শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৫০ অপরাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম : আম বয়ানের মধ্য দিয়ে বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম ধর্মীয় সমাবেশ বিশ্ব ইজতেমা আগামীকাল শুক্রবার ফজর নামাজের পর শুরু হবে। তিন দিনব্যাপী বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্যায়ে আখেরী মোনাজাত আগামী ১০ জানুয়ারি রোববার অনুষ্ঠিত হবে। দ্বিতীয় পর্যায়ে ইজতেমা ১৫ জানুয়ারি শুরু হবে এবং আগামী ১৭ জানুয়ারি আখেরী মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। ইজতেমায় আগত মুসল্লীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন। ধর্মপ্রাণ মুসল্লীগণ ইতোমধ্যে ইজতেমাস্থলে আসতে শুরু করেছেন। তারা রেলপথ, সড়ক পথ, নৌপথ এবং অনেকে পায়ে হেঁটে ইজতেমাস্থলে আসছেন। ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান আজ বিশ্ব ইজতেমায় হামদর্দের একটি ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প উদ্বোধন করেছেন এবং রেলমন্ত্রী মজিবুল হক আজ টঙ্গী জংশনে মুসল্লীদের সার্বিক নিরাপত্তার ব্যবস্থাদী পরিদর্শন করেছেন।
বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন, জেলা প্রশাসন, র্যাব, পুলিশ, আনসার ও ভিডিপি ৫টি কন্ট্রোল রুম স্থাপন করেছে। ইজতেমায় আগত দেশি-বিদেশি মুসল্লীদের স্বাগত জানিয়ে ৮টি তোরণ, নিরাপত্তার জন্য র্যাবের ৯টি ও পুলিশের ৫টিসহ মোট ১৪টি ওয়াচ টাওয়ার, ইজতেমায় নিয়োজিত নিরাপত্তা সদস্যদের জন্য ১৫০টি অস্থায়ী টয়লেট নির্মাণ করা হয়েছে। ২০টি ফগার মেশিনের মাধ্যমে মশক নিধন কার্যক্রম গ্রহণ, ইজতেমা কর্তৃপক্ষের চাহিদা মোতাবেক ৭০ ড্রাম ব্লিচিং পাউডার সরবরাহসহ ইজতেমা চলাকালে ২০টি গার্বেজ ট্রাকের মাধ্যমে দিন-রাত বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম নিশ্চিত করা হয়েছে। কন্ট্রোল রুমসহ অন্যান্য স্থানে অস্থায়ীভাবে খুঁটি স্থাপনের মাধ্যমে ৪শ’টি বৈদ্যুতিক বাতির ব্যবস্থা করা, তুরাগ নদীতে নিরাপত্তার জন্য টঙ্গী ব্রিজ ও কামারপাড়া ব্রিজের নীচে দুই পার্শ্বে বাঁশ দিয়ে ২টি বেষ্টনী নির্মাণ করা হয়েছে। ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের চৌরাস্তা পর্যন্ত দুই পাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও রাস্তায় পার্কিং করা গাড়িসমূহ অপসারণ, ধূলাবালী নিয়ন্ত্রণের জন্য সার্বক্ষণিক পানি ছেটানোর ব্যবস্থা, রাস্তার দুই পাশে দেয়ালের অশ্লীল পোস্টার অপসারণ ও সিনেমা হলসমূহ সম্পূর্ণ বন্ধের ব্যবস্থা, বিভিন্ন স্থানে যোগাযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে ৬টি টেলিফোন লাইন ও ২টি হট লাইন স্থাপন, বিনামূল্যে চিকিৎসার জন্য কন্ট্রোল রুমের সামনে ৫৪টি চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র স্থাপনসহ বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে আগত বিদেশি মেহমানদের রান্নার কাজের জন্য ১২৫টি গ্যাসের চুলা স্থাপন কাজ সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে।
৫১তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম ধাপে ২৭টি খিত্তা এবং দ্বিতীয় ধাপে ২৯টি খিত্তা স্থাপন করা হয়েছে। দেশের ৩২টি জেলার ধর্মপ্রাণ মুসল্লীগণ ইজতেমায় অংশগ্রহণ করবেন। ইজতেমায় ১২টি উৎপাদক নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে। ১১ কিঃমিঃ পাইপ লাইনের মাধ্যমে প্রতিদিন ঘণ্টায় ৩ কোটি ৫০ লাখ গ্যালন সুপেয় পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।
ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, ইজতেমাস্থলে তাদের একটি কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। যেখানে সার্বক্ষণিক কর্মকর্তাসহ ফায়ারম্যানরা অবস্থান করছেন। ময়দানের প্রতি খিত্তায় ফায়ার এক্সস্টিংগুইসারসহ ফায়ারম্যান, গুদাম ঘর ও বিদেশি মেহমানখানা এলাকায় ৩টি পানিবাহী গাড়ি, ৩-সদস্যের ডুবুরী ইউনিট, ১টি স্ট্যান্ডবাই লাইটিং ইউনিট এবং ৫টি অ্যাম্বুলেন্স থাকবে।
ডেসকো কর্তৃপক্ষ জানান, ইজতেমা এলাকায় সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহের সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
গাজীপুর জেলা সির্ভিল সার্জন এম আলী হায়দার খান ও টঙ্গী সরকারি হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ পারভেজ আলম জানান, টঙ্গী সরকারি হাসপাতালে নিয়মিত শয্যা ছাড়াও অতিরিক্ত শয্যা বাড়িয়ে মুসল্লীদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ মেডিকেল অফিসারদের তালিকা ও ডিউটি রোস্টার করে চিকিৎসকদের সার্বক্ষণিক স্বাস্থ্য সেবা করার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। মুসল্লীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দিতে মন্নু গেইট, এটলাস গেইট, বাটা কারাখানার গেইট ও টঙ্গী হাসপাতালমাঠসহ ৬টি অস্থায়ী মেডিকেল ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। এখানে হৃদরোগ, অ্যাজমা, ট্রমা, বার্ণ, চক্ষু এবং ওআরটি কর্ণারসহ বিভিন্ন ইউনিটে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ চিকিৎসা দেবেন। রোগীদের হাসপাতালে নেয়ার জন্য সার্বক্ষণিক ১৪টি অ্যাম্বুলেন্স রাখা হয়েছে।
গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এস এম আলম জানান, বিশ্ব ইজতেমার সার্বিক কল্যাণে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়মিত বিশ্ব ইজতেমায় মনিটরিং করা হচ্ছে। সূত্র : শীর্ষ নিউজ