বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:২৯ অপরাহ্ন
সাইফ উল্লাহ, বিশেষ প্রতিবেদক: ওয়ারেন্টভুক্ত আসামীকে না ছাড়ায় সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে থানা পুলিশের বিরুদ্ধে জনরোষ তৈরিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে একদল তদবীরবাজ। স্থানীয় এলাকার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারী একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন গত কয়েক দিন ধরে ওয়ান্টেভুক্ত আসামীর পক্ষে তার লোকজন মানববন্ধন এমনকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পুলিশের বিরুদ্ধে আপক্তির ও উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড নির্বিগ্নে চালিয়ে আসছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সুনামগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের একটি মামলায় দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর উপজেলার কলাগাঁও গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে কয়লা ব্যবসায়ি ও যুবলীগ নেতা দাবিদার মোর্শেদ আলম সাদ্দামকে থানা পুলিশ গত ৮ মে স্থানীয় কলাগাঁও বাজার থেকে গ্রেফতার করে। পুলিশ সূত্র ও উপজেলার কলাগাঁও গ্রামের প্রত্যক্ষদর্শী মন্নাফ মোড়ল, ইউপি সদস্য হাসান আলীসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, গ্রেফতারের পর পরই এলাকায় সাদ্দামের তার অনুসারী ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও সংঘর্ষের ঘটনায় আদালতে বিচারাধীন একাধিক মামলার আসামী জেলা ছাত্রলীগ নেতা দাবিদার আরেক ইয়াবা ব্যবসায়ি ও তাদের সহযোগি গুটি কয়েক চিহ্নিত চাঁদাবাজ, কয়লা চোরাকারবারীরা সংঘটিত হয়ে হুমকি প্রদর্শন পুর্বক সরকারি কাজে বাঁধা প্রদানের অসৎ উদ্ধেশ্যে পুলিশের ওপর চড়াও হয় এমনকি গ্রেফতারকৃত আসামীকে শাসকদল আওয়ামীলীগের অঙ্গ সংগঠনের নাম ভাঙ্গিয়ে ছাড়িয়ে নিতে তৎপরতা চালিয়ে ব্যর্থ হয়।
সুনামগঞ্জে জেলা সদরে কর্মরত একাধিক জাতীয়, স্থানীয় ও অনলাইন নিউজপোর্টালের গণমাধ্যকর্মীরা জানান, পুলিশ ওই আসামী না ছাড়ায় আদালত থেকে জামিনে বেরিয়ে এসে থানা পুলিশের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করতে গ্রেফতার কাজে কর্তব্যরত থাকা পুলিশ সদস্যদের বদলী করিয়ে নিজের ক্ষমতার জানান দিতেই প্রশাসন এমনকি আওয়ামীলগের মূল দল কিংবা অঙ্গ সংগঠনকে কোন রকম অনুমতি না নিয়েই গত ১০ মে চারাগাঁও সীমান্তের কলাগাঁও বাজারে মানববন্ধন করে সাদ্দাম ও তার অনুসারীরা। এতেও সুবিধা না করতে পেরে ভুল তথ্য দিয়ে গণমাধ্যমকে ব্যবহার করে সুবিধা আদায়ের অপচেষ্টার অংশ হিসাবে শুক্রবার বিকেলে ফের সুনামগঞ্জ পৌর শহরের একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলন ডেকে থানার ওসি, এসআই, টেকেরঘাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এএসআই পিযুষ ও কনস্টেবল ইসমাঈলসহ পুলিশের উদ্দেশে বিষোদাগার করে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সাদ্দাম এলাকার সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আমির উদ্দিনের কনিষ্ট ছেলে সোহেল আহমদ বিপ্লব বাবুকে নিজের ভাতিজা হিসাবে পরিচয় তুলে ধরে বলেন, আমাকে পুলিশ কর্তৃক গ্রেফতারের কারণ জেনে বাবু নিজেকে জেলার সদর উপজেলার ছাত্রলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে আমাকে দ্রুত আদালতে প্রেরণের জন্য বলেন পুলিশকে। সাদ্দামের সাথে সংবাদ সম্মেলনে সোহেল আহমেদ বিপ্লব, পল্লী চিকিৎসকের ছেলে ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির নেতা পরিচয়ধারী জাভেদসহ তার পরিবারের স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।
অভিযোগ প্রসঙ্গে টেকেরঘাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এএসআই পিযুষ বলেন, সোহেল আহমদ বিপ্লব ওরফে বাবু ছাত্রলীগের সভাপতি পরিচয়ে ১৫ থেকে ২০ জনকে নিয়ে এসে কলাগাঁও বাজার থেকেই সাদ্দামকে গ্রেফতারের পর পরই জোড় করে ছিনিয়ে নিতে আসে এমনকি ওই সময় পুলিশকে সরকারি কাজে বাঁধা প্রদান ও হুমকি প্রদান করে বাবু, আনিস ও তাদের লোকজন।
অপরদিকে পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে আসার পথে আসামী সাদ্দাম মোটর সাইকেল থেকে লাফ দিয়ে পালিয়ে যেতে তিন তিনবার চেষ্টা করে আহত হয়ে এখন অহেতুক পুলিশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। টেকেরঘাট চুনাপাথর খনি প্রকল্পের বাসিন্দা শামীম আহমদ, কয়লা আমদানিকারক রিয়াজ উদ্দিন জানান, সাদ্দামকে গ্রেফতার করে ফাঁড়িতে নিয়ে আসার সাথে সাথে বেশ কিছু লোকজন তাকে তদবির করে ছাড়িতে নিতে আসলেও পুলিশ তাতে সায় দেয়নি। তাহিরপুর উপজেলার শ্রীপুর উওর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি শফিকুল ইসলাম বলেন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আমির উদ্দিনের ছেলে বাবু একজন দাগী সন্ত্রাসী, এলাকার বোরো ফসল পানিতে তলিয়ে যাবার পর লোকজন সীমান্তের বাংলাদেশ অংশ থেকে মরা গুড়া নুরী পাথর উত্তোলন করে জীবিকা নির্বাহ করে আসতেছে, কিন্তু ছাত্রলীগের নাম দিয়ে বেশ কিছুদিন বাবু ও তার সাঙ্গ পাঙ্গরা শ্রমিক-ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে নৌকা প্রতি ৫শ ও ট্রলি প্রতি ১শ টাকা করে চাঁদা আদায় করে আসছিলো, বিষয়টি আমরা থানার ওসিকে জানালে এসআই তপন ও অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা গিয়ে চাঁদা আদায়ে বাঁধা প্রদান করে এরপর থেকেই পুলিশকে চাঁপে ফেলতে চাঁদাবাজ ও চোরাকারবারীরা অহেতুক আওয়ামলীগের অঙ্গ-সংগঠনের নাম ব্যবহার মানববন্ধনসহ নানা নাঠক করছে এসবের সাথে আওয়ামীলীগের কোন ধরণের সম্পৃকতা নেই। তিনি আরো বলেন, সাদ্দাম আওয়ামীলীগের অঙ্গ সংগঠন যুবলীগেরও কেউ না সে বিএনপি নেতার ভাগ্নে এখন আওয়ামীলীগকে ব্যবহার করছে।