রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৩৯ পূর্বাহ্ন
মুহাম্মদ আব্দুল বাছির সরদার : দিরাইয়ের একমাত্র ইনডোর মার্কেট হিসেবে পরিচিত সেন মার্কেটে একের পর এক চুরির ঘটনা ঘটলেও কোন ঘটনারই রহস্যের কুল-কিনারা না হওয়াতে আবারো বড় ধরণের চুরির ঘটনা ঘটেছে। মার্কেটের ৭টি দোকানে চুরির এ ঘটনায় প্রায় ১৫ লাখ টাকার মালামাল চুরি হয়। এ ঘটনায় মার্কেটের ব্যবসায়িদের মধ্যে এক ধরণের আতংক বিরাজ করছে। মার্কেট ও থানা সূত্র জানায়, সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার পৌরশহরের থানাপয়েন্টে অবস্থিত দিরাইয়ের একমাত্র ইনডোর ‘সেন মার্কেট’-এ শনিবার ভোররাতে পশ্চিমের গেইটের তালা ভেঙে ৭/৮ জনের চুরের দল প্রবেশ করে প্রথমেই মার্কেটের পাহারাদারদেরকে হাত ও পা বেঁধে ফেলে এবং ২ জন করে চুর তাদেরকে পাহারায় থাকে। মার্কেটের দায়িত্বরত পাহারাদার আফতাব উল্লা জানায়, রাত সাড়ে ৩টার দিকে মার্কেটের ৪র্থ তলায় অবস্থিত ডিস সেন্টার ‘দিরাই স্যাটেলাইট নেটওয়ার্ক’-এর ৪ জন প্রতিদিনের ন্যায় সেহরি খেয়ে ভেতরে প্রবেশ করার পর আমি গেইটে তালা দিয়ে যাই। এরপরই পশ্চিমের গেইটের তালা ভেঙে ৭/৮ জনের চুরের একটি দল ঢুকে প্রথমে তাকে সুতলি দিয়ে হাত বেঁধে দেয়। এরপর অপর পাহারাদার সরফরাজকে পায়ে সুতলি দিয়ে বেঁধে ২ জন করে আমাদের পাহারায় থাকে। সে আরো জানায়, চুরেরা আধঘন্টার মধ্যে চুরি করে চলে যায়। সকাল ৬টার দিকে তারা মার্কেটের দোকানে চুরি হওয়ার বিষয়টি কয়েকজন মালিককে ফোনে জানায়। সূত্র মতে, সেন মার্কেটের সাথী ফ্যাশন থেকে ক্যাশ ভেঙে নগদ ৪৫ হাজার টাকা, মা এন্টারপ্রাইজ থেকে স্যামস্যাং, সেম্পোনি ও ওয়ালটনের ১১০টি মোবাইল সেট; যার বাজার মূল্য ১১ লাখ টাকা ও নগদ ৩ লাখ ১৪ হাজার টাকা, স্টার স্পোর্টস থেকে ১ লাখ ৩২ হাজার টাকা, জেএফ সুজ থেকে নগদ ৩/৪ হাজার টাকা, জেন্টস কালেকশন থেকে ৩/৪ হাজার টাকা, স্পোর্টস কালেকশন থেকে ৬ হাজার টাকা ও এপেক্স সুজ থেকে ৩/৪ শত টাকা চুরেরা চুরি করে নিয়ে যায়। এ আগে ২০১৪ সালের ১০ অক্টোবর একই মার্কেটের স্যামস্যাং শো-রুম নাজাফ টেলিকমে বড় ধরণের চুরির ঘটনা ঘটে। এ সময় মোবাইল ফোন ও নগদ টাকাসহ প্রায় ৩ লাখ টাকার মালামাল চুরি হয়। গত ১০ জুন একই মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত মাতৃ টেলিকমে চুরির ঘটনা ঘটে। মোবাইল সার্ভিসের এ দোকান থেকে নগদ টাকাসহ প্রায় ৩ লাখ টাকার মালামাল চুরি হয়। এসব ঘটনা পর্যালোচনা করে বর্তমানে সেন মার্কেটের ব্যবসায়িরা আতংকিত হয়ে পড়েছেন। তারা জানান, এসব ঘটনার সাথে মার্কেটের পাহারাদাররা জড়িত থাকতে পারে, তারা একবাক্যে তাদের রিমান্ড চান বলে জানা যায়।
সরেজমিন কথিত চোর ঢোকার রাস্তা মার্কেটের পশ্চিমের গেইটে গিয়ে দেখা যায় সেখানে একটি তালা পড়ে আছে। কোন ধরণের ভাঙা বা বাঁকা হওয়ার আলামতও নেই তাতে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সেন মার্কেট ব্যবসায়ি সমিতির সাধারণ সম্পাদক আখতার হোসেন সরদার এ প্রতিবেদককে জানান, থানার সামনে এ মার্কেটে ডাকাতিতে জড়িত যারা মার্কেটে রাত্রিযাপন করে। তাছাড়া প্রশাসনের দায়িত্ব নিয়েও আমি সন্দিহান। সঠিক তদন্ত হলে প্রকৃত দোষীরা বের হয়ে আসবে।
মার্কেটের পাশের বাসিন্দা আবুল কাসেম চৌধুরী জানান, ভোর সাড়ে ৫টার দিকে মার্কেটে বড় ধরণের আওয়াজ আমি ও আমার স্ত্রী শুনেছি, তবে কিসের আওয়াজ হয়েছে তা বুঝতে পারিনি।
দিরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিসুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, এটি আসলে ডাকাতি নয়, বড় ধরণের চুরি বলা যায়। তবে প্রকৃতপক্ষে কারা এর সাথে জড়িত, সে ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মার্কেটের ২ জন পাহারাদার ও ডিস সেন্টারের ২ জনকে থানায় আনা হয়েছে।