সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৫ পূর্বাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক: অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৭৯৮-৬৭৬৩০১
কোরআনে বর্ণিত গা শিউরে উঠা ভয়ঙ্কর কথা

কোরআনে বর্ণিত গা শিউরে উঠা ভয়ঙ্কর কথা

we296

আমার সুরমা ডটকম : মহান আল্লাহ তায়ালা মুসলমানদের উপর নামাজ ফরয করেছেন। ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা তাই নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে থাকেন। কিন্তু অনেক মানুষ নিজেকে মুসলমান দাবী করলেও নিয়মিত নামাজ আদায় করেন না। তবে তারা যদি নিচে উল্লেখিত কোরআন হাদিসের বর্ণনাগুলো একটু মন দিয়ে পড়েন তাহলে নিশ্চত ভাবে বলা যাবে- যে কোন নামাজহীন ব্যক্তির মনেও নামাজ কেন এতো দিন পড়েনে সেই প্রশ্নটি জাগবে জাহান্নামের আগুনের প্রখরতা এবং ধোঁয়ার আধিক্যঃ আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘আর বাম দিকের দল, কত হতভাগ্য বাম দিকের দল! তারা থাকবে তীব্র গরম হাওয়া এবং প্রচন্ড উত্তপ্ত পানিতে, আর প্রচন্ড কালো ধোঁয়ার ছাঁয়ায়, যা শীতলও নয়, সুখকরও নয়’। [সূরা ওয়াকি‘আহ: ৪১-৪৪]

অত্র আয়াত সমূহ থেকে প্রমাণিত হয় যে, আল্লাহ তাআলা ক্বিয়ামতের দিনের প্রচন্ড তাপ থেকে মানুষকে ঠান্ডা করবেন তিনটি বস্তু দ্বারা, তাহলো : (১) পানি, (২) বাতাস এবং (৩) ছাঁয়া, যার সামান্যটুকুও জাহান্নামীদেরকে দেয়া হবেনা।
❑ অতএব, জাহান্নামের বাতাস যা তার অধিবাসীদেরকে দেয়া হবে, তা প্রচন্ড গরম বাতাস। আর পানি যা পান করতে দেয়া হবে, তা প্রচন্ড গরম পানি। আর ছাঁয়া যা তাদেরকে আচ্ছাদন করে রাখবে, তা জাহান্নামের আগুন নিসৃত ধোঁয়ার ছাঁয়া। এগুলো জাহান্নামীদের কোন উপকারে আসবে না, বরং এগুলো তাদের অধিক শাস্তির কারণ হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘চল তিন শাখাবিশিষ্ট ছাঁয়ার দিকে, যে ছাঁয়া শীতল নহে এবং যা রক্ষা করে না অগ্নিশিখা হতে, উহা উৎক্ষেপ করবে বৃহৎ স্ফুলিংগ অট্টালিকাতুল্য, উহা পীতবর্ণ উষ্ট্রশ্রেণী সদৃশ’। [সূরা মুরসালাত: ৩০-৩৩]

অত্র আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা জাহান্নামের আগুন নিসৃত ধোঁয়ার তিনটি প্রকার উল্লেখ করেছেন, তাহলো:-
(১) ছাঁয়া সদৃশ ধোঁয়া যা শীতল করে না। (২) এই ধোঁয়া জ্বলন্ত অগ্নিশিখা থেকে রক্ষা করতে পারে না।
(৩) এই ধোঁয়া মোটা কালো উষ্ট্রি সদৃশ। আল্লাহ তা‘আলা জাহান্নামের আগুনের প্রখরতা উল্লেখ করে বলেন, ‘আমি তাকে নিক্ষেপ করব সাকার-এ, তুমি কি জান সাকার কি? উহা তাদেরকে জীবিতাবস্থায় রাখবে না এবং মৃত অবস্থায়ও ছেড়ে দেবে না, ইহা তো গাত্রচর্ম দগ্ধ করবে’। [সূরা মুদ্দাছছির: ২৬-২৯]

অতএব, জাহান্নামের আগুন জাহান্নামীদের সবকিছু খেয়ে ধ্বংস করে ফেলবে। তারা সেখানে না পারবে মরতে, না পারবে বাঁচতে। জাহান্নামীদের চামড়া-মাংস পুড়িয়ে হাড্ডি পর্যন্ত পৌঁছে যাবে এবং পেটের ভেতরের সবকিছু বের করে ফেলবে। জাহান্নামের আগুনের প্রখরতা সম্পর্কে হাদীছে এসেছে, আবু হুরায়রাহ (রা) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন, তোমাদের আগুন জাহান্নামের আগুনের সত্তোর ভাগের একভাগ মাত্র। বলা হল, হে আল্লাহর রাসূল! জাহান্নামীদেরকে শাস্তি দেওয়ার জন্য দুনিয়ার আগুনই তো যথেষ্ট ছিল। তিনি বললেন, দুনিয়ার আগুনের উপর জাহান্নামের আগুনের তাপ আরো উনসত্তর গুণ বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে, প্রত্যেক অংশে তার সমপরিমাণ উত্তাপ রয়েছে। [বুখারী- হা/৩২৬৫,মিশকাত- হা/৫৪২১]

আর জাহান্নামের আগুনের তাপ কখনো প্রশমিত হবেনা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘অতঃপর তোমরা আস্বাদ গ্রহণ কর, আমি তো তোমাদের শাস্তিই শুধু বৃদ্ধি করব’। [সূরা নাবা: ৩০] তিনি অন্যত্র বলেন, ‘যখনই উহা (জাহান্নামের আগুন) স্তিমিত হবে আমি তখনই তাদের জন্য অগ্নিশিখা বৃদ্ধি করে দেব’। [সূরা বানী ইসরাঈল: ৯৭]

যার কারণে জাহান্নামীরা কখনো সামান্যটুকু বিশ্রামের অবকাশ পাবে না এবং তাদের থেকে শাস্তির কিছুই কমানো হবে না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘সুতরাং তাদের শাস্তি লাঘব করা হবে না এবং তারা কোন সাহায্যপ্রাপ্ত হবে না’। [সূরা বাক্বারহা: ৮৬]

ইবনু উমার (রা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা)-এর বেশ কয়েকজন সাহাবী রাসূলুল্লাহ (সা)-এর যুগে স্বপ্ন দেখতেন। অতঃপর তাঁরা রাসূলুল্লাহ (সা)-এর কাছে তা বর্ণনা করতেন। আর রাসূলুল্লাহ (সা) এগুলোর ব্যাখ্যা দিতেন যা আল্লাহ ইচ্ছা করতেন। আমি তখন অল্প বয়সের যুবক। আর বিয়ের পূর্বে মসজিদই ছিল আমার ঘর। আমি মনে মনে নিজেকে সম্বোধন করে বললাম, যদি তোমার মধ্যে কোন কল্যাণ থাকত তাহলে তুমি তাঁদের মত স্বপ্ন দেখতে। আমি এক রাতে বিছানায় শুয়ে শুয়ে বললাম, হে আল্লাহ! আপনি যদি জানেন যে, আমার মধ্যে কোন কল্যাণ আছে তাহলে আমাকে কোন একটি স্বপ্ন দেখান। আমি ঐ অবস্থায়ই (ঘুমিয়ে) থাকলাম। দেখলাম আমার কাছে দু’জন ফেরেশতা এসেছেন। তাঁদের প্রত্যেকের হাতেই লোহার একটি করে হাতুড়ি। তারা আমাকে নিয়ে (জাহান্নামের দিকে) এগোচ্ছে। আর আমি তাঁদের দু’জনের মাঝে থেকে আল্লাহর কাছে দু’আ করছি, হে আল্লাহ! আমি জাহান্নাম থেকে আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করছি।

এরপর আমাকে দেখানো হল যে, একজন ফেরেশতা আমার কাছে এসেছেন। তাঁর হাতে লোহার একটি হাতুড়ি। সে আমাকে বলল, তোমার অবশ্যই কোন ভয় নেই। তুমি খুবই ভাল লোক, যদি অধিক করে ছালাত আদায় করতে! তাঁরা আমাকে নিয়ে চলল, অবশেষে তাঁরা আমাকে জাহান্নামের কিনারায় দাঁড় কারালেন, (যা দেখতে) কূপের মত গোল আকৃতির। আর কূপের মত এরও রয়েছে অনেক শিং। আর দু’শিং-এর মাঝখানে একজন ফেরেশতা, যার হাতে লোহার একটি হাতুড়ি। আর আমি এতে কিছু লোককে (জাহান্নামে) শিকল পরিহিত দেখলাম। তাদের মাথা ছিল নিচের দিকে। কুরাইশের এক ব্যক্তিকে সেখানে আমি চিনে ফেললাম। অতঃপর তারা আমাকে ডান দিকে নিয়ে ফিরল। এ ঘটনা (স্বপ্ন) আমি হাফছাহ (রা)-এর নিকট বর্ণনা করলাম। আর হাফছাহ (রা) তা রাসূলুল্লাহ (সা)-এর নিকট বর্ণনা করলেন, তখন রাসূলুল্লাহ (সা) বললেন, আব্দুল্লাহ তো নেককার লোক। নাফে’ (রহ) বলেন, এরপর থেকে তিনি সর্বদা অধিক করে (নফল) ছালাত আদায় করতেন। [বুখারী-হা/৭০২৮-৭০২৯, মুসলিম, হা/২৪৭৯।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com