শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:১৮ অপরাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম : সংবাদ সম্মেলনে মহানগর পুলিশ কমিশনার কামরুল আহসান বলেন-আজ রাত ১০টা থেকে শুরু করে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আসামি কামরুল ইসলামকে আদালতে হাজির করা হবে। আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে ১০ জন আসামিকে আটক করেছি। স্বরাষ্ট্র এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ইন্টারপোলের মাধ্যমে সৌদিআরব থেকে কামরুলকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। এছাড়াও রাজন হত্যা মামলার পলাতক অপর দুই আসামি পাভেল ও শামীমকে গ্রেফতার করতে তৎপর রয়েছে পুলিশ। সিলেট সদর উপজেলার কুমারগাঁওয়ে নির্মামভাবে পিটিয়ে শিশু শেখ সামিউল আলম রাজন হত্যা মামলার প্রধান আসামি কামরুল ইসলামকে নিয়ে রাত ১০টায় সিলেটে পৌঁছায় পুলিশ। পরে কামরুল ইসলামকে কোতয়ালি থানায় প্রেরণ করে সিলেট নগরীর নাইওরপুলস্থ সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এক প্রশ্নের জবাবে কামরুল আহসান বলেন, যেহেতু রাজন হত্যা মামলায় কামরুলসহ আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়েছে, স্বাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে কামরুলের বিচার আদালতে সম্পন্ন হবে। বৃহস্পতিবার রাত ১০টা ৬ মিনিটের সময় মেট্রোপলিটন পুলিশের কার্যালয় থেকে কামরুলকে কোতয়ালি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সংবাদ সম্মেলনে মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার রুকন উদ্দিন, অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মো. রহমত উল্লাহসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। কামরুলকে দেশে ফিরিয়ে আনতে পুলিশ সদর দফতরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহাবুবুল করিম, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ ও সহকারী পুলিশ কমিশনার এএফএফ নেজাম উদ্দিন ১২ অক্টোবর সৌদিআরব যান।
উল্লেখ্য, গত ৮ জুলাই সিলেট নগরীর কুমারগাঁওয়ে চুরির অপবাদ দিয়ে ১৩ বছরের শিশু সামিউল আলম রাজনকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার ভিডিওচিত্র ছড়িয়ে পড়লে দেশ-বিদেশে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে। রাজনকে হত্যার পরপরই সৌদিআরব পালিয়ে যায় কামরুল ইসলাম। তাকে পালিয়ে যেতে সহযোগিতার অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত অধিকাংশ আসামিকে ধরে পুলিশের হাতে দেয় এলাকাবাসী। আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের পর রাজনের বাড়িতে গিয়ে সমবেদনা জানান সরকারের একাধিক মন্ত্রী ও এমপি। সাহায্যও করেন রাজনের পরিবারকে। সেই সঙ্গে সহযোগিতা করার জন্য এগিয়ে আসেন প্রবাসীসহ সিলেটের স্থানীয় বাসিন্দারাও। এমনকি মন্ত্রী ও এমপিরা আশ্বাস দেন দ্রুত হত্যা মামলার নিষ্পত্তির। ১৬ আগস্ট রাজন হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিলেট মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক সুরঞ্জিত তালুকদার ১৩ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন। চার্জশিটে সৌদিতে আটককৃত কামরুল ইসলাম, তার ভাই শামীম আহমদ এবং আরেক হোতা পাভেলকে পলাতক দেখানো হয়। আদালত ২৪ আগস্ট সোমবার চার্জশিট আমলে নেন। পরদিন, ২৫ আগস্ট পলাতক কামরুল ও শামীমের মালামাল ক্রোক করে নগরীর জালালাবাদ থানা পুলিশ। ৩১ আগস্ট সৌদিআরবে আটক কামরুলসহ পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেয়া হয়। পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সময়সীমার মধ্যে পলাতকরা আদালতে হাজির না হওয়ায় আদালত বিচারিক কাজ শুরুর লক্ষ্যে মামলাটি দায়রা জজ আদালতে স্থানান্তর করেন।