বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫, ০৪:০৩ পূর্বাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক: অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৭৯৮-৬৭৬৩০১
সংবাদ শিরোনাম :
প্রথম বছরেই বাজিমাত জামিয়াতুন নিসওয়ান আল-ইসলামিয়া সাকিতপুরের প্রধান উপদেষ্টার কাছে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন হস্তান্তর আনজুমানে তালিমুল কুরআনের পুরষ্কার বিতরণী সম্পন্ন দিরাইয়ে ফিলিস্তিনি হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ দিরাইয়ে অপারেশন ডেভিল হান্টে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার পুলিশ সদস্যকে অপহরণ ডাকাত দলের, আটক ২ দিরাই উপজেলা জমিয়তের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত আওরঙ্গজেবের সমাধিতে হাত দিলে ভারত ভেঙ্গে খানখান হয়ে যাবে: মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব সুনামগঞ্জে পৃথক ধর্ষণ চেষ্টা, বখাটের বাড়িঘর ভাঙচুর, আটক ৩ মাগুরায় নির্যাতিত শিশুটি আর নেই, সেনাবাহিনীর শোক

মহানবী সা.কে নিয়ে বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য: আন্তর্জাতিক চাপে দিশাহারা বিজেপি নেতৃত্ব

amarsurma.com

আমার সুরমা ডটকম ডেস্ক:

ভারতের ভেতরে কী প্রতিক্রিয়া হলো তা নিয়ে কোনো হেলদোল নেই, মূলত বাইরের চাপেই দিশাহারা দেশটির ক্ষমতাসীমন দল বিজেপির নেতৃত্ব। মহানবী সা. নিয়ে নূপুর শর্মার বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্যের পরে দলের সব মুখপাত্রের মুখে লাগাম পরিয়েছে বিজেপি। ফরমান জারি হয়েছে, নেতা থেকে মুখপাত্র- সকলকেই টেলিভিশনের পর্দায় মুখ দেখানো বন্ধ করতে হবে।

সেই নির্দেশ অবশ্য জানতেন না মিরাটের বিজেপি এমপি রাজেন্দ্র আগরওয়াল। দলীয় মুখপাত্র নূপুরের বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্যের জেরে কানপুরে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ নিয়ে বক্তব্য রাখতে তিনি সোমবার বিকালে বসে পড়েছিলেন একটি টিভি চ্যানেলের অনুষ্ঠানে। যা দেখেই চোখ কপালে ওঠে বিজেপির সদর দফতরে উপস্থিত নেতাদের। তড়িঘড়ি রাজেন্দ্রের ফোনে নির্দেশ যায়, ‘দ্রুত উঠে আসুন টিভি শো থেকে’। বিজেপি সূত্রের খবর, বিষয়টি যেভাবে ভারতের ভাবমূর্তিকে আন্তর্জাতিক স্তরে কালিমালিপ্ত করেছে, তাতে ওই বিষয়ে ছোট-বড় সব পদাধিকারীকে মুখ খুলতে বারণ করেছে দল। আপাতত নীরবতাই বর্ম করে সময়ের সাথে বিষয়টি থিতিয়ে যাওয়ার অপেক্ষায় বিজেপি নেতারা।

চুপ খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও। রোববার ও সোমবার বেশ কয়েকটি সরকারি অনুষ্ঠানে তিনি বিভিন্ন বিষয়ে বক্তব্য রেখেছেন। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে যেখানে ভারতের ক্রমবর্ধমান অসহিষ্ণুতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, তা নিয়ে একেবারেই ‘নীরব’ মোদি। মুসলিম দেশগুলো ভারতের ভাবমূর্তি নিয়ে প্রশ্ন তোলা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী কেন চুপ তা নিয়ে সরব বিরোধীরা। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর কথায়, ‘ঘরে ভাঙন ধরায় বর্হিবিশ্বের কাছেও দুর্বল হয়ে পড়েছে ভারত। বিজেপির লজ্জাজনক ধর্মান্ধতা আমাদের ভিতর থেকে দুর্বল করার সাথে বর্হিবিশ্বেও ভাবমূর্তিকে ক্ষতি করেছে।’

অটলবিহারী বাজপেয়ী সরকারের মন্ত্রী তথা অধুনা তৃণমূল নেতা যশবন্ত সিন্‌হার প্রশ্ন, ‘দলের মুখপাত্রদের করা মন্তব্য নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মন কি বাত কোথায়? না কি প্রধানমন্ত্রী গোপনে তাদের সমর্থন করছেন!’ বিজেপি নেতৃত্বের পাল্টা যুক্তি, সব বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে জবাবদিহি করতে হবে এমন কোনো আইন নেই। দল ইতিমধ্যেই দুই মুখপাত্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। দল যে সর্ব ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং কোনো ধর্মের পূজনীয় ব্যক্তিদের অপমানকে বিজেপি যে প্রশয় দেয় না সেই বিষয়টি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে।

অবস্থান স্পষ্ট করতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, বিজেপিমুখপাত্রদের বক্তব্যের সাথে সরকার এক মত নয়। মুখপাত্রদের বক্তব্য তাদের একান্তই নিজস্ব। এ সব ওই দলের খুচরা লোকেদের (ফ্রিঞ্জ এলিমেন্ট) মতামত। তার সাথে সরকারের কোনো সম্পর্ক নেই। বিজেপি নেতৃত্ব ঘরোয়াভাবে স্বীকার করেছেন একের পর এক মুসলিম দেশ নূপুরের মন্তব্য নিয়ে সরব হওয়ায় রীতিমতো অস্বস্তিতে সরকার। কারণ, দল জানে, দেশের বৃহত্তর মুসলিম সমাজের কাছে এখনো অচ্ছুৎ বিজেপি। সুতরাং বিষয়টি যতক্ষণ দেশের গণ্ডির মধ্যে ছিল, ততক্ষণ ওই বিতর্ক থেকে আখেরে মেরুকরণের সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছিলেন বিজেপি নেতারা। তাই প্রথম দিকে নূপুরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া তো দূরে থাক, উল্টা ওই মুখপাত্র দাবি করেন, ওই বিতর্কিত মন্তব্যের পরও দলের শীর্ষ নেতৃত্ব তার পাশে রয়েছেন। সেজন্য দলীয় নেতৃত্বকে ধন্যবাদও জানিয়েছিলেন নূপুর। কিন্তু মুসলিম দেশগুলো এক জোটে মুখ খোলায় দুই মুখপাত্রের থেকে দূরত্ব তৈরি করে নূপুরকে সাসপেন্ড ও আর এক মুখপাত্র নবীন জিন্দলকে বহিষ্কার করা হয়। প্রবীণ কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরমের বক্তব্য, ‘ঘরোয়া সমালোচনায় বিজেপির বিন্দুমাত্র হেলদোল ছিল না। উল্টা প্রশয়ই দেয়া হয়েছে। যখন আন্তর্জাতিক স্তরে সমালোচনা শুরু হলো, তখন দুই মুখপাত্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হয়েছে।’

বিজেপি নেতৃত্ব ভেবেছিলেন, মুখপাত্রদের শাস্তি দিলেই বিতর্ক থেমে যাবে। কিন্তু ওই মন্তব্যের জেরে আন্তর্জাতিক স্তরে পরিস্থিতি যে এভাবে ঘোরালো হয়ে উঠবে তা ছিল তাদের কল্পনার অতীত। পরিস্থিতি সামলাতে সোমবার দ্রুত জাতীয় মুখপাত্রদের বৈঠকে ডেকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে নূপুর শর্মার মহানবী সা. সংক্রান্ত বিতর্কে কেউ মুখ খুলতে পারবেন না। একই নির্দেশ পাঠানো হয়েছে রাজ্য স্তরের মুখপাত্রদের কাছেও। বিজেপি চাইছে, সময়ই ক্ষতে প্রলেপ দিক।

কংগ্রেস নেতৃত্বের পাল্টা অভিযোগ, এই ঘটনা নতুন নয়। দীর্ঘ দিন ধরেই বিজেপি সমাজে ঘৃণার বীজ বপন করছে। যার ফল এখন পাওয়া যাচ্ছে। কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালার কথায়, ‘বিজেপি এত দিন মন্দির-মসজিদ করেছে। শ্মশান-কবরস্থান, ৮০-২০ করেছে। তখন বারণ করা হয়নি। এখন ধামাচাপা দেয়ার জন্য মুখপাত্রদের বলি দিয়ে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব দায় ঝাড়ছেন।’
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com