অপহরণপ্রবণ দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষ ১০নম্বরে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক একটি সংগঠনের তালিকায় দেখানোর প্রতিক্রিয়ায় ওই প্রতিবেদনের গ্রহনযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বাংলাদেশ পুলিশ। বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখার পর সোমবার বাংলাদেশ পুলিশ সদর দপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে অপহরণের যতগুলো ঘটনা ঘটে, তার ৮৪শতাংশই প্রেমঘটিত। ফলে অন্য সব দেশের অপহরণের ঘটনার সঙ্গে এর মিল নেই। পুলিশ সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, বিশ্বের নবম জনবহুল বাংলাদেশে প্রেমঘটিত কারণে পালিয়ে গেলেও অপহরণ মামলা হয়। সাধারণত প্রেমিকের বিরুদ্ধে এ ধরনের মামলা তাৎক্ষণিকভাবে হয়ে থাকে। পরে সেগুলো মিটমাটও হয়ে যায়।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘কন্ট্রোল রিস্ক’ তাদের এই প্রতিবেদন তৈরিতে বাংলাদেশ পুলিশের কাছ থেকে কোনো তথ্য নেয়নি। “কাজেই ‘কন্ট্রোল রিস্ক’ কোন ধরনের পরিসংখ্যান নিয়ে তাদের তালিকায় বাংলাদেশকে অপহরণের শীর্ষ ১০ দেশের তালিকায় রেখেছে, সেটা অস্পষ্ট।” নিরাপত্তা, রাজনৈতিক ঝুঁকি বিশ্লেষণ এবং পরামর্শ দিয়ে আসা স্বাধীন সংস্থা ‘কন্ট্রোল রিস্ক’ ২০১৪সালের অপহরণের ঘটনাগুলোর সংখ্যা বিচারে বাংলাদেশকে সপ্তম স্থানে রেখে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সম্প্রতি। এই তালিকায় শীর্ষ স্থানে রয়েছে মেক্সিকো। যুদ্ধপীড়িত ইরাক চতুর্থ এবং লিবিয়া ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে, সুদান রয়ে নবম স্থানে। দক্ষিণ এশিয়ার ভারতকে দ্বিতীয় এবং পাকিস্তানকে তৃতীয় এবং আফগানিস্তানকে অষ্টম স্থানে রেখেছে ‘কন্ট্রোল রিস্ক’।
তাদের ওই প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, বিভিন্ন দেশে অপহরণের ঘটনাগুলোর মধ্যে ৮০শতাংশ ঘটেছে অপরাধীদের দ্বারা এবং এসব অপহরণের মূল কারণ জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায়। আর ২০শতাংশ অপহরণে জড়িত জঙ্গিরা। এই তালিকায় এই প্রথম বাংলাদেশ শীর্ষ ১০-এ এসেছে উল্লেখ করে ‘কন্ট্রোল রিস্ক’ নারায়ণগঞ্জে অপহরণ করে সাতজনকে হত্যার ঘটনাটিও তুলে ধরেছে।
বাংলাদেশ পুলিশের দাবি, ‘কন্ট্রোল রিস্ক’র প্রতিবেদনের সঙ্গে আন্তর্জাতিক অন্য সংস্থাগুলোর পরিসংখ্যানের মিল নেই। লন্ডনভিত্তিক আন্তর্জাতিক সতর্ককারী সংস্থা ‘হেল্প বিল্ড পিস’ এবং ‘রেড টোয়েন্টিফোর’ প্রতিবেদনে অপহরণের অপরাধ সংঘটনে ঝুঁকিপূর্ণ দেশের মধ্যে বাংলাদেশ নেই। গত ৬মার্চ অস্ট্রেলিয়া সরকার প্রণীত ‘কিডন্যাপিং থ্রেট ওয়ার্ল্ডওয়াইড’ শীর্ষক প্রতিবেদনেও বাংলাদেশের নাম নেই। তবে ‘নেশন মাস্টার’ নামে একটি সংস্থার প্রতিবেদনে বাংলাদেশের নাম ৩৩নম্বরে রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। বিজ্ঞপ্তি।