভার বাজেট পেশ সুনামগঞ্জ সীমান্তে ভারতীয় মাদকের চালান আটক দিরাইয়ের সেনা বাহিনীর অভিযানে গ্রেফতার ৪, গুলিতে নিহত নিরীহ আবু সাইদ হেফাজতে ইসলাম মিডল‍্যান্ডস শাখা গঠন: সভাপতি মাওলানা এখলাছুর রহমান, সেক্রেটারী মাওলানা এনামুল হাসান সাবীর লন্ডন মহানগর জমিয়তের ঈদ পুনর্মিলনী ও কার্যনির্বাহি কমিটির সভা অনুষ্ঠিত
যে রোগে মানুষ নিজেকে মৃত ভাবে

যে রোগে মানুষ নিজেকে মৃত ভাবে

we158-300x188আমার সুরমা ডটকম : আমাদের দেশের প্রয়াত লেখক হুমায়ুন আহমেদের অনেক গল্প বা উপন্যাসে এ জাতীয় চরিত্রের দেখা মেলে। একজন মানুষ দিব্যি কথা বলছে, হাঁটছে, কিন্তু তিনি নিজেকে মৃৃত দাবি করছেন। তার আশপাশের মানুষও এসব বিশ্বাস করে থাকেন। এবার সত্যিই এমন মানুষের সন্ধান পাওয়া গেছে, যারা নিজেদের মৃত বলে মনে করেন। তবে মনস্তত্ত্ববিদরা একে মানসিক রোগ বলেই আখ্যায়িত করেছেন। তাদের মতে এটি একটি দুর্লভ মানসিক রোগ। রোগী বিশ্বাস করে সে মৃত এবং তার কোনো অস্তিত্ব নেই। ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে মেরি কিম জানিয়েছেন, মানসিক এই রোগকে বলা হয় ‘কোটার্ডস সিন্ড্রম’। কখনো কখনো একে ‘ওয়াকিং করপস্ সিন্ড্রম’ বা চলন্ত লাশ প্রবণতাও বলা হয়। এই রোগে আক্রান্তরা বিশ্বাস করেন, তারা মারা গেছেন। তাদের শরীরের প্রত্যেকটা অঙ্গই মৃত। তাদের কোনো অস্তিত্ব নেই। মানসিক এই রোগকে স্ট্যাটিস্টিকাল ম্যানুয়াল অব মেন্টাল ডিসঅর্ডার (ডিএসএম-৫) এর অন্তর্ভুক্ত কোনো শ্রেণিতে ফেলা যাচ্ছে না। কিন্তু রোগ শ্রেণিবিন্যাস অনুযায়ী তা প্রমাণ করে যে, এটি একটি মানসিক রোগ। মাইন্ড ম্যাগাজিনের মত অনুযায়ী, এর সঙ্গে সাইকোসিস, ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেশন ও সিজোফ্রেনিয়ার সম্পর্ক রয়েছে। মাইন্ডের মুখপাত্র ইন্ডিপেন্ডেন্ট পত্রিকাকে বলেছেন, ‘রোগের এ লক্ষণ নিশ্চিতভাবেই খুবই দুর্লভ। কোটার্ডস সিন্ড্রম এক ধরনের বিভ্রম। এর ফলেই তারা নিজেদের অস্তিত্বকে অস্বীকার করতে শুরু করে। ফরাসি নিওরোলজিস্ট জুলেস ১৮০০ সালে প্রথম কোটার্ডস রোগের সন্ধান পান। এক নারীর মধ্যে তিনি প্রথম এ প্রবণতা দেখেন। ওই নারী মনে করতেন তার কোনো মস্তিষ্ক নেই, স্নায়ু নেই, বুক, পাকস্থলি ও কোনো নাড়িভুড়ি নেই। হাড্ডি ও চামড়া ছাড়া তার ভেতরের সব কিছুই পচে গেছে। এজমি ওয়েইজুন ওয়াং নামে এক নারী তার এই রোগের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানান। দুই মাস ধরে তিনি এই রোগে ভুগছেন। একদিন ঘুম থেকে জেগে তার স্বামীকে বলেন, আসলে এক মাস আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। ওই সময় তিনি বিমানে অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলেন। এজমি বলেন, ‘আমি আমার স্বামীকে বোঝাতে চেষ্টা করেছি, ওই বিমানেই আমার মৃত্যু হয়েছে। তখন আমি ছিলাম মৃত্যুপরবর্তী জীবনে। এর পর থেকে আমি আর কিছুই অনুভব করতে পারিনি।’ পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর দেখা গেছে, মিজ ওয়াং বায়োপোলার টাইপ সিজোফ্রেনিকে আক্রান্ত। পরে তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন। এখন আর তিনি নিজেকে একজন মৃত মানুষ হিসেবে দেখেন না। মাইন্ডের ওই মুখপাত্র বলেন, এ রোগ নিয়ে খুবই সামান্য গবেষণা হয়েছে। ফলে এ রোগে আক্রান্তের হার সম্পর্কে খুবই কম জানা গেছে। এখন পর্যন্ত কতজন মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে তার হিসাব বের করা খুবই কঠিন কাজ। ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, কোটার্ডস সিন্ড্রমের কারণ হিসেবে নানা বিতর্ক রয়েছে। তবে সম্ভাব্য কারণ হিসেবে মস্তিষ্কের নানা ত্রুটিকেই এ জন্য দায়ী করা হয়। ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট প্রফেসর পিটার কিন্ডারম্যান বলেছেন, রোগের এ লক্ষণ খুবই দুর্লভ। সুতরাং এ বিষয়ে খুব বেশি কিছু জানার সুযোগ নেই। অনেক বছর ধরে আলাদাভাবে এ রোগ নিয়ে কিছু কাজ হয়েছে, তবে তা পর্যাপ্ত নয়। তিনি বলেন, কারো কারো মনে নানা বিভ্রান্তি বা দিশেহারা ভাব থাকতে পারে; ভুগতে পারে মানসিক পীড়নে। রোগের এ তত্ত্ব কিছুটা গ্রহণযোগ্যতা পেতে পারে। ২০১৩ সালে গ্রাহাম নামে এক ব্রিটিশ নাগরিক নিউ সায়েন্টিস্ট নামে এক সাময়িকীতে সাক্ষাৎকারে জানান, তিনি বিশ্বাস করেন তার মস্তিষ্ক মৃত। আত্মহত্যার চেষ্টার পর থেকেই তার এমন অবস্থা। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ওই সময় তিনি কবরস্থানেও ঘুরে এসেছেন। তিনি বলেন, আমার কোনো খাবরের প্রয়োজন নেই। কথা বলা বা অন্য কিছুরই দরকার হয় না। চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলে দীর্ঘ চিকিৎসা ও সাইকোথেরাপি নিলে গ্রাহামের অবস্থা ধীরে ধীরে উন্নতি হয়। তথ্যসূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইন।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com