সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:১৮ অপরাহ্ন
মুহাম্মদ আব্দুল বাছির সরদার:
খোলা জায়গাকে ডাস্টবিন বানিয়ে যত্রতত্র আবর্জনা ফেলে পরিবেশ দূষিত করার পাশাপাশি সেখান থেকে ছড়াচ্ছে রোগ-ব্যাধি। বাজারের রাস্তাসহ পাড়া-মহল্লার রাস্তায়ও একই সমস্যা বিরাজ করছে বলে জানা গেছে।
সরেজমিন সুনামগঞ্জের দিরাই পৌরসভার বিভিন্ন সড়ক ও গলিতে গিয়ে দেখা যায়, মাছ ব্যবসায়িদের মাছের পানি, সবজির পতিত আবর্জনা, ফলমুলের খোসা ও অন্যান্য আবর্জনাসহ বিভিন্ন দোকানের অব্যবহৃত মালামাল রাস্তায় ফেলে দিচ্ছে। রাস্তার পাশে পৌরসভার দেয়া ডাস্টবিন থাকলেও তা সবাই ব্যবহার করছেন। তাছাড়া পৌরসভার পরিচ্ছন্নকর্মী থাকার পরও নিয়মিত তা পরিষ্কার করা হচ্ছে না বলে ব্যবসায়িদের অভিযোগ। বিশেষ করে ৩নং ওয়ার্ডের কালনী অটো রাইস মিলের দক্ষিণের রাস্তার খোলা জায়গায় বাসা-বাড়ির আবর্জনা ফেলে রাখা হয়েছে। এসব আবর্জনা থেকে রোগব্যাধি ও দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। আশপাশের মানুষের অসচেতনতার ফলে সাধারণ মানুনের চলাফেরায় কষ্ট হচ্ছে। এ রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন সাধারণ মানুষের পাশাপাশি একটি একাডেমির শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করে থাকে। খোলা জায়গার এ আবর্জনার স্তুপ থেকে ছড়িয়ে পড়া দুর্গন্ধে তারা নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এছাড়া পৌর শহরের প্রতিটি রাস্তায়ই বিভিন্ন ধরণের আবর্ঝনার স্তুপ পরিলক্ষিত হয়।
এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা, অভিভাবক ও পথচারীদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, এই রাস্তা ধরে প্রতিদিন বাসা-বাড়ি থেকে বাজারে আসা-যাওয়া করেত হয়। এই রাস্তার প্রায় ৫০ গজ দূরে একটি কিন্ডার গার্ডেন বিদ্যালয় অবস্থিত। অথচ বাসা-বাড়ির লোকজনের অবহেলা ও অসচেতনতা কারণে এ রাস্তায় চলাচলকারী সবাই দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
জানা যায়, এ আবর্জনার কাছে এসে নাক-মুখ বন্ধ করে দ্রুত রাস্তা পার হতে হয়। এই দুষিত ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে প্রায় সময় ছাত্র-ছাত্রী ও পথচারীরা অসুস্থ হয়ে পড়েন। এলাকার কয়েকজন স্থায়ী বাসিন্দা রাধিকা রঞ্জন রায় (৭৫) ও বীরেন্দ্র (৪০) অভিযোগ করেন, রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে গেলে আমাদের দম বন্ধ হয়ে পড়ে এবং আমাদেরকে এই এলাকা অতি দ্রুত পাড়ি দিতে হয়। অনেক প্রতিবাদ ও অভিযোগ করেছি, কিন্তু কোন কাজ হয়নি।
এলাকার রাজেন্দ্র লাল রায়ের পুত্র রাধিকা রঞ্জন রায় (৭৫) বলেন, আবর্জনা ফেলার নির্দিষ্ট কোন জায়গা না থাকায় প্রতিনিয়ত এখানে বিভিন্ন ধরণের আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। কোনদিন দেখিনি কোন সংস্থা বা পৌর কর্তৃপক্ষ এ আবর্জনা পরিষ্কার করতে। আমরা মানুষ হয়েও অমানুষ হয়ে গেছি, আমরা অন্ধ হয়ে গেছি। সমাজের সচেতন মহলও এ ব্যাপারে উদাসীন। অনেক অভিভাবকের মন্তব্য, দিরাই পৌরসভার মতো এমন অব্যস্থাপনা আমরা কোথাও দেখিনি।
জানতে চাইলে পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোঃ রেজাউল করিম বলেন, জানতে পেরেছি এখানে ময়লা-আবর্জনা পড়ে আছে। সময় পেলে পরিস্কারের ব্যবস্থা করবো।
জানতে চাইলে দিরাই পৌরসভার মেয়র বিশ্বজিৎ রায় বলেন, অনেক সময় ব্যস্ত থাকি, সব দিকে খেয়াল রাখতে পারিনি। পরিচ্ছন্নকর্মীদেরকে বলা আছে, তারা যত দ্রুত পৌরশহরের ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করতে। তাছাড়া আমাদের চেষ্টার কমতি নেই, আমরা দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিব।