শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৫৪ পূর্বাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম ডেস্ক:
এশিয়াজুড়ে বেশকিছু প্রতিষ্ঠান এবং সরকার চারদিনের কর্মসপ্তাহ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছে। কারণ দীর্ঘ কর্মঘণ্টা অনেক বেশি প্রভাব ফেলে কর্মীদের ওপর, সেই সঙ্গে কমতে থাকে উৎপাদনশীলতা। খবর নিক্কেই এশিয়া। কঠোর কাজের সংস্কৃতির জন্য খুব বেশি পরিচিত জাপান। নতুন ধারার ভাবনায় তারাও এখন সামনের দিকে আছে। বেশকিছু প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে ছোট কর্মসপ্তাহের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে।
বহুজাতিক সংস্থা হিটাচি গত এপ্রিলে ১৫ হাজার কর্মীর জন্য চলতি অর্থবছরে চারদিনের কর্মসপ্তাহ ঘোষণা করে। আগামী বছরের মার্চে সেই অর্থবছর সমাপ্ত হবে। একই মাসে গেম ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান গেম ফ্রিকও জানায় যে তারা এ পদ্ধতি ব্যবহার করছে। আরো কিছু বড় করপোরেট প্রতিষ্ঠান যেমন প্যানাসনিক হোল্ডিংস এবং এনইসি একই ধরনের পদক্ষেপগুলো নিয়ে ভাবছে। জাপানের পাশাপাশি অন্য দেশগুলোও ধীরে ধীরে একই পথে এগোচ্ছে।
ইন্দোনেশিয়ার প্রতিষ্ঠান আলামি গত বছর তার কর্মীদের জন্য চারদিনের কর্মসপ্তাহ ঘোষণা করে। তাদের মতে, এটা কর্মীদের মানসিক স্বাস্থ্যকে উন্নত করে এবং উৎপাদনশীলতা বাড়ায়। একই অবস্থা দেখা গেছে দক্ষিণ কোরিয়ার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এডুউইলের ক্ষেত্রেও। এ খাতে তারাই প্রথম চারদিনে সপ্তাহের পদ্ধতি ব্যবহার করে, আর সেটা তারা ব্যবহার শুরু করে ২০১৯ সালে। এডুউইলের সেই পদক্ষেপ জাস্টিস পার্টির সিম স্যাং-জুংকে কিছুটা নাড়া দেয়। গত মার্চে দেশের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের একজন প্রার্থী ছিলেন তিনি, তার মূল নীতিগুলোর একটি হিসেবে চারদিনের কর্মসপ্তাহের কথা প্রস্তাব করেন। এরই মধ্যে ভারত চারটি শ্রম কোড বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে। যেটার ফলে কর্মঘণ্টা ও বেতন প্রভাবিত হবে।
স্থানীয় গণমাধ্যম বলছে, এসব কোডের অধীনে কর্মীদের সামনে বিকল্প থাকবে তারা সপ্তাহে চারদিন কাজ করতে চায় কিনা। যদিও সপ্তাহ শেষে মোট কর্মঘণ্টা আগের মতোই অর্থাৎ ৪৮ ঘণ্টা থাকতে হবে। নভেল করোনাভাইরাস মহামারীর পরে বিভিন্ন কোম্পানি এবং চাকরিদাতা কাজের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে শুরু করে। পুরো এ অঞ্চলে করা জরিপের ফলাফল বলছে, কর্মীদের সবচেয়ে আকাক্সিক্ষত নীতি পরিবর্তনের নাম ছোট কর্মসপ্তাহ।
জাপানের মানবসম্পদ ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান পারসল হোল্ডিং সম্প্রতি তাদের হাজারেরও বেশি কর্মীকে প্রশ্ন করেছে—তারা কোন নীতি গৃহীত হয়েছে বলে দেখতে চায়। তাদের মধ্যে সর্বাধিক ২৩ দশমিক ৫ শতাংশ তিন থেকে চারদিনের কর্মসপ্তাহের পক্ষে। গত ফেব্রুয়ারিতে মিলিইউ ইনসাইটের এক রিপোর্টেও এমনই ইঙ্গিত দেয়া হয়েছিল। ভিয়েতনামের ৭৮ শতাংশ ও ইন্দোনেশিয়ার ৬৯ শতাংশ অংশগ্রহণকারী ছোট কর্মসপ্তাহ চান খুব করে। নিক্কেই এশিয়া।