বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১১:২৯ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক: অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৭৯৮-৬৭৬৩০১

রায়হান হত্যা: এসআই আকবরসহ ৫ পুলিশের বিরুদ্ধে চার্জশিট

আমার সুরমা ডটকম:

সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে নির্যাতনে রায়হান আহমদের মৃত্যুর ঘটনায় এসআই আকবরসহ ৫ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেছে তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

প্রায় সাত মাস পর বুধবার সকাল সোয়া ১১টায় সিলেটের আদালতে আলোচিত এ মামলার চার্জশিট দাখিল করা হয় বলে জানান পিবিআই সিলেট জেলা পুলিশ সুপার খালেদ-উজ-জামান।
অভিযোগপত্রে ফাঁড়ির ইনচার্জ সাময়িক বরখাস্ত উপপরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেনকে প্রধান করে ৫ পুলিশ সদস্য ও আকবরকে পালাতে সহযোগিতাকারী কোম্পানীগঞ্জের আব্দুল্লা আল নোমান নামের এক যুবকসহ ৬ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। নোমানের বিরুদ্ধে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির সিসিটিভির হার্ডডিস্ক বদল করার অভিযোগ রয়েছে।
অভিযুক্তরা হচ্ছেন, বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির তৎকালীন ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়া, টুআইসি এসআই হাসান আলী, এএসআই আশেকে এলাহী, কনস্টেবল হারুনুর রশিদ, কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাস ও আব্দুল্লাহ আল নোমান। এদের মধ্যে নোমান ছাড়া সবাই কারাগারে রয়েছেন।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে চার্জশিট দাখিলের খবরে খুশি রায়হানের মা সালমা বেগম। ছেলেকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান তিনি। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, দেরিতে হলেও মামলার চার্জশিট প্রস্তুতের খবরে তিনি খুশি। তিনি দ্রুত বিচারকাজ শুরু করে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান।
গত বছরের ১১ অক্টোবর ভোরে নগরীর আখালিয়ার এলাকার বাসিন্দা রায়হান আহমদকে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে এনে নির্যাতন করার অভিযোগ ওঠে ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভুঁইয়াসহ পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে। পরে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
ঘটনার পরদিন রাতে কোতোয়ালি মডেল থানায় পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনে মৃত্যু অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন নিহতের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার। ওইদিন ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবরসহ চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত এবং তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়।
আর ১৪ অক্টোবর পিবিআইকে আলোচিত এ মামলার তদন্তভার দেওয়া হয়। তদন্তভার পেয়ে ১৫ অক্টোবর কবর থেকে রায়হানের মরদেহ উত্তোলন করে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে পুনরায় ময়নাতদন্ত করা হয়। দুই দফার ময়নাতদন্তে রায়হানের দেহে ১১১টি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। এর মধ্যে ১৪টি আঘাত ছিল গুরুতর।
এই ঘটনায় দেশব্যাপী প্রতিবাদ ও নিন্দার ঝড় ওঠে। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের গ্রেপ্তারের দাবিতে গড়ে ওঠে আন্দোলন। চলে নানা কর্মসূচি। নিহত রায়হানের মা সালমা বেগম রাজপথে নামেন। বন্দর ফাঁড়ির সামনে কাফনের কাপড় মাথায় দিয়ে অনশন করে ছেলে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান তিনি।
এ নিয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশসহ আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীও বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে। সাময়িক বরখাস্তের পরপরই পুলিশ লাইন থেকে পালিয়ে যান মূল অভিযুক্ত এসআই আকবর। ২০ অক্টোবর ঘটনার তথ্য গোপন ও আকবরকে পালাতে সহায়তার অভিযোগে ফাঁড়ির টু-আইসি এসআই হাসানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
আর ঘটনার এক মাসের মাথায় ৯ নভেম্বর পলাতক ফাঁড়ি ইনচার্জ এসআই আকবরকে সিলেটের কানাইঘাটের সীমান্তবর্তী দনা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে জেলা পুলিশ। এরপর দিন তাকে পিবিআইর কাছে হস্তান্তর করা হয়। তাকেও দুই দফায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com