বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩৬ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার, সুনামগঞ্জ:
সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জে প্রেমিকের নিকট থেকে স্ত্রীর স্বীকৃতি না পেয়ে উল্টো শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়ে স্বামী পরিত্যক্তা সুলেখা বেগম (২৫) নামের এক মহিলা বিষপানে আত্মহত্যা করলেন। নিহত সুলেখা উপজেলার বাগহাটি গ্রামের রব মিয়ার মেয়ে।
নিহতের পরিবারের ওেলাকজনের অভিযোগ সুজিত পুরকায়স্থ নামের এক ব্যবসায়ী ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে অবৈধভাবে মেলামেশা পর স্ত্রীর স্বীকৃতি দাবি করলে উল্টো সুলেখাকে প্রকাশ্যে শারিরীক নির্যাতন করায় অপমান সইতে না পেরে বিষপানে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে প্রেমিকসহ দু’জনকে অভিযুক্ত করে নিহতের মামা হাসি খন্দকার বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
পুলিশ ও নিহতের পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, উপজেলার বাগহাটি গ্রামের রব মিয়ার স্বামী পরিত্যক্তা মেয়ে সুলেখার সাথে পার্শ্ববর্তী শরৎপুর গ্রামের মৃত সুরেন্দ্র পুরকায়স্থের বিবাহিত ছেলে সুজিত পুরকায়স্থ গত দু’বছর ধরে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। সুজিত নিজের সনাতন ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সুলেখার সাথে দিনের পরদিন অবৈধভাবে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তুলে।
এদিকে স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবি জানাতে সোমবার উপজেলার সাচনা বাজারে সুজিতের ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানে এসে চাপ দিলে সুজিত ও তার বড়ভাই শৈলেন পুরকায়স্থ দু’জন মিলে সুলেখাকে প্রকাশ্যে বেধরকভাবে মারপিট করে তাড়িয়ে দেয়। এ অপমাণ সইতে না পেরে সুলেখা মঙ্গলবার দুপুরের পর কোন এক সময় নিজ বাড়িতেই বিষপানে আত্মহত্যা করেন।
খবর পেয়ে থানা পুলিশ বিকেলে ঘটনাস্থলে গিয়ে সুরতহাল শেষে লাশ জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কথিত প্রেমিক সুজিত পুরকায়স্থ মঙ্গলবার রাতে বলেন, আমার সাথে সুলেখার কোন ধরণের সম্পর্ক ছিলনা, অহেতুক আমার ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানে এসে সোমবার আমাকে বিয়ের জন্য চাপ সৃষ্টি করলে উত্তেজিত হয়ে আমি ও আমার ভাই তাকে প্রতিষ্ঠানের সামনে থেকে তাড়িয়ে দিয়েছি, তাকে কোন রকম শারীরিক নির্যাতন করিনি।
জামালগঞ্জ থানার ওসি মো. আবুল হাশেম মঙ্গলবার রাতে মহিলার বিষপানে আত্মহত্যা ও মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে বললেন, প্রাথমিক তদন্তে আত্মহত্যার প্ররোচনার বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। তিনি আরো বলেন, অভিযুক্তদের গ্রেফতারে পুলিশি চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।