বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:১৯ অপরাহ্ন
সাইফ উল্লাহ, বিশেষ প্রতিবেদক (সুনামগঞ্জ): হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধে রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয় রোধ এবং বাঁধের স্থায়ীত্ব বৃদ্ধির দাবিতে সুনাগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছে হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটি। বৃহস্পতিবার সংগঠনের সভাপতি অ্যাডভোকেট বজলুল মজিদ চৌধুরী খসরু ও সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায়ের নেতৃত্বে জেলা প্রশাসকরে কার্যালয়ে স্মরক লিপি প্রদান করা হয়।
স্মারক লিপিতে তারা উল্লেখ করেন, হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলন মনে করে সময়মত বাঁধের চুড়ান্ত অগ্রগতি প্রতিবেদন তৈরী করে রাষ্ট্রীয় অর্থ লোটপাট বন্ধ এবং বাঁধগুলোকে টেকসই করতে আপনার মাধ্যমে জনসচেতনতা সৃষ্টি এবং প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন।
তারা আরো বলেন, হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারের সময় অতিক্রান্ত হয়েছে প্রায় দেড় মাস পূর্বে। বাঁধ নির্মাণকালীণ সময়ে আমরা বার বার দাবি করেছি বাঁধে কমপেকশন (দুর্মুজ) করার জন্য। এখন পর্যন্ত অধিকাংশ বাঁধে ঘাস লাগানোর কোন আলামত লক্ষ্য করা যায়নি। বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারের বরাদ্দের সাথে দুর্মুজ ও ঘাস লাগানোর বরাদ্দও রয়েছে।
হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারের সময় অতিক্রান্ত হলেও এখন পর্যন্ত কোন বাঁধের চুড়ান্ত অগ্রগতি প্রতিবেদন তৈরী করা হয়নি। ইতোমধ্যে সুরমা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় দ্রুত কৃষকদের ধান কাটার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে। হাওরে যদি পানি প্রবেশ করে তাহলে কিভাবে বাঁধের কাজের চুড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরী করা হবে? এই ক্ষেত্রে কাল্পনিক বা ধারণা প্রসুত প্রতিবেদন তৈরী করে রাষ্ট্রীয় অর্থ লোটপারে সম্ভাবনায় আমরা উদ্ভিগ্ন। হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলনের পক্ষ থেকে আমরা দাবি করছি অনতিবিলম্বে বাঁধ নির্মাণ/সংস্কার, দুর্মুজ করা এবং ঘাস লাগানোর চুড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরী করে রাষ্ট্রীয় অর্থ অপচয়ের পথ বন্ধ করার জন্য।
আপনি অবগত আছেন যে, ফসল রক্ষার প্রয়োজনে হাওরে বাঁধ নির্মান করা হয়। আবার বর্ষায় হাওরবাসীর জীবন যাত্রার প্রয়োজনেই বাঁধ কেটে দিতে হয়। তবে ধান কাটা শেষে বৃষ্টি নামলে মাছ ধরার জন্য যত্রতত্র বাঁধ কাটার হিড়িক পড়ে যায়। হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলন মনে করে, বাঁধগুলোর স্থায়ীত্ব বাড়ানো এবং কেটে দেওয়ার ব্যাপারে জনসাধারণের মধ্যে স্থানীয় প্রশাসন এবং নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরে মাধ্যমে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা প্রয়োজন। হাওরবাসীয় যাতায়াতের স্বার্থে যেসব পথ দিয়ে নৌকা চলাচল করে সেসব পথে প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে বাঁধ কেটে দেওয়া যেতে পারে। ফলে সামগ্রিকভাবে বাঁধ টেকসই হবে এবং বহুবছর বাঁধগুলো দ্বারা হাওরের ফসল রক্ষা পাবে। এতে রাষ্ট্রীয় কোষাগারের কোটি কোটি টাকা অপচয় রোধ করা সম্ভব। ফলে আগামী মৌসুমে বাঁধ নির্মান ও মেরামতের নামে শত কোটি টাকার প্রয়োজন পড়বে না।
জেলা প্রশাসক স্মারক লিপি গ্রহণ করেন এবং এ বিষয়ে তাঁর বিভিন্ন প্রদক্ষেপের কথা নেতৃবৃন্দের সাথে শেয়ার করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলনের সহ সভাপতি চিত্ত রঞ্জন তালুকদার, অ্যাডভোকেট এনাম আহমেদ, অ্যাডভোকেট সবিতা চক্রবর্তী, যুগ্ম-সম্পাদক সালেহীন চৌধুরী শুভ, সাংগঠনিক সম্পাদক একে কুদরত পাশা, অ্যাডভোকেট সাজ্জাদ হোসেন প্রমূখ।