শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:১৫ অপরাহ্ন
কাজী জমিরুল ইসলাম মমতাজ, স্টাফ রিপোর্টার (সুনামগঞ্জ): দক্ষিণ সুনামগঞ্জে ধৃত আসামী বাবুল বিশ্বাস (৩৫) জেলা কারাগারে মারা গেছেন। নিহত ব্যক্তি জয়কলস ইউনিয়নের জয়কলস গ্রামের মৃত আনন্দ বিশ্বাসের ছেলে।
হাসপাতাল ও কারা সূত্রে জানা যায়, বুধবার রাত ৮টার সময় কারাগারে তার মৃত্যু হয়েছে। তবে কিভাবে মৃত্যু হয়েছে তা জানা যায় নি।
এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত সিলেট-সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের দক্ষিণ সুনামগঞ্জের জয়কলস এলাকায় ১ ঘণ্টা রাস্তা অবরোধ করেছে এলাকাবাসী।
পরিবার আত্মীয়-স্বজনের অভিযোগ পুলিশের অমানষিক নির্যাতনে মুত্যু হয়েছে বাবুল বিশ্বাসের।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ২৭ মে রবিবার রাত ৩টার সময় দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানা পুলিশের এসআই জিয়াউর রহমান বাবুল বিশ্বাসকে তার নিজ শয়ন কক্ষে ঘুম থেকে ডেকে তুলে আস্তমা গ্রামে নিয়ে ৪ লিটার মদ সাথে দিয়ে মাদক মামলায় আসামী করে অমানষিক নির্যাতন করে পরদিন সোমবার তাকে আদালতে প্রেরণ করেন। তার স্ত্রী অঞ্জলী বিশ্বাস জানান, আমার স্বামী কোন মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত নয়, ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ঘর থেকে সুস্থ্য সবল লোকটিকে ধরে নিয়ে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি আরও বলেন, আমার স্বামী সামান্য চায়ের দোকান দিয়ে আমরা ৫ সন্তানের পরিবার কোন রকম চালাতেন এখন আমাদের কি উপায় হবে। আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে এই পরিকল্পিত হত্যার বিচার চাই।
এদিকে রাস্তার অবরোধের কথা শুনে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ হারুন রশীদ, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোঃ ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোঃ আতাউর রহমান, উপজেলা পূঁজা উদযাপন কমিটির সভাপতি দিলীপ কুমার তালুকদার, জয়কলস ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ মিয়া, আব্দুল মজিদ কলেজের প্রভাষক নুর হোসেন, ইউপি সদস্য মসকু মিয়া, শিক্ষক মানিক লাল চক্রবর্তী ঘটনাস্থলে গিয়ে দোষী যেই হোক যদি তদন্তে নির্যাতনের মাধ্যমে তার মৃত্যু হয়ে থাকে, তা হলে দোষীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক বিচারের আশ্বাস দিলে তাদের আশ্বাসে অবরোধকারীরা অবরোধ তুলে নেয়।
বৃহস্পতিবার বিকালে ময়না তদন্ত শেষে তার লাশ জয়কলস শ্বশানঘাটে সৎকার করা হয়েছে।
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোঃ ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী জানান, বিগত ২৮ তারিখে আমরা তাকে মাদকের মামলায় চালান দেই কারাগারে, কি কারণে সে মারা গেছে আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে তার তথ্য উৎঘাটন করবে, যদি ময়না তদন্তে পুলিশের কোন নির্যাতনের ঘটনা চলে আসে, তাহলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ছাড় দেবেন না। এক জায়গায় আসামী ধরে অন্য জায়গায় স্পট দেখানো ব্যাপারে তিনি বলেন, ভবিষ্যতে আমি তা খতিয়ে দেখব যদি এ ধরণের হয়ে থাকে তাহলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তার বিচার হবে। নিরপরাধীরা যাতে সমস্যায় না পড়েন সে ব্যাপারে আমার নজর থাকবে।