রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:২০ পূর্বাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম : ফেনীর পরশুরামে সৌদি প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে কথিত প্রেমের অভিনয় করে মোবাইল ফোনে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ধারণ করে ৮ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ সোনাগাজী উপজেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোতালেব চৌধুরী রবিনের বিরুদ্ধে। সূত্র জানায়, সৌদি প্রবাসী কাজি করিমের স্ত্রী মুক্তা (দুই সন্তানের জননী) পরশুরামের আলম স্টোরের মালিকের রেল লাইন সংলগ্ন ভাড়া বাসায় থাকত। বাড়ীর মালিকের ছোট মেয়ে ফেনী সরকারি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রীর সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতা রবিনের সম্পর্ক গড়ে উঠে। সেই সুবাদে রবিন পরশুরামের ওই কলেজ ছাত্রীর বাসায় নিয়মিত যাতায়াত করতো। যাতায়াতের একপর্যায়ে কলেজ ছাত্রীর বাসার অপর ভাড়াটিয়া প্রবাসী স্ত্রী মুক্তার সঙ্গেও ছাত্রলীগ নেতা রবিনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে উঠে। সম্পর্ক একপর্যায়ে ঘনিষ্ঠতায় পৌঁছায়। এরপর থেকে রবিন ওই বাসায় নিয়মিত যাতায়াত করতো। রবিনের সঙ্গে প্রবাসীর স্ত্রীর মুক্তার ঘনিষ্ঠতা হওয়ার সুবাধে প্রবাসীর স্ত্রীও রবিনের সঙ্গে ফেনীর বিভিন্ন জায়গায় নিয়মিত দেখা করতো। প্রবাসীর স্ত্রী মুক্তা অভিযোগ করেন, রবিন অন্য কলেজ ছাত্রীর সঙ্গে অন্তরঙ্গ কিছু ছবি কম্পিউটারে এডিটিং করে তার ছবির (প্রবাসীর স্ত্রী) সঙ্গে জোড়া দিয়ে তাকে ব্ল্যাকমেইল করে ভয়ভীতি দেখিয়ে এ পর্যন্ত তার কাছ থেকে একে একে সাড়ে ৮ লাখ টাকা নিয়ে গেছে। মুক্তা আরও জানান, মুক্তা পরশুরাম বাজারের হাসপাতাল মোড়ের রবি সেবা কেন্দ্রের আজাদ এর দোকানসহ বিভিন্ন বিকাশ এজেন্ট থেকে রবিনের কাছে টাকা পাঠাতো সে। গত ৩০ সেপ্টেম্বরে জনৈক হাসানের মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকা পাঠাতে গেলে ওই ব্যক্তি মুক্তার প্রবাসী স্বামী কাজি করিমকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিষয়টি জানিয়ে দেয়। বিষয়টি জানার পরই কাজি করিম গত ১ অক্টোবর কাউকে না বলে বৃহস্পতিবার গোপনে সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে চলে আসেন। আসার পর মুক্তার স্বামী কাজি করিম গত রোববার সকালে ব্যাংকে গিয়ে দেখেন তার একাউন্টে বিদেশ থেকে পাঠানো সাড়ে ১৩ লাখ তুলে নেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে স্ত্রী মুক্তার কাছে ব্যাংকে জমা থাকা টাকার বিষয়টি জানতে চায় স্বামী কাজি করিম। মুক্তা প্রথমে পরকীয়া প্রেমিক রবিনের বিষয়ে স্বামীকে ভয়ভীতি দেখাতে থাকে। পরে করিম ও তার ভাই সেলিম বিষয়টি উপজেলা যুবলীগ সভাপতি ইয়াছিন শরীফ মজুমদার, সাধারণ সম্পাদক সফিকুল হোসেন মহিম, সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক এনামকে বিষয়টি জানান। পরে ওইদিন রাতেই কাজি করিম বাদী হয়ে পরশুরাম মডেল থানায় স্ত্রী মুক্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলায় করিম বিদেশ থেকে পাঠানো সাড়ে ১৩ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করেন স্ত্রী মুক্তার বিরুদ্ধে। পরদিন যুবলীগ নেতাসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ নিয়ে বৈঠকে বসলে আগামী ৩০ অক্টোবরের মধ্যে সাড়ে ১৩ লাখ টাকা পরিশোধ করবে বলে লিখিত স্বীকারোক্তি নিয়ে মুক্তাকে তার পিতার জিম্মায় পাঠিয়ে দেন। পরশুরাম থানার এসআই সফিক জানান, মুক্তা তার জবানবন্দিতে বলেছেন, সোনাগাজী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রবিন তার অশ্লীল ছবি ধারণ করে তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে সাড়ে আট লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। মুক্তা রবিনের কাছে বিকাশের মাধ্যমে সব টাকা পাঠিয়েছে বলে পুলিশকে জানিয়েছে। এ প্রসঙ্গে বক্তব্য জানতে সোনাগাজী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোতালেব চৌধুরী রবিনকে মঙ্গলবার রাতে তার মোবাইল ফোন নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।