রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০১:১৮ অপরাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম ডেস্ক:
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা নেতা-কর্মীদের উপস্থিতিতে শনিবার বেলা ১১টার দিকে ঢাকার গোলাপবাগ মাঠে বিএনপির পূর্ব নির্ধারিত বিভাগীয় সমাবেশ শুরু হয়েছে। পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াতের মধ্যে দিয়ে সমাবেশ শুরু হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের ৪৫ মিনিট আগেই আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ শুরু করেছে বিএনপি। নির্ধারিত সময় অনুসারে বেলা ১১টায় গোলাপবাগ মাঠে সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সোয়া ১০টাতেই সমাবেশ শুরু করে দেওয়া হয়। বিএনপির অন্যান্য বিভাগীয় সমাবেশগুলোতেও দেখা গেছে নির্ধারিত সময়ের আগেই সমাবেশ শুরু করতে।
বহু নাটকীয়তার পর কালকে বিকেলে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালের কাছে গোলাপবাগ মাঠে সমাবেশের অনুমতি পায় বিএনপি। কিছুক্ষণের মধ্যেই দলটির নেতাকর্মীরা মাঠে ঢুকতে শুরু করেন ও সমাবেশের প্রস্তুতি শুরু করেন। আজ সকাল সোয়া ১০টায় পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াতের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে সমাবেশ শুরু হয়। কোরআন তেলাওয়াত করেন জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের আহ্বায়ক মাওলানা নেছারুল হক।
বহু নাটকীয়তার পর গতকাল বিকেলে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালের কাছে গোলাপবাগ মাঠে সমাবেশের অনুমতি পায় বিএনপি
সমাবেশে সভাপতিত্ব করছেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। সমাবেশ সঞ্চালনা করছেন ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি সদস্য সচিব আমিনুল হক ও রফিকুল আলম মজনু।
সমাবেশের মঞ্চে এরই মধ্যে উপস্থিত হয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবেদীন ফারুক, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিবুন নবী খান সোহেল, মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, রাজশাহীর সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু, ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনুকুল হাসান। ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আজিজুল বারী হেলাল অনুষ্ঠান পরিচালনা করছেন।
উল্লেখ্য, এতদিন বিএনপির সভা সমাবেশগুলোতে দলটির মাঠের নেতা মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দিতেন। কিন্তু গেল বুধবারের বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষের ঘটনায় বৃহস্পতিবার গভীর রাতে মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। শুক্রবার আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
বিএনপির সমাবেশকে ঘিরে গতকাল থেকেই কানায় কানায় পরিপূর্ণ গোলাপবাগ মাঠ। অনেকে এখানে রাতের বেলায়-ই আশ্রয় নিয়েছেন। ভোর বেলা অনেকেই আসছেন সমাবেশস্থলে। তারই ধারাবাহিকতায় আজ শনিবার ভোরে গোলাপবাগ মাঠ ছাপিয়ে আশেপাশের সড়কগুলোতেও বিএনপি নেতাকর্মীদের উপস্থিতি বেড়েছে। ভোর সাড়ে ৬টায় এই চিত্র দেখা গেছে।
সরজমিন দেখা যায়, রাজধানী গোলাপবাগ মাঠে সমাবেশে গতকাল রাতেই উপস্থিত হওয়া অনেক নেতাকর্মী ঘুমিয়ে ছিলেন। তারা সমাবেশের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ঢাকা ও বিভিন্ন জেলা থেকে এসেছেন এসব নেতাকর্মীরা। কিছুক্ষণ পরপরই মাঠে নেতাকর্মীদের মিছিল আসছে। অনেকে মাঠের মধ্যে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন। মাঠের পশ্চিম পাশে অতিথিদের জন্য স্টেজ বানানো হয়েছে৷ মাঠে বড় গ্যাসবেলুনে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিভিন্ন পোস্টার ও স্লোগান লিখে তা উড়ানো হয়েছে।
ব্যানারে ছেয়ে গেছে পুরো গোলাপবাগ মাঠ। মাঠের বাহিরের আশেপাশের সড়কেও নেতাকর্মীরা জড়ো হচ্ছেন। শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টায় ঢাকার পাশের জেলা থেকে সমাবেশে এসেছেন আলমগীর সরকার। তিনি বলেন, আসার পথে পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। বিভিন্ন অজুহাত দিয়ে এসেছি। যেকোনো মূল্যে সমাবেশ সফল করতে চাই আমরা।
রাত সাড়ে ৯টায় উত্তর খান থেকে এসেছেন মহিউদ্দিন। রাতে মাঠেই ঘুমিয়ে ছিলেন। তিনি বলেন, গাড়ি বন্ধ এজন্য রাতে রাতেই চলে এসেছি। এমনিতেই বাড়িতে থাকতে পারি না পুলিশের জন্য। তাই রাতেই চলে এসেছি।
গতকাল রাত ৮টায় গুলশান থেকে সমাবেশের উদ্দেশ্যে গোলাপবাগ এসেছেন রাজন। রাতে মাঠেই নির্ঘুম অবস্থান করেছেন। তিনি বলেন, পুলিশ চেক দিচ্ছে। আজ আরও কড়াকড়ি হবে তাই কাল রাতেই চলে এসেছি। জিয়ার সৈনিকদের ঘুমাতে হয় না। সারারাত মিছিল দিয়েছি।
শুধু ঢাকা নয় সমাবেশ সফল করার উদ্দেশ্যে রাজশাহী থেকে এসেছেন ৭-৮ জন কর্মী। তারা রাস্তায় পাটি বিছিয়ে একসঙ্গে বসে আছেন। তারা রাজশাহী জেলার মতিহার থানার বাসিন্দা। ভোর ৬টার ট্রেনে এসেছেন। মহানগরের সাবেক সহ সাংগঠনিক সম্পাদক একরাম আলী বলেন, ভোর বেলায় সমাবেশে চলে এসেছি। স্বৈরাচার সরকারকে মুক্ত করার জন্য এসেছি। এদেশের গণতন্ত্র ফেরানোর জন্য এসেছি।