শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:৩৯ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক: অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৭৯৮-৬৭৬৩০১

এ যেন বাদুড়ের রাজ্য!

amarsurma.com

আমার সুরমা ডটকম:

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে বিলুপ্তপ্রায় নিশাচর প্রাণী বাদুড়ের যেন মেলা বসেছে। এক সময় এ উপজেলার গ্রাম থেকে শহরাঞ্চলের বনে জঙ্গলে উঁচু গাছের মগডালে বাদুড়ের মাথা নিচু করে ঝুলিয়ে থাকার দৃশ্য হরহামেশাই চোখে পড়তো।
তখন বাদুড়ের উড়াউড়ি আর কিচিরমিচির শব্দে চিরায়িত গ্রামীণ প্রকৃতি সেজেছিল অন্যরূপে। তবে বর্তমানে বাদুড়ের নিরাপদ আবাসস্থল, খাবারের সংকট, গ্রামে গ্রামে বিদ্যুতের লাইন নানা কারণে বিলুপ্ত প্রায় স্তন্যপায়ী প্রাণী বাদুড়। প্রকৃতির গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা বাদুড় এখন কয়েক গ্রাম ঘুরলেও চোখে পড়ে না।
পাখির মতো উড়লেও আকৃতির কারণে এদের কদর নেই। নানা গল্প-কাহিনী আর আতঙ্ক সৃষ্টিকারী নানা হুমকির মুখে থাকা সত্ত্বেও এ বাদুড় শতবর্ষ ধরে কমলগঞ্জ উপজেলার পৌর এলাকার ৫ নং ওয়ার্ডের পানিশালা গ্রামের কালীবাড়ির একটি পুরাতন বটগাছ ও বাশঁ বাগান জুড়ে বাদুড়ের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। এখানে যেন বাদুড়ের রাজ্য।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওই এলাকায় সৌভাগ্যের প্রতীক মেনে বাদুড়দের ভিন্ন ভাবে গ্রহণ করায় ক্রমেই বংশবৃদ্ধি ঘটছে। প্রচণ্ড তাপদাহের মধ্যে তাদের হুকের মতো পা দুটো আটকিয়ে নিস্তব্ধতায় ঝুলছে অসংখ্য বাদুড়। যেন চোখ ফেরানো দায়। মাথায় সামান্য হলুদ রঙ থাকলেও পুরো দেহ কালো। একটু শব্দ হলেই দল বেধে পালকহীন চামড়া মোড়ানো ডানায় কয়েকটা ঝাপটা দিয়ে আবার নীরব। রাতের অক্লান্ত শ্রমে যেন তারা শুধু একটু প্রশান্তির ঘুমই খুঁজছে। গোধূলির রং মাখতেই যেন অন্যান্য পাখি আর বাদুড়ের ছোটাছুটিতে এলাকাটিতে সৃষ্টি হয় সৌন্দর্যের অবর্ণনীয় এক পরিবেশ।
ওই গ্রামের জীব বৈচিত্র রক্ষা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সালাহ্উদ্দিন শুভ বলেন, প্রায় শত বছর ধরে এরা স্থায়ী ভাবে এখানেই আছে। কাঠ ফাটা রোদ আর তীব্র গরমের মধ্যে বাদুড়ের ডানা মেলার দৃশ্য দারুণ সৈন্দর্যের সৃষ্টি হয়। আবার খাদ্যের সন্ধানে গোধুলির রঙ মাখতেই উড়ে চলা এবং ভোরে নীড়ে ফিরে আসা বাদুড়গুলো দেখে মনে হয়, আকাশ যেন কালো মেঘে ছেয়ে গেছে।
স্থানীয়রা জানান, বাদুড় একটি নিরীহ প্রাণী। মাঝে মধ্যে কিছুক্ষণ কিচিরমিচির শব্দ করে, তবে পা নেই। পেটের নিচে দুটো হুক আছে তা নিয়ে গাছের ডালে মাথা নিচু করে ঝুলিয়ে থাকে। গরমে ডানা ছেড়ে হাত পাখার মতো বাতাস করে। আবার নিস্তব্ধ হয়ে যায়। এরা যেন পোষা প্রাণীদের মতোই নির্ভয়ে বসবাস করছে বহুকাল ধরে।
এখন বাদুড় নিয়ে কল্প-কাহিনী আর কুসংস্কারের যুগ কেটে গেছে। এরা কীটপতঙ্গ খেয়ে ফসলকে রক্ষা করে। পরাগায়ন সৃষ্টি করে। তাই মানবকল্যাণকারী ও পরিবেশবান্ধব এ স্তন্যপায়ী প্রাণী রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব।
কমলগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হাবিবুর রহমান বলেন, আমাদের স্কুলের পেছনে ও কালী বাড়ির ভিতরে তিন থেকে চারটা গাছের মধ্যে মাথা নিচের দিকে দিয়ে কি সুন্দর ভাবে ঝুলে থাকে। আবার একসঙ্গে সবগুলো আকাশে ঘুড়ে বেড়ায় সে সময়টা দেখার জন্য স্কুল ছাত্রীরা গাছের দিকে ও আকাশের দিকে তাকিয়ে আনন্দ উপভোগ করে।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com