বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৫৮ পূর্বাহ্ন
চান মিয়া, নিজস্ব প্রতিবেদক (সুনামগঞ্জ): ছাতকে উপজেলা হাসপাতাল বেডেই বিনা চিকিৎসায় রোগি মারা যাবার ঘটনায় সর্বত্র ব্যাপক তোলপাড় চলছে। বুধবার রাতে মৃত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। জানা যায়, শহরের কুমনা এলাকার মৃত হোসেন আলীর ছেলে মোশাহিদ আলীর রিক্সা গেরেজের রিকশা চালক মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার কান্দিরগাঁও গ্রামের সুরুজ মিয়ার ছেলে সুন্দর আলী (৪৫) মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পেটের ব্যথায় হাসপাতাল রোডে গুরুতর অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তাতিকোনা গ্রামের মৃত আব্দুল মনাফের ছেলে আব্দুস শুকুর ও চানাচুর বিক্রেতা টুনু মিয়া রোগিকে কাঁধে করে ছাতক হাসপাতালে নিয়ে যান। এ সময় হাসপাতালে কর্তব্যরত ডাক্তার আজাদুর রহমান ও ডাক্তার ফারুকুল ইসলাম উপযুক্ত অভিভাবকের অজুহাত দেখিয়ে রোগিকে ভর্তি করেন নি। উল্টো কর্তব্যরত ডাক্তাররা রোগির সাথে আসা লোকদের সাথে দূর্ব্যবহার করেন। এ সময় রোগি নিজের চিকিৎসার জন্যে ডাক্তারদের হাতে-পাঁয়ে ধরে চিকিৎসার জন্যে মিনতি করেন এবং বন্ডসই দিতেও রাজি হন। কিন্তু এতেও পাষাণ হৃদয় গলেনি ডাক্তারের। অবশেষে ব্যথার যন্ত্রণায় কাতর হয়ে রোগি নিজেই হাসপাতালের বেডে শুয়ে পড়েন। ওয়ার্ড বয় আবুসাইদ তাকে একটি কম্বল এনে দেয়। ওই রাতে ও পরের দিন বুধবার সকালে রোটিন মতো ওয়ার্ডে ডাক্তার রাউন্ডে এসে সুন্দর আলীকে ডাক্তার ও নার্স কেউ তাকে কোন ওষুধও ব্যবস্থাপত্র দেয়নি। অবশেষে নিরুপায় হয়ে পাশের বেডের রোগি কোম্পানীগঞ্জের ইছাকলস গ্রামের মৃত রহমত আলীর ছেলে আমির আলী (৫৫) ও ছাতকে গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও ইউপির দিঘলী-ব্রাহ্মণগাঁও গ্রামের ইসমাইল আলীর স্ত্রী আলেয়া বেগম (২৬)-এর কাছ থেকে একটি ব্যথার ট্যাবলেট চেয়ে সেবন করেন মৃত সুন্দর আলী। বুধবার বেলা ২টায় হসপাতাল বেডেই তিনি মারা গেলে ওয়ার্ড ক্লিনার অঞ্জনা রানীও শুক্লা রানী লাশটি হাসপাতাল থেকে অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার অপচেষ্টা চালায়। এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার অভিজিৎ শর্ম্মা বিনা চিকিৎসায় রোগির মারা যাবার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ২৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ওই রোগি হাসপাতালে ভর্তি হতে আসে। এ সময় তাকে গার্জিয়ান নিয়ে আসার জন্যে বলা হয়। সুনামগঞ্জ সহকারি পুলিশ সূপার (ছাতক-দোয়ারা) মোঃ দোলন মিয়া জানান, ঘটনার ব্যাপারে ম্যাসেজ পেয়ে লাশ উদ্ধার করা হয়। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তি ব্যবস্থা নেয়া হবে। বৃহস্পতিবার সুনামগঞ্জে ময়না তদন্ত শেষে লাশ নিজ বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।