শুক্রবার, ০৪ Jul ২০২৫, ০৫:২৩ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক: অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৭৯৮-৬৭৬৩০১
সংবাদ শিরোনাম :
আবনায়ে ক্বাদিম সাকিতপুর মাদরাসার কমিটি গঠন সমাজ ও রাষ্ট্রের দুষ্টচক্রকে নির্মূল করে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে: বিভাগীয় কমিশনার খান মোঃ রেজা-উন-নবী সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা জমিয়তের প্রার্থী বাছাই সম্পন্ন সুনামগঞ্জ-৩ আসনে জমিয়তের হেভিওয়েট প্রার্থী হাফিজ মাওলানা সৈয়দ তামীম আহমদ দিরাই পৌরসভার বাজেট পেশ সুনামগঞ্জ সীমান্তে ভারতীয় মাদকের চালান আটক দিরাইয়ের সেনা বাহিনীর অভিযানে গ্রেফতার ৪, গুলিতে নিহত নিরীহ আবু সাইদ হেফাজতে ইসলাম মিডল‍্যান্ডস শাখা গঠন: সভাপতি মাওলানা এখলাছুর রহমান, সেক্রেটারী মাওলানা এনামুল হাসান সাবীর লন্ডন মহানগর জমিয়তের ঈদ পুনর্মিলনী ও কার্যনির্বাহি কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হত্যার হুমকির শিকার শান্তিগঞ্জ প্রেসক্লাব সদস্য, থানায় জিডি

অমর একুশে আজ

filennnnআমার সুরমা ডটকম : আজ অমর একুশে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। ১৯৫২ সালের আজকের দিনে মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার দাবিতে আমাদের তরুণ ছাত্র যুবকের রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল ঢাকার রাজপথ। তাদের সেই সংগ্রাম এবং আত্মত্যাগ জাতি হিসেবে আমাদেরকে আজ পৃথিবীর ইতিহাসে অবিস্মরণীয় করেছে। বাংলাদেশের সীমানা ছাড়িয়ে ২০০০ সাল থেকে প্রতি বছর একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে সারা বিশ্বে। আমাদের দেশে এটি শহীদ দিবস হিসেবে পরিচিত।
বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে আজ শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করা হবে ভাষা আন্দোলনে শহীদ সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিউরদের। শ্রদ্ধা জানানো হবে ভাষা আন্দোলনের উৎসপুরুষ ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, সংগঠক প্রফেসর আবুল কাসেম থেকে শুরু করে ভাষাসৈনিক মোহাম্মদ তোয়াহা, আব্দুল মতিন, গাজিউল হক, অলি আহাদ, শামসুল আলম, গোলাম মওলা, আব্দুল গফুর, আনোয়ারুল হক খান, আলী আজমল, ইব্রাহিম তাহাসহ ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী জানা-অজানা সবাইকে।
দেশের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, প্রতিটি শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষাশহীদদের শ্রদ্ধা জানানো হবে। প্রতিটি শহীদ মিনার ভরে উঠবে ফুলে ফুলে। অগণিত মানুষের ঢল নামে ঢাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। ঢাকার সব অলিগলি রাজপথ থেকে খালি পায়ে ফুল হাতে মানুষের মিছিল আজ ছুটবে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজসংলগ্ন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের দিকে। তাদের কণ্ঠে ধ্বনিত হবে ভাষাশহীদদের স্মরণে লেখা গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি/আমি কি ভুলিতে পারি’।
দিবসটি পালন উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ অন্য নেতৃবৃন্দ পৃথক বাণী দিয়েছেন।
রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি হরতালের ডাক দেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ। আলাদা কর্মসূচি গ্রহণ করে সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদও। হরতাল প্রতিহত করতে সরকার ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে এক মাসের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করে।
১৪৪ ধারা ভঙ্গ করা হবে কি না এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য ২০ ফেব্রুয়ারি বৈঠক বসে ভাষা আন্দোলনকারী নেতৃবৃন্দের মধ্যে। ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করা হবে কি না তা নিয়ে নেতৃবৃন্দের মধ্যে বিভক্তি দেখা দেয়।
২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমতলায় ছাত্রসমাবেশের কর্মসূচি ছিল। ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করা নিয়ে ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে ছাত্রনেতাদের মধ্যে বিভক্তি দেখা দেয়ায় শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত হয় পরদিন অর্থাৎ ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাবি আমতলার সমাবেশে এ বিষয়ে উপস্থিত ছাত্রদের মতামত নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
তবে রাতেই অনেক ছাত্রনেতা পরদিন ১৪৪ ধারা ভাঙার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তসহ প্রস্তুতি নিয়ে রাখেন।
২১ ফেব্রুয়ারি সকাল থেকেই ছাত্ররা আসতে থাকে আমতলায়। বেলা ১১টায় বিস্ফোরণোন্মুখ ছাত্র-যুবকদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। বক্তব্য রাখেন শামসুল হক, তোয়াহা, কাজী গোলাম মাহবুব, খালেক নওয়াজ চৌধুরী, শাহাবুদ্দীন আহমদ খালেদ, আব্দুল মতিন। ঘন্টাখানেক সভার কাজ চলার পর সভাপতির বক্তব্যে গাজিউল হক ১৪৪ ধারা ভাঙার পক্ষে মত দেন। এতে সম্মতি দেন উপস্থিত ছাত্র-জনতা।
পাঁচজন করে ছাত্র বের হলে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ হয়। ১০ জনের প্রথম গ্রুপের নেতৃত্ব দেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র আলী আজমল। তাকে প্রথম গ্রেফতার করা হয়। এভাবে দ্বিতীয় ১০ জনের গ্রুপটির নেতৃত্ব দেন ইসলামিক ভ্রাতৃসংঘের নেতা ইব্রাহিম তাহা ও আব্দুস সামাদ, তৃতীয় দলের নেতৃত্ব দেন আনোয়ারুল হক ও আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ। তাদের সবাইকে গ্রেফতার করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সব ছাত্রকে পুলিশ ঘেরাও করে রাখে।
বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে মেডিক্যাল কলেজ এলাকায় প্রথম ফাঁকাগুলি বর্ষণ করে পুলিশ। এতে ছাত্ররা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। বিকেল ৪টায় মেডিক্যাল কলেজ হোস্টেল প্রাঙ্গণে বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণে নিহত হন রফিকউদ্দিন আহমদ (তার নাম মুহম্মদ সালাহুদ্দীন নিয়ে বিভ্রান্তি আছে)। রাত ৮টার পর আহতদের মধ্যে মারা যান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবুল বরকত ও গফরগাঁওয়ের আব্দুল জব্বার। সাংবাদিক মোদাব্বের সে সময় ঢাকা মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন ছিলেন এবং একুশের ঘটনা জানতে পারেন। একুশের রাতে তিনি পুলিশের গাড়িতে ৯টি লাশ তুলতে দেখেছেন। ভাষা আন্দোলনের মুখপত্র সাপ্তাহিক সৈনিক পত্রিকায় আটজন নিহত হওয়ার খবর বলা হয় ২৩ ফেব্রুয়ারি। তবে পরে ইতিহাস অন্বেষণে ছয়জন শহীদের প্রকৃত নাম পরিচয় পাওয়া গেছে। ওপরে যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তারা বাদে বাকিরা হলেন ঢাকা হাইকোর্টের কর্মচারী শফিউর রহমান, নবাবপুর রোডের বাসিন্দা, সরকারি অফিসের পিওন আব্দুস সালাম।
রাষ্ট্রপতির বাণী : রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদ বলেছেন, অমর একুশের অবিনাশী চেতনা স্বাধিকার ও স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় অসীম প্রেরণা ও শক্তি জুগিয়েছে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশ্বের সব জাতিগোষ্ঠীর নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি রায় ঐক্য ও বিজয়ের প্রতীক হয়ে উঠবে।
শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘অমর একুশে ফেব্রুয়ারি, রক্তস্নাত ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিবহ মহান শহীদ দিবস। বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপিত হচ্ছে।’
এ উপলক্ষ্যে তিনি বাংলাভাষীসহ পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষাভাষী জাতিগোষ্ঠীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। সেই সাথে মহান ভাষা আন্দোলনে শহীদদের অম্লান স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।
প্রধানমন্ত্রীর বাণী : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব ভেদাভেদ ভুলে একুশের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে পবিত্র সংবিধান ও গণতন্ত্র এবং দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা সমুন্নত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আসুন, সব ভেদাভেদ ভুলে একুশের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হই। পবিত্র সংবিধান ও গণতন্ত্র এবং দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে সমুন্নত রাখি। দেশ ও জনগণের ভাগ্যোন্নয়নে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার শপথ নেই।’
প্রধানমন্ত্রী শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে গতকাল এক বাণীতে এ আহ্বান জানান। সূত্র : শীর্ষ নিউজ

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com