মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৩ পূর্বাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম ডেক্স : জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের ৩০ তম অধিবেশনের শুনানিতে এনফোর্সড অর ইনভলান্টারি ডিজাপেয়ারেন্সেস বিষয়ে যৌথ বিবৃতি প্রদান করেছে এশিয়ান লীগ্যাল রিসোর্স সেন্টার (এএলআরসি), এফআইডিএইচ ও এএফএডি। বাংলাদেশের জোরপূর্বক গুমের অব্যাহত ঘটনাগুলো অবিলম্বে বন্ধ করার বিষয়ে এ বিবৃতি দেয়া হয়। যৌথ ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ওয়ার্কিং গ্রুপ অন এনফোর্সড অর ইনভলান্টারি ডিজাপেয়ারেন্সেস’র কর্মকা-ের জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছে দ্য এশিয়ান লীগ্যাল রিসোর্স সেন্টার, এফআইডিএইচ ও এশিয়ান ফেডারেশন আগেনস্ট ইনভলান্টারি ডিজাপেয়ারেন্সেস। একই সঙ্গে বাংলাদেশে চলমান বলপূর্বক গুম, দায়মুক্তি এবং এ ধরনের অপরাধ কর্মকা-ের সঙ্গে সম্পর্কিত দমননীতির ব্যাপারে ওয়ার্কিং গ্রুপের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।
২০০৯ সালের জানুয়ারি ও ২০১৫ সালের আগস্ট মাসের মধ্যে মানবাধিকার সংগঠনগুলো বাংলাদেশে কমপক্ষে ২১২ জনের জোরপূর্বক গুমের ঘটনা নথিভুক্ত করেছে। এ ঘটনাগুলোতে বহু প্রত্যক্ষদর্শী আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রতিনিধিদের কাছে সাক্ষ্য দিয়েছেন। অপহরণের ধরন ও গুমের শিকার হওয়া ব্যক্তির প্রোফাইল ইঙ্গিত দিচ্ছে, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের কণ্ঠরোধ করতেই সরকার গুমের পথ বেছে নিচ্ছে। তথ্য সংগ্রহ বা ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য গুমের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারবর্গের প্রচেষ্টাকে উপেক্ষা করছে পুলিশ ও আদালতসমূহ।
সম্প্রতি পরিবারের গুম হওয়া প্রিয়জনদের নিয়ে স্মরণসভা আয়োজন করার প্রয়াসও বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে। বাক স্বাধীনতা ও সভা-সমাবেশের ওপর বাধানিষেধ আরোপ করা হয়েছে এবং গুম হওয়া ব্যক্তিদের আপনজনদের ভয়-ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছে। আমরা গুম হওয়া ব্যক্তিদের তাদের পরিবারে ফিরিয়ে দেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে এ ধরনের অপরাধ কর্মকা-সমূহের ঘটনায় পূর্ণাঙ্গ তদন্তের ব্যাপারে এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিতে তাদের দায়িত্ব পালনের ব্যাপারে তাগিদ জানাচ্ছি।
বাংলাদেশ স্বাক্ষরের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) রোম স্ট্যাচুর প্রতি দৃঢ় সমর্থন ব্যক্ত করেছে। সে কারণে দেশটি বৈধভাবে বলপূর্বক গুমকে আন্তর্জাতিক অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করে এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিতে বাধ্য। অধিকন্তু, ১৯৯২ সালের প্রোটেকশন অব অল পার্সন্স আগেনস্ট ইনভলান্টারি ডিজাপেয়ারেন্সেস-এর ঘোষণা অনুযায়ী, প্রতিটি রাষ্ট্রকে তার এখতিয়ারভুক্ত অঞ্চলের আওতায় থাকা যে কোন স্থানে জোরপূর্বক গুমের কর্মকা-সমূহ প্রতিরোধ করতে ও ইতি টানতে কার্যকর আইনগত, প্রশাসনিক, বিচারিক বা অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
বলপূর্বক গুম অবসানের চূড়ান্ত লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশ সরকার পুঙ্খানুপুঙ্খতদন্ত, বিচার প্রক্রিয়া ও দোষীদের শাস্তি প্রদানের বিষয়গুলো নিশ্চিতে দায়বদ্ধ। গুম হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারসমূহের অধিকার এবং মানবাধিকার কর্মীদের কথা বলা ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকারকে অবশ্যই শ্রদ্ধা ও সংরক্ষণ করতে হবে। আমরা ওয়ার্কিং গ্রুপকে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের কাছে দেশটি সফরের অনুরোধ জানাতে এবং বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে জরুরি ক্ষেত্রে এ ধরনের সফর অনুমোদনের আহ্বান জানাচ্ছি।