শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৯ পূর্বাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম : বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সাংগঠনিক সম্পাদক শহীদুল ইসলামের ওপর হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গনে এ ঘটনা ঘটে। এ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বিএফইউজে’র নির্বাহী পরিষদ। শুক্রবার রাতে অনুষ্ঠিত নির্বাহী পরিষদের (এফইসি) সভায় এ হামলার তীব্র নিন্দা জানানো হয়। এছাড়াও জাতীয় প্রেস ক্লাবে বহিরাগত দুর্বৃত্তদের এ হামলাকে কাপুরুষোচিত, বর্বরোচিত ও ঘৃণ্য হিসেবে বর্ণনা করে এ ধরণের হিংস্র ও জঘন্য অপকর্মের বিরুদ্ধে সাংবাদিক সমাজকে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়। সভায় জানানো হয়, শুক্রবার সন্ধ্যায় বিএফইউজে’র নির্বাহী কমিটির কর্মকর্তা ও সারাদেশের অঙ্গ ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সভায় মিলিত হন। সেখান থেকে নৈশ ভোজের জন্য হোটেলের উদ্দেশ্যে বের হলে জাতীয় প্রেস ক্লাব ভবনের গাড়ি রাখার বারান্দায় আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা ভাড়াটে দুর্বৃত্তরা অতর্কিত শহীদুল ইসলামের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। বিএফইউজে নেতাদের প্রতিরোধের মুখে দুর্বৃত্তরা দৌঁড়ে ক্লাবের পশ্চিম পাশের গেট টপকে পালিয়ে যায়। এছাড়া বিএফইউজের নির্বাহী পরিষদের সভায় আমার দেশ, দিগন্ত টিভি, ইসলামিক টিভিসহ সব বন্ধ গণমাধ্যম অবিলম্বে খুলে দেয়া এবং বিএফইউজের সভাপতি বিশিষ্ট সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ ও আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের মুক্তির দাবি জানানো হয়েছে। এফইসির এ সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএফইউজে’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম আবদুল্লাহ। মহাসচিব এম এ আজিজের পরিচালনায় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন সহসভাপতি নুরুল আমিন রোকন, রেজাউল করীম রাজু, সহকারি মহাসচিব মির্জা সেলিম রেজা, সাংগঠনিক সম্পাদক শহীদুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক আবু ইউসুফ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, বিএফইউজের নির্বাহী সদস্য কবি কামার ফরিদ, ওবায়দুর রহমান শাহীন, আনোয়ারুল কবীর, খুলনা মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আনিসুজ্জমান, সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরের সাধারণ সম্পাদক এম আইয়ুব, সাংবাদিক ইউনিয়ন বগুড়ার সভাপতি সৈয়দ ফজলে রাব্বি ডলার, সাধারণ সম্পাদক মমিনুর রশীদ শাইন, সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজারের সভাপতি মুহাম্মদ নুরুল ইসলাম, কুমিল্লা জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শাহ আলম শফি, কুষ্টিয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি নজরুল ইসলাম মুকুল ও দিনাজপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. মাহফুজুল ইসলাম রিপন।
সভায় আগামী ২৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় বিএফইউজের দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিল ও নির্বাচনের প্রস্তুতি পর্যালোচনা করে কাউন্সিলর তালিকা সর্বসম্মতি ক্রমে অনুমোদন করা হয়। সভায় গৃহীত এক প্রস্তাবে বলা হয়, অধিকার রক্ষা ও ন্যায়সংগত দাবি আদায়ে সাংবাদিকদের ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু সে ঐক্য হতে হবে সমমর্যাদার ভিত্তিতে। ঐক্যের পূর্বশর্ত হতে হবে বন্ধ গণমাধ্যম অবিলম্বে খুলে দেয়া, মাহমুদুর রহমান ও শওকত মাহমুদসহ কারাবন্দি সব সাংবাদিক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বের মুক্তি, সাংবাদিক হত্যাণ্ড নিপীড়ন বন্ধ এবং স্বাধীন সাংবাদিকতার পথে অন্তরায় সৃষ্টিকারী সকল কালাকানুন বাতিল। এসব জ্বলন্ত ইস্যুকে পাশ কাটিয়ে ঐক্যের নামে ক্ষমতার উচ্ছ্বিষ্ট ভাগাভাগির অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কোনো প্রহসন সাংবাদিক সমাজ মেনে নেবে না বলে সভায় জানানো হয়। সভায় গৃহীত প্রস্তাবে জাতীয় প্রেস ক্লাবে অবৈধ দখলদারিত্বের পর সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ের ওপর সরকারের দোসরদের কালো থাবা বিস্তারের ঘৃণ্য অপচেষ্টার তীব্র নিন্দা, ক্ষোভ ও ধিক্কার জানানো হয়। সভায় অপর এক প্রস্তাবে সাংবাদিকদের জন্য নবম ওয়েজ বোর্ড গঠন, সাগর-রুণীসহ ২৫ জন সাংবাদিকের হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবি জানানো হয়েছে। গৃহীত আরেক প্রস্তাবে অনলাইন সংবাদপত্র পিআইডি’র মাধ্যমে নিবন্ধন গ্রহণের জন্য সরকারি নির্দেশনার প্রতিবাদ জানিয়ে বলা হয়, অবাধ তথ্য প্রবাহের এ যুগে তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর অনলাইন গণমাধ্যম নিবন্ধনের বাধ্যবাধকতা মুক্ত গণমাধ্যমের ওপর আরেকটি হস্তক্ষেপ।