শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৩১ পূর্বাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম:
মতিঝিলের নিজ চেম্বারে বিএনপি, জেএসডি ও নাগরিক ঐক্যের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে হাজির হয়েছেন জাতীয় ঐক্যের আহ্বায়ক ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন।
শনিবার সন্ধ্যায় ৬টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলন হচ্ছে। এখান থেকে ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট’ নামে নতুন একটি জোটের ঘোষণা দেয়া হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলন পরিচালনা করছেন সাবেক আওয়ামী লীগের নেতা সুলতান মুহাম্মাদ মনসুর। সভাপতিত্ব করছেন ড. কামাল হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত আছেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খোন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন, জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রমুখ।
এর আগে মতিঝিলের নিজ চেম্বারে বিএনপি, জেএসডি ও নাগরিক ঐক্যর নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে এই বৈঠক শেষ হয়।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে নিরপেক্ষ নির্বাচন আদায়ের লক্ষ্যে জাতীয় ঐক্যের দাবি ও লক্ষ্যের খসড়া চূড়ান্ত হয়েছে। এখন সেগুলো চূড়ান্ত করতেই এই বৈঠক হয়।
এদিকে, বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার অংশ যুক্তফ্রন্টের চেয়ারম্যান ও বিকল্পধারা সভাপতি অধ্যাপক ডা. একিউএম বদরুদ্দাজা চৌধুরী সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বারিধারায় সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন।
শনিবার দুপুরে ড. কামাল হোসেনের আমন্ত্রণে বেইলি রোডের বাসায় গিয়ে তাকে না পেয়ে ফিরে আসেন বি. চৌধুরী ও অন্যরা।
সেখানেই ক্ষুব্ধ বিকল্পধারার যুগ্ম-মহাসচিব ও বদরুদ্দোজা চৌধুরীর ছেলে মাহী বি. চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘ড. কামাল হোসেন আমাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। কিন্তু, আমরা বাড়িতে গিয়ে কামাল হোসেন দূরে থাক, গেট খুলে দেয়ার মতো একটি লোকও পাইনি।’
তিনি এই ঘটনাকে রাজনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত ও নজিরবিহীন বলে মন্তব্য করেন।
মাহী বলেন, ‘এ ঘটনায় স্পষ্ট হয়ে গেল, কারা সত্যিকার অর্থে জাতীয় ঐক্য চান না।’
এ ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বারিধারায় সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে যুক্তফ্রন্ট। বি. চৌধুরীর প্রেসসচিব জাহাঙ্গীর আলম পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘সংবাদ সম্মেলনে স্যার (বি. চৌধুরী) তার বক্তব্য তুলে ধরবেন।’
বিএনপিকে নিয়ে ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট’ নামে নতুন জোটের ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার আহ্বায়ক ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন।
শনিবার সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এই জোটের আত্মপ্রকাশ ঘটে।
এই জোটে বিকল্পধারার সভাপতি ও যুক্তফ্রন্টের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর থাকার কথা থাকলেও শনিবার দিনভর নানা নাটকীয়তা শেষে তাকে বাদ দেয়া হয়।
নতুন জোটের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, ড. কামাল হোসেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খোন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন, জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে অভিন্ন ৭ দফা দাবি ও ১১টি লক্ষ্য অর্জনে জোটের নেতারা অঙ্গিকার ব্যক্ত করেন। নতুন জোটের ৭ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে—
১. অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে সরকারের পদত্যাগ, জাতীয় সংসদ বাতিল, সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার গঠন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দিদের মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার
২. গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করার নিশ্চয়তা প্রদান
৩. বাক, ব্যক্তি, সংবাদপত্র, টেলিভিশন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সকল রাজনৈতিক দলের সভা-সমাবেশের স্বাধীনতা এবং নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা
৪. কোটা সংস্কার আন্দোলন, নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, সাংবাদিকদের আন্দোলন এবং সামাজিক গণমাধ্যমে স্বাধীন মতপ্রকাশের অভিযোগে ছাত্রছাত্রী-সাংবাদিকসহ সবার বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার এবং গ্রেফতারদের মুক্তির নিশ্চয়তা দিতে হবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ সকল কালো আইন বাতিল করতে হবে
৫. নির্বাচনের ১০ দিন আগে থেকে নির্বাচনের পর সরকার গঠন পর্যন্ত ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতাসহ সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিত ও নিয়ন্ত্রণের পূর্ণ ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের হাতে দিতে হবে
৬. নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে দেশি ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং সম্পূর্ণ নির্বাচন প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণে ভোট কেন্দ্র, পোলিং বুথ, ভোট গণনাস্থল ও কন্ট্রোল রুমে তাদের প্রবেশের ওপর কোনো প্রকার বিধি-নিষেধ আরোপ না করা। নির্বাচনকালীন সময়ে গণমাধ্যমকর্মীদের উপর যে কোনো ধরনের নিয়ন্ত্রণ বন্ধ করতে হবে
৭. নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তারিখ থেকে নির্বাচনের ফলাফল চূড়ান্তভাবে প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত চলমান সব রাজনৈতিক মামলা স্থগিত রাখা ও কোনো ধরনের নতুন মামলা না দেয়ার নিশ্চয়তা দিতে হবে।
একই সময়ে ১১টি অভিন্ন লক্ষ্য ঘোষণা করা হয়।
এর আগে মতিঝিলের নিজ চেম্বারে বিএনপি, জেএসডি ও নাগরিক ঐক্যর নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে এই বৈঠক শেষ হয়।
এই বৈঠকে নিরপেক্ষ নির্বাচন আদায়ের লক্ষ্যে জাতীয় ঐক্যের দাবি ও লক্ষ্যের খসড়া চূড়ান্ত করা হয়।
এদিকে, বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার অংশ যুক্তফ্রন্টের চেয়ারম্যান ও বিকল্পধারা সভাপতি অধ্যাপক ডা. একিউএম বদরুদ্দাজা চৌধুরী সন্ধ্যায় বারিধারায় সংবাদ সম্মেলন ক জানিয়েছেন তারা ড. কামাল হোসেনের ঐক্য প্রক্রিয়ার সঙ্গে আর নেই।
বাদ পড়েও বিএনপিকে নিয়ে ড. কামাল হোসেনের নতুন জোট ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে’ ফিরতে চান বিকল্পধারা সভাপতি ও যুক্তফ্রন্টের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী।
তবে তিনি এজন্য দুটি শর্তের কথা জানিয়েছেন। এর মধ্যে একটি শর্ত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার দলকে ১৫০টি আসন ছেড়ে দিতে হবে।
শনিবার সন্ধ্যায় বারিধারার বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে বি. চৌধুরী এই শর্ত দেন।
তিনি বলেন, ‘দুটি শর্ত পূরণ হলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে ফিরবে বিকল্পধারা। এর একটি হলো, স্বাধীনতা বিরোধীদের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষাভাবে কোনো ঐক্য হতে পারবে না। আর দ্বিতীয়টি হলো, সংসদে ভারসাম্য ও স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধে বিকল্পধারাকে ১৫০ আসন দিতে হবে।’
সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আপাতত মনে হয়েছে, বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ায় স্বাধীনতা বিরোধিরা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে রয়েছে। এমন প্রক্রিয়ার সঙ্গে বিকল্পধারা থাকতে পারে না।’
তবে শনিবার সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবে আত্মপ্রকাশ করা জাতীয় ঐক্যফন্টের প্রধান ড. কামাল হোসেনের আমন্ত্রণে তার বাসায় গিয়ে ফিরে এসে হতাশ হয়েছেন বলেও জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান, যুগ্ম-মহাসচিব মাহী বি. চৌধুরী, মাহবুব আলী, ব্যারিস্টার ওমর ফারুক, হাফিজুর রহমান ঝান্টু, ওবায়েদুর রহমান মৃধা, আসাদুজ্জামান বাচ্চু, বিএম নিজাম প্রমুখ।