সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:১৩ পূর্বাহ্ন
এমএম ইলিয়াছ আলী, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা যুবলীগ সভাপতি এ্যাডভোকেট বোরহান উদ্দিন দোলন বলেন, অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী জননেতা এমএ মান্নান সুনামগঞ্জের সন্তান এবং স্বজ্জন রাজনীতিবিদ। আওয়ামীলীগের জেলা সভাপতি হয়ে সরকার দলীয় একজন রাজনীতিবিদ এমএ মান্নানকে উদ্দেশ্যে করে যে কটুক্তি করেছেন, তা মূর্খতা ছাড়া আর কিছুই নয়। তিনিতো সুনামগঞ্জের মানুষকে ভালবাসেন না। তিনি এসেছিলেন ময়মনসিংহ থেকে। তিনি আওয়ামীলীগ সরকারে থেকে লুঠেপুটে খেয়েছেন, কন্ট্রাক্টারী করেছেন, বিভিন্ন জায়গা থেকে ট্যাক্স নিয়েছেন। স্বাধীনতার পর আওয়ামীলীগ সরকার যখন ক্ষমতায় আসে ঐ মতিউর রহমান সাহেব ১৯৭১ সালে ঢাকায় বিহারীদের বাসা বাড়ি দখল করেছিলেন। তিনি আরো বলেন, একই লোক বার বার ভূল করে যাচ্ছে। আমাদের সুনামগঞ্জের সন্তান, যিনি সুনামের সাথে বর্তমান সরকারের অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর মতো ব্যক্তিকে উড়ে এসে জুড়ে বসে কুৎসা রটাচ্ছেন মতিউর রহমান সাহেবের মতো ব্যক্তিরা। বর্তমান সরকার ও দলের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করছেন। সুনামগঞ্জবাসির সম্মান নষ্ট করেছেন। মঙ্গলবার বিকাল ৫টায় বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী প্রতিবাদ সভায় বক্তারা উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
সুনামগঞ্জের নাগরিক সংবর্ধনায় জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মতিউর রহমানকে উদ্দেশ্যে করে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি প্রভাষক নুর হোসেন বলেন, জেলা পরিষদ নির্বাচনে যিনি দলের সুনামগঞ্জ জেলা সভাপতি পদে থেকেও দলের বিরুদ্ধে অন্য প্রার্থীকে বিজয়ী করেছেন। এটা সবাই জানে। সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সম্মানিত পদে থেকে তিনি সরকারের মন্ত্রীর বিরুদ্ধে যে বক্তব্য দিয়েছেন সুনামগঞ্জবাসি আমরা খুবই মর্মাহত। উনার বক্তব্যে আমাদের প্রাণের সংগঠন, স্বাধীনতার সংগঠন, একুশের চেতনায় বিশ^াসী সংগঠনের বাংলাদেশ আওয়ামীলীগকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। সুনামগঞ্জ মতিউর রহমান তার বক্তব্যে বলেছেন, বিগত ৫ জানুয়ারির নিবার্চনে আমাদের প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়েছিলেন। কিন্তু জেলা সভাপতি বলেছেন, ঐ সময় নাকি এমএ মান্নান পরাজিত হয়েছিলেন। জেলা প্রশাসক ইয়ামিন চৌধুরী বিজয়ী ঘোষনা করেছিলেন। উনার বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগকে কলুষিত করেছেন। আওময়াীলীগের বিরুদ্ধে বক্তেব্য দিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার সুনামগঞ্জের আওয়ামলীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের প্রাণের দাবী এ ধরণের মন্তব্যের জন্য জেলা সভাপতির পদত্যাগ দাবি করছি। তিনি আরো বলেন, অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী জননেতা এমএ মান্নান নাকি সামাদ আজাদের নাবালক ছেলের কাছে পরাজিত হয়েছিলেন। বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন করতে হলে ন্যূনতম ২৫ বছর বয়স লাগে। সামাদ আজাদের ছেলে যদি নাবালক হন তাহলে উনার সাথে নির্বাচন কিসের। উনারতো ভোটই নাই। তাই আমি বলবো, বয়সের ভারে মস্তিষ্ক কোন কাজ করে না মতিউর রহমান সাহেব উল্টাপাল্টা বলছেন। দায়িত্বশীল পদে থেকে এ ধরণের কথাবার্তা বলা পাগললের প্রলাপ ছাড়া আর কিছুই না। সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি, তিনি আমাদের বয়োজৈষ্ঠ্য ব্যক্তি, পিতৃ সমতুল্য। উনার সম্পর্কে আর কোন সমালোচনা করতে চাইনা। কিন্তু উনি যে বক্তব্যে দিয়েছেন তা অগণতান্ত্রিক, অসংবিধানিক, সংবিধানকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। তাই উনার বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাই।
সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মতিউর রহমানকে উদ্দেশ্যে করেন উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি রিপন তালুকদার বলেন, এমএ মান্নান একজন ভাল মানুষ। তিনি সুনামগঞ্জের সুনাম। মাটি ও মানুষের সাথে যিনি মিশে আছেন। এমএ মান্নানকে কটাক্ক করে কথা বলা মানে, সুনামগঞ্জবাসিকে কটাক্ষ করে কথা বলা। এমএ মান্নানকে নিয়ে যিনি কুৎসা রটাচ্ছেন তিনি সুনামগঞ্জের মানুষ নন। তিনি ময়মনসিংহের মানুষ। তাই সুনামগঞ্জের মানুষকে ভালবাসেন না। যদি সুনামগঞ্জের মানুষকে ভালবাসতেন, তাহলে সুনামগঞ্জ তথা সিলেট বিভাগের একজন কৃতি সন্তানকে কটাক্ষ করে এই ধরণের মন্তব্যে করতেন না। তাই আমি তার এ ধরণের বক্তব্যের তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছি। জেলা সভাপতি মতিউর রহমানকে উদ্দেশ্যে করে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মনিরুজ্জামান সুজন বলেন, এমএ মন্নান একজন সাদা মনের মানুষ। তাকে নিয়ে সুনামগঞ্জ জেলা সভাপতি মতিউর রহমান যে মন্তব্য করেছেন আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। জেলা সভাপতি মতিউর রহমান একজন অপদার্থ লোক। তার প্রসঙ্গে বললে অনেক কিছু বলা যাবে। আমি দু’একটি কথা বলতে চাই, বাবু সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত যখন সুনামগঞ্জে রেল মন্ত্রী হয়ে এসেছিলেন তখন উনাকে সংবর্ধনা দেয়া হয়েছিল। সেই সংবর্ধনায় মতিউর রহমান সাহেবও উপস্থিত ছিলেন। সেই মতিউর রহমানকে উদ্দেশ্যে করে নবনির্বাচিত জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মুকুট বলেছিলেন মতিউর রহমান সাহেব উপ-নির্বাচনে সংসদ সদস্য হওয়ার পর সুরমার পশ্চিমপাড়ে যেন নেতৃবৃন্দ যেতে পারবেন না। মানুষজন নেতৃবৃন্দকে দেখলে ঝাড়– পেটার জন্য প্রস্তুত থাকে। মতিউর রহমান সাহেব বিভিন্ন সভায় বলে থাকেন, তিনি দুই বছরে যা করেছেন তা নাকি আর কোন সংসদ সদস্য করে পারেন নি। উনাকে হুসিয়ার করে দিতে চাই আর কোনদিন জননেতা এম এ মান্নানের বিরুদ্ধে এ ধরণের বক্তব্য দেন, তাহলে এর প্রতিফলন তাকেই ভোগ করতে হবে।
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের তাৎক্ষণিক উদ্যোগে আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগসহ অঙ্গ সংগঠনের সহযোগিতায় আয়োজিত এমএ মান্নানের বিরুদ্ধে অশোভন বক্তব্যের প্রতিবাদে উপজেলার শান্তিগঞ্জ বাজারে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা যুবলীগ সভাপতি এ্যাডভোকেট বোরহান উদ্দিন দোলনের সভাপতিত্বে জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি মতিউর রহমানের বক্তব্যের প্রতিবাদে সভায় বক্তব্য রাখেন দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি প্রভাষক নূর হোসেন, সহ-সভাপতি রিপন তালুকদার, জুবেল আহমদ, রাজা মিয়া, মনোজ ভট্টাচার্য, সাধারণ সম্পাদক মোঃ মনিরুজ্জামান সুজন, যুগ্ম-সাধারণ সাধারণ সম্পাদক লিয়াকত আলী, সহ-সম্পাদক জুসেন আহমদ, সাংগঠনিক সম্পাদক কেশব দেব, খালিদুর রহমান বাবুল, শাহীনূর রহমান শাহীন, প্রচার সম্পাদক জিল্লুল হক জিলু, শিক্ষা প্রশিক্ষণ ও পাঠাগার বিষয়ক সম্পাদক মোঃ শহীদ মিয়া, উপ-প্রচার সম্পাদক মতিউর রহমান, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক রোশন আলী মেম্বার, স্বাস্থ্য সম্পাদক মিজানুর রহমান, উপজেলা যুবলীগের সদস্য বদরুল ইসলাম মেম্বার, জয়কলস ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন মেম্বার, যুগ্ম-আহ্বায়ক আবুল হোসেন, সাইফুল ইসলাম, বীরগাঁও ইউনিয়ন যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক তৈয়বুল ইসলাম, সাবেক যুবলীগ নেতা মাসুক মিয়া, সৈয়দ হোসেন জায়গীরদার রানা, জয়ন্ত তালুকদার পুল্টন, স্বেচ্ছাসেবকলীগ সহ-সভাপতি নূর হোসেন, জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ কামরুল ইসলাম শিপন, উপজলা ছাত্রলীগ নেতা ছদরুল ইসলাম, রয়েল আহমদ, আলী শাহান, শাহান আহমদ, জাহিদুল ইসলাম, জাবেদ হোসেন, দিলন আহমদ প্রমুখ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান এমপির ব্যক্তিগত কর্মকর্তা হাসনাত হোসেন, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি হাজী তহুর আলী, জয়কলস ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুদ মিয়া, পশ্চিম পাগলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ নূরুল হক, দর্গাপাশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনির উদ্দীন, সাধারণ স¤পাদক আতাউর রহমান, সাংগঠনিক স¤পাদক আব্দুল বাছিত সুজন, আওয়ামীলীগ নেতা জিএম সাজ্জাদুর রহমান, উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি মোঃ ফয়জুর রহমান, উপজেলা তরিকত ফেডারেশনের সভাপতি আব্দুল গণি ভান্ডারী।