সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:০৪ অপরাহ্ন
মুহাম্মদ আব্দুল বাছির সরদার : আগামিকাল ২৩ এপ্রিল সুনামগঞ্জ জেলার ৩ উপজেলার ২৬ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই ২৬ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ১৫০ জন, সাধারণ সদস্য পদে ১ হাজার ১০১ জন ও সংরক্ষিত মহিলা আসনে ২৯৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বীতা করবেন। উপজেলাগুলোর মধ্যে দোয়ারাবাজারে দলীয় প্রার্থীর চেয়ে আঞ্চলিকতা গুরুত্ব পাবে বলে ভোটররা জানিয়েছেন। আর সুনামগঞ্জ সদর ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জে দলীয় ও স্বতন্ত্রপ্রার্থীরা রয়েছেন আলোচনায়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার ৯ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৪৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। একাধিক ভোটাররা জানান, এই উপজেলার একটি ইউনিয়নে স্বতন্ত্রপ্রার্থী মূল প্রতিদ্বন্দ্বীতায় থাকবেন, অন্যগুলোতে রাজনৈতিক লড়াই হবে। তবে একটিতে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী ও অন্য আরেকটিতে বিএনপির বিদ্রোহীপ্রার্থী মূল লড়াইয়ে থাকবেন। দোয়ারাবাজার উপজেলার ৯ ইউনিয়নেই ভোট হবে আঞ্চলিকতার ওপর ভিত্তি করে। এই উপজেলার প্রায় সকল ইউনিয়নে বড় দুই দলের একাধিক বিদ্রোহীপ্রার্থী থাকায় রাজনৈতিক লড়াইয়ের চেয়ে আঞ্চলিকতাকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন ভোটাররা-এমন আভাষই পাওয়া গেছে। দক্ষিণ সুনামগঞ্জের ৮ ইউনিয়নে রাজনৈতিক লড়াই হচ্ছে। তবে দলীয় বিদ্রোহীপ্রার্থীরাও ৪টি ইউনিয়নে মূল লড়াইয়ে উঠে আসতে পারেন বলে মতামত দিয়েছেন ভোটাররা।
দোয়ারাবাজার সদর ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ প্রার্থী আব্দুল হামিদ, বিএনপির আব্দুল বারীর সাথে সমানে সমান অবস্থা আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল খালিকের। এছাড়া নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন আওয়ামীলীগের বিদ্রোহীপ্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক, বিএনপির বিদ্রোহীপ্রার্থী নূরুল আমীন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। দোহালিয়া ইউনিয়নে লড়াই হচ্ছে চর্তুমুখি, বিএনপি প্রার্থী ফখর উদ্দিন, আওয়ামীলীগের আনোয়ার মিয়া আনু, আওয়ামীলীগের বিদ্রোহীপ্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল এবং শামীমুল ইসলাম শামীমের লড়াই হবে। এছাড়া নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন শামিমুল হক শামিম, এমরাজ মিয়া তালুকদার, রাসেন্দ্র দাস, বিএনপির বিদ্রোহীপ্রার্থী দেওয়ান হুমায়ুন চৌধুরী, মিজানুর রহমান, কাজী মাহবুবুল ইসলাম ও জাপার লিপিয়া বেগম। পাণ্ডারগাঁও ইউনিয়নেও একই অবস্থা, এই ইউনিয়নের আওয়ামীলীগ প্রার্থী আব্দুল ওয়াহিদ, বিএনপির আব্দুশ শহীদ বাপন, আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আমজাদ হোসেন ও বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী ফারুক আহমদ মূল লড়াইয়ে রয়েছেন। এছাড়া নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন আওয়ামীলীগের বিদ্রোহীপ্রার্থী হুমায়ুন কবির, মোহাম্মদ আলী ও ধন মিয়া নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। মান্নারগাঁও ইউনিয়নে রাজনৈতিক লড়াই হবে আওয়ামীলীগের বরুণ চন্দ্র দাসের সঙ্গে শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বীতা গড়ে উঠেছে বিএনপির আবু হেনা আজিজের। এছাড়া নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন আওয়ামীলীগের বিদ্রোহীপ্রার্থী সামছুদ্দিন আহমদ, বিএনপির বিদ্রোহীপ্রার্থী আইন উদ্দিন, ইজ্জত আলী, কৃষ্ণমোহন রায় ও জাপার সিরাজ মিয়া নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। বাংলাবাজার ইউনিয়নে চর্তুমুখি লড়াই জমবে, আওয়ামীলীগের আবুল হোসেন, আওয়ামীলীগের বিদ্রোহীপ্রার্থী জসিম আহমদ রানা, বিএনপির আব্দুর রহিম ও বিএনপি বিদ্রোহী প্রার্থী মুরশেদ আলমের মূল প্রতিদ্বন্দ্বীতা হতে পারে। এছাড়া নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন স্বতন্ত্র আবুসাহেল। নরসিংপুর ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের দুই বিদ্রোহী প্রার্থী হাবিবুর রহমান ও একেএম আইয়ুবুর রহমানের প্রতিদ্বন্দ্বীতা হবে। মূল প্রতিদ্বন্দ্বীতায় থাকবেন বিএনপির শামছুল হক নমুও। এছাড়া নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন নূরুল আমিন, শাখাওয়াত হোসেন চৌধুরী, জাপার আবুল কালাম মোঃ সদরনূর, কামরুজ্জামান ভূঁইয়া, আজিজুর রহমান ও প্রবাসী আব্দুল আলী। সুরমা ইউনিয়নে ত্রিমূখী প্রতিদ্বন্দ্বীতা হতে পারে, এই তিন প্রার্থী হচ্ছেন আওয়ামীলীগের খন্দকার মামুনুর রশিদ, আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হুমায়ুন রশিদ, বিএনপির মোঃ শাহজাহান ও বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী মোঃ হারুনুর রশিদ। এছাড়া নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন জাপার ইকবাল হোসেন ও স্বতন্ত্রী আব্দুল বাখির। বগুলাবাজার ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের মিলন খান, আওয়ামীলীগের বিদ্রোহীপ্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান আহাম্মদ আলী আপন, বিএনপির আরিফুল ইসলাম জুয়েল, বিএনপির বিদ্রোহীপ্রার্থী জামাল উদ্দিন ও জাপার গিয়াস উদ্দিন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের জহিরুল ইসলাম, আওয়ামীলীগের বিদ্রোহীপ্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান আমিরুল হক, বিএনপির আতাউর রহমান বিএনপির বিদ্রোহীপ্রার্থী খলিলুর রহমান ও হারুনুর রশিদ, জাপার জালাল আহমদ ও স্বতন্ত্র রইছ মিয়া নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। এছাড়া উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের ৮১টি সাধারণ সদস্য পে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন ৩৮৪ জন ও সংরক্ষিত ২৭টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন ৯৯ জন।
এদিকে দক্ষিণ সুনামগঞ্জের একাধিক ভোটার জানান, দরগাপাশায় বিএনপির মোঃ ছুফি মিয়া ও আওয়ামীলীগের মনির উদ্দিনের মধ্যেই প্রতিদ্বন্দ্বীতা জমবে। পূর্বপাগলায় আওয়ামীলীগের ফয়জুল করিম ও বিএনপির প্রার্থী আবু তাহেরের মধ্যে লড়াই হতে পারে। পশ্চিম পাগলায় আওয়ামীলীগের জগলুল হায়দার ও আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী মোঃ নূরুল হকের মধ্যেই হচ্ছে মূল লড়াই। জয়কলসে আওয়ামীলীগের মাসুদ মিয়া, আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রাজা মিয়া ও বিএনপির শামছুন নূর মিয়ার মধ্যে লড়াই জমে উঠেছে। শিমুলবাঁক ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের মিজানুর রহমান জিতু, আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল্লাহ মিয়া ও আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী শাহীনুর রহমান শাহীন মূল প্রতিদ্বন্দ্বীতায় রয়েছেন। পূর্ববীরগাঁওয়ে আওয়ামীলীগের রিয়াজুল ইসলাম এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী নূর কালামের লড়াই হতে পারে। পশ্চিম বীরগাঁওয়ে বিএনপির লুৎফুর রহমান জায়গীরদার খোকন, আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সফিকুল ইসলাম ও আওয়ামীলীগের প্রার্থী জসিম উদ্দিনের মধ্যে লড়াই হতে পারে। পাথারিয়ায় বিএনপির আমিনুর রশীদ আমিন, আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী শহীদুল ইসলাম ও আওয়ামীলীগের প্রার্থী আবুল ফয়েজের মধ্যে শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বীতা হবে।
অন্যদিকে সদর উপজেলার ৯ ইউনিয়নের একাধিক ভোটার জানান, কোরবাননগর ইউনিয়নে স্বতন্ত্রপ্রার্থী আবুল বরকত, বিএনপির মনফর আলী ও আওয়ামীলীগের প্রার্থী কোহিনুর আলমের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বীতা হবে। গৌরারং ইউনিয়নে বিএনপির ফুল মিয়া, আওয়ামীলীগের হোসেন আলী ও জাপার শওকত আলীর মধ্যে মূল লড়াই হতে পারে। জাহাঙ্গীরনগরে আওয়ামীলীগের মুখশেদ আলী ও বিএনপির উসমান গণির মধ্যেই প্রতিদ্বন্দ্বীতা হতে পারে। কাঠইর ইউনিয়নে জাপার ফারুক মিয়া, আওয়ামীলীগের অ্যাডভোকেট বোরহান উদ্দিন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মাওলানা শামছুল ইসলাম, স্বতন্ত্রপ্রার্থী আব্দুল মতিন মাস্টারের মধ্যেই প্রতিদ্বন্দ্বীতা জমবে বলে জানিয়েছেন ভোটাররা। মোল্লাপাড়ায় আওয়ামীলীগের আব্দুছ ছোবহান, বিএনপির বিদ্রোহী নূরুল হক ও বিএনপির আজমল হোসেনের মধ্যেই প্রতিদ্বন্দ্বীতা হতে পারে। সুরমা ইউনিয়নে জাপার আব্দুছ ছাত্তার, আওয়ামীলীগের আব্দুছ ছত্তার ডিলার ও আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী আমির হোসেন রেজার মধ্যেই প্রতিদ্বন্দ্বীতা হতে পারে।