বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ১০:০৭ পূর্বাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম : রাজধানীর গুলশানে গুলিবিদ্ধ হয়ে ইতালিয়ান নাগরিক নিহত হয়েছেন। তার নাম তাবেলা সিসারে (৫০)। সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে গুলশান-২ এর ৯০ নম্বর সড়কে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত আইজিপি, ডিএমপি কমিশনারসহ উর্ধ্বতক পুলিশ কর্মকর্তাগণ গুলশান ইউনাইটেড হাসপাতালে ছুটে যান। তারা ঘটনাটি দ্রুত তদন্ত পূর্বক অপরাধীদের গ্রেফতারের আশা ব্যক্ত করেন। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম নিশ্চিত করে বলেন, সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ইতালিয়ান নাগরিক তাবেলা সিসার রাস্তায় জগিং করতে ছিলেন। এসময় অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসীরা তাকে লক্ষ্য করে গুলি করে। এতে তিনি গুলি বিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। পরে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে উদ্ধার করে গুলশনস্থ ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি আরো জানান, নিহত ব্যক্তির কাছে গুলশানের আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের একটি পরিচয়পত্র পাওয়া গেছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ওসি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে ওই ব্যক্তি রাস্তা দিয়ে দ্রুত হেটে যাচ্ছিলেন। এসময় মোটর সাইকেল যোগে ৩জন যুবক এসে তার পেছন থেকে পর পর ৩টি গুলি করে। এসময় গুলি বিদ্ধ হয়ে তিনি মাটিতে পড়ে যান। আর তখনই ওই তিন যুবক মোটরসাইকেল চালিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। অপর এক ব্যক্তি জানান, ঘটনার সময় গুলশান-২ এর ৯০ নম্বর সড়কটি অন্ধকার ছিলো। রাস্তায় কোন বাতি জ্বলছিল না। এলাকায় ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা স্থাপন করা থাকলেও অন্ধকারের কারণে খুনিদের সনাক্ত করা যাবে। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে সিটি ক্যামেরার সাহায্যে খুনিদের সনাক্ত করা হবে। তবে অপর একটি সূত্র বলছে, নিহত ওই ব্যক্তি ইকো নামক একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার ধর্মীয় উপাসনালয় বিষয়ক প্রকল্পের ব্যবস্থাপক।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার মাহফুজুর রহমান জানিয়েছেন, সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে গুলশান-২ এর ৯০ নম্বর সড়কে সিজার তাভেলা নামে ওই ইতালীয় নাগরিককে গুলি করে হত্যা করা হয়। আইসিসিও কো-অপারেশন নামে একটি সংস্থার প্রুফ (প্রফিটেবল অপরচ্যুনিটিজ ফর ফুড সিকিউরিটি) কর্মসূচির প্রকল্প ব্যবস্থাপক ছিলেন তিনি। প্রত্যক্ষদর্শী সেনাবাহিনীর সাবেক সার্জেন্ট মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেনসহ ২জনে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ইউনাইটেড তাবেলাকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, টিশার্ট ও থ্রিকোয়ার্টার প্যান্ট পরা ওই বিদেশি নাগরিক ৯০ নম্বর সড়ক ধরে যাচ্ছিলেন। তাকে যেখানে গুলি করা হয়েছে তার অল্প দূরত্বের মধ্যে গভর্নরের ভবন এবং কাছেই পাকিস্তন দূতাবাস। মোশাররফ হোসেন ইন্ট্রিগেটেড সিকিউরিটি সার্ভিসেসের এরিয়া ইন্সপেক্টর হিসেবেদায়িত্ব পালন করেন। তিনি বলেন দুই ব্যক্তিকে ওই বিদেশি নাগরিকের পেছনে যেতে দেখেছি। সম্ভবত তারা তাকে অনুসরণ করছিল। আর ৮৩ নম্বর রোডে জার্মান ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশনের ভবনের সামনে মটরসাইকেলসহ দাঁড়িয়ে ছিলেন অপর এক ব্যক্তি। তবে সড়কবাতি নেভানো থাকায় তাদের চেনা যায়নি। তাবেনাকে অনুসরণ করে কিছুদূর এগোনোর পর পেছনে থাকা ওই দুই ব্যক্তির কেউ একজন গুলি করে। পরপর তিনটি গুলির শব্দ শোনা গেছে। তিনি আরো বলেন, ঘটনাটি ছিনতাই নয়, সম্ভবত পূর্ব পরিকল্পিত ঘটনা। কারণ ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে এ ঘটনা ঘটানো হয়ে থাকলে তার সঙ্গে থাকা জিনিসপত্র তারা নিয়ে যেত। কিন্তু তার কাছ থেকে কোন কিছুই ছিনিয়ে নেওয়া হয়নি। মোবাইলসহ সব কিছুই সেখানে পড়ে ছিল। এই হত্যাকাণ্ডের পর সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট, র্যাব ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে তদন্ত শুরু করে।