সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৫৪ অপরাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম:
দেশে হু হু করে বাড়ছে করোনাভাইরাসে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা। গতকাল মৃত্যু ও শনাক্তের হারে হয়েছে নতুন রেকর্ড। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৫৩ জন; এ মৃত্যু এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা ১৫ হাজারের দুঃখজনক মাইলফলক পেরিয়ে গেল। করোনাভাইরাসের ভারতীয় ডেল্টা ধরনের ব্যাপক বিস্তারের মধ্যে গত ২৬ জুন দেশে কোভিড আক্রান্তদের মধ্যে মৃতের সংখ্যা ১৪ হাজার অতিক্রম করে। সেই তালিকায় নতুন এক হাজার নাম যোগ হতে সময় লাগল মাত্র ৮ দিন। এর আগে গত ১ জুলাই ১৪৩ জনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছিলো স্বাস্থ্য অধিদফতর। এছাড়া গত একদিনে নতুন শনাক্ত হয়েছেন ৮ হাজার ৬৬১ জন। গতকাল রোববার স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। আর নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার ২৮ দশমিক ৯৯ শতাংশ। যা স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের ভাষায় সংক্রমণের হার ভয়াবহ পর্যায়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত ৮ হাজার ৬৬১ জনসহ দেশে এখন পর্যন্ত মোট শনাক্ত হয়েছেন ৯ লাখ ৪৪ হাজার ৯১৭ জন। আর মৃত্যু ১৫৩ জনসহ এখন পর্যন্ত মোট মৃত্যু হয়েছে ১৫ হাজার ৬৫ জনের। আর ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৪ হাজার ৬৯৮ জন এবং এখন পর্যন্ত মোট সুস্থ ৮ লাখ ৩৩ হাজার ৮৯৭ জন। উল্লেখ পরিসংখ্যার বুরে্যার সম্প্রতি ঘোষিত তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে জনসংখ্যা ১৮ কোটির কিছু কম। এই বিপুল সংখ্যক জনসংখ্যার দেশে প্রতিদিন করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হয় ৩০ হাজারের নীচে। ফলে নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের সংখ্যায় করোনায় আক্রান্ত বোঝা যায় না। তবে নমুনা পরীক্ষায় সংক্রমনের শতকরা হারে দেখা যায় পরিস্থিতি ভয়াবহ।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ২৯ হাজার ৩১৫টি। অ্যান্টিজেন টেস্টসহ নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ২৯ হাজার ৮৭৯টি। এখন পর্যন্ত ৬৭ লাখ ২৩ হাজার ৫৬০টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতর আরো জানায়, শনাক্ত বিবেচনায় গত ২৪ ঘণ্টায় প্রতি ১০০ নমুনায় ২৮ দশমিক ৯৯ শতাংশ। তবে এখন পর্যন্ত ১৪ দশমিক ০৫ শতাংশ শনাক্ত হয়েছে। শনাক্ত বিবেচনায় প্রতি ১০০ জনে সুস্থ হয়েছে ৮৮ দশমিক ২৫ শতাংশ এবং মারা গেছেন ১ দশমিক ৫৯ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ৯৬ জন পুরুষ এবং নারী ৫৭ জন। এখন পর্যন্ত পুরুষ ১০ হাজার ৬৭৬ জন এবং নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ৪ হাজার ৩৮৯ জন। বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায় যায়, ৬০ ঊর্ধ্ব ৭০ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৪৫ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ২৪ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ১১ জন এবং ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ৩ জন মারা গেছেন।
বিভাগ বিশ্লেষণে দেখা যায়, মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ৪৬ জন, চট্টগ্রামে ১৫ জন, রাজশাহীতে ১২ জন, খুলনায় ৫১ জন, বরিশালে ৩ জন, সিলেটে ২ জন, রংপুরে ১৫ জন এবং ময়মনসিংহে ৯ জন মারা গেছেন। ২৪ ঘণ্টায় সরকারি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন ১১৯ জন, বেসরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন ২২ জন এবং বাসায় মারা গেছেন ৯ জন এবং হাসপাতালে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে ৩ জনকে।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ২০২০ সালের ৮ মার্চ; তা ৯ লাখ পেরিয়ে যায় গত ২৯ জুন। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের বিস্তারের মধ্যে ৩০ জুন এক দিনে রেকর্ড ৮ হাজার ৮২২ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। রোববার তা ১৫ হাজার ছাড়ালো। একই দিনে রেকর্ড ১৫৩ মৃত্যুর খবর এল।
বিশ্বে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১৮ কোটি ৩৫ লাখ ছাড়িয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৩৯ লাখ ৭২ হাজারের বেশি মানুষের। তবে বিশ্বের অনেক দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমন নিয়ন্ত্রণ করেছে। টিকার দেয়ার মাধ্যতে তারা অদৃশ্য এই ভাইরাসের মোকাবিলা করে।