বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৮:৪৩ অপরাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম: মহান বিজয় দিবস আজ। মুক্তিযুদ্ধে বাঙালির গৌরবময় বিজয়ের ৪৬তম বার্ষিকী আজ ১৬ ডিসেম্বর। দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে পাকিস্তানি শাসন-শোষণ ও নিপীড়নের অবসান ঘটিয়ে ১৯৭১ সালের এই দিনে বিশ্বের মানচিত্রে নতুন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিল যে বাংলাদেশ, তার ৪৬ বছর।
১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর জেনারেল এএকে নিয়াজী ৯৩ হাজার সৈন্য নিয়ে ঢাকার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় সেনাবাহিনীর যৌথ কমান্ডের কাছে নিঃশর্তে আত্মসমর্পণ করে।
এই চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের মধ্যদিয়ে বিশ্বের মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে বাংলাদেশের। এই ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ যার যা কিছু আছে, তাই নিয়ে স্বাধীনতার জন্য প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান।
পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর ২৫ মার্চের গণহত্যার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে শুরু হয়ে যায় মুক্তিযুদ্ধ। সমগ্র বাঙালি জাতি পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে মুক্তি সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে পৃথক বাণীতে দেশবাসীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
এদিন প্রত্যুষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। এরপর শেরেবাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত ও শ্রদ্ধা নিবেদন এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করবেন।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীর নেতৃত্বে উপস্থিত বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযোদ্ধাগণ, বাংলাদেশে অবস্থিত বিদেশি কূটনীতিকগণ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং সাধারণ জনগণ জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।
বরাবরের মত তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরস্থ জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে মুক্তিযোদ্ধা, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী, বিএনসিসি, বাংলাদেশ রাইফেলস, পুলিশ, র্যাব, আনসার ও ভিডিপি, কোস্টগার্ড, কারারক্ষী এবং ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্সের সমন্বয়ে সম্মিলিত বাহিনীর কুচকাওয়াজ হবে।
এছাড়া রাষ্ট্রপতি বঙ্গভবনে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বিশিষ্ট গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে সংবর্ধনায় মিলিত হবেন।
দিবসটি সরকারি ছুটির দিন। দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে সংবাদপত্রসমূহে বিশেষ নিবন্ধ ও ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হয়েছে এবং সরকারি ও বেসরকারি বেতার ও টিভি চ্যানেলে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচারিত হচ্ছে।
বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। জাতির শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে।
হাসপাতাল, করাগার, বৃদ্ধাশ্রমসহ এ ধরনের বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সকল সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং রাতে আলোকসজ্জা করা হবে।
দেশের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে এবং বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসেও স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
এদিকে, মহান বিজয় দিবস পালনে যেন নতুন সাজে সেজেছে বাংলাদেশ। রাজধানীসহ সারা দেশ ছেয়ে গেছে লাল-সবুজ পতাকায়। বিজয় দিবসে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে রাজধানীসহ সারাদেশে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।