বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৬:৪৮ অপরাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম: বাবা মায়ের ইচ্ছা ছিল ছেলে চিকিৎসক হবে। কিন্তু তার মন পড়ে থাকতো ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে। তাই ভর্তিও হয়ে গেলেন ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে। বলছিলাম মোহাম্মদ রাজু মিয়ার কথা। তিনি পড়ালেখা করছেন সিলেটের মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষে। পছন্দের বিষয়ে ভর্তি হয়ে শুরু করে দিলেন নানা ধরনের বৈজ্ঞানিক গবেষণা। সঙ্গে ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় ভাইদের অনুপ্রেরণা। তাদের উৎসাহে ‘মাইক্রোকন্ট্রোলার কোর্স’ করেন রাজু। এতে তার গবেষণা আরও গতি পায়। মাইক্রোকন্ট্রোলার হচ্ছে একধরনের প্রোগ্রামিং ভাষা, যা নানা ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ন্ত্রণের কাজে ব্যবহার করা হয়।
রাজুর তৈরি প্রথম প্রজেক্ট ‘প্রপেলার ডিসপ্লে’। ফ্যান বা পাখা ব্যবহার করে যে ডিসপ্লে তৈরি করা হয় তা-ই ‘প্রপেলার ডিসপ্লে’। এ ডিসপ্লেতে একটি প্রপেলার যুক্ত থাকে। এটি বাতাসের সাহায্যে ঘুরে তড়িৎ সংকেত সৃষ্টি করে। সংকেতের সাহায্যে পর্দায় নানা রকম ডিসপ্লে তৈরি হয়। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য রাজুর তৈরি করা অন্যতম সফল প্রজেক্ট হলো ‘অন্ধের রাস্তা’। এটি দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের চলাচলে সাহায্য করে। অল্প সময়ের মধ্যেই প্রজেক্টটি দাঁড় করিয়েছেন তিনি।
এখানেই শেষ নয়, রোবট নিয়েও রাজু গবেষণা করেছেন। খুলনা ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং টেকনোলজিতে (কুয়েট) অনুষ্ঠিত টেক ফেস্ট-২০১৬ রোবটিক প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন তিনি। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৬টি দলের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে তার তৈরি রোবট প্রথম স্থান অধিকার করে।
এছাড়াও ২০১৭ সালে থাইল্যান্ডে ‘গ্লোবাল সোশ্যাল ভেনচার কম্পিটিশন (জিএসভিসি)’-এর সেমিফাইনাল রাউন্ডে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন সিলেটের মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির রাজু মিয়া। বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ‘অন্ধের রাস্তা’ ডিভাইস চ্যাম্পিয়ন হয়। জিতে নেয় ১০ হাজার ইউএস ডলার।
রাজু মিয়া বলেন “আমি ইলেক্ট্রনিক্স খুব ভালবাসি এবং ইলেক্ট্রনিক্স নিয়ে থাকতে চাই।” রাজু মিয়ার অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল হিসেবে মেট্রপলিটন ইউনিভার্সিটি তাকে সম্মাননা প্রদান করে। এখন তিনি মেট্রপলিটন ইউনিভার্সিটির ইনোভেশন ল্যাব-২ এ কাজ করেন। বর্তমানে রাজু মিয়া মেডিক্যাল এর বিভিন্ন যন্ত্রপাতি নিয়ে কাজ করতেছেন, রাজু মিয়া বলেন “এমন কিছু তৈরির চেষ্টায় আছি যেটা মানুষের খুব উপকারে আসবে।”