মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:২৮ অপরাহ্ন
দিরাই (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে জলমহালের দখল নিয়ে মৎস্যজীবিদের সাথে স্থানীয় সন্ত্রাসী বাহিনীর সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিরীহ তিনজনের প্রাণহানির ঘটনায় জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক ও আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দকে মিথ্যা ও হয়রানীমূলক মামলায় জড়ানোর প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে দিরাই উপজেলা আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সংঘটনের নেতৃবৃন্দ। শনিবার সন্ধ্যায় স্থানীয় আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে স্থানীয় সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আছাব উদ্দিন সরদার। সংবাদ সম্মেলন শেষে আওয়ামীলীগ কার্যালয় থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি পৌর সদরের সবকটি সড়ক প্রদক্ষিণ করে থানা পয়েন্টে এসে পথসভায় মিলিত হয়। আওয়ামীলীগ সভাপতি আছাব উদ্দিন সরদারের সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট অভিরাম তালুকদারের পরিচালনায় পথসভায় বক্তব্য রাখেন সহ-সভাপতি সিরাজ উদদৌলা তালুকদার, আওয়ামীলীগ নেতা মজর উদ্দিন মিয়া, মাজু মিয়া, মতিউর রহমান মতি, মোশাহিদ মিয়া, সরবিন্দু দাস, প্যানেল মেয়র বিশ্বজিৎ রায়, পৌর কাউন্সিলর এবিএম মাসুম প্রদীপ, মফিজুর রহমান জুয়েল, সবুজ মিয়া, সুয়েল চৌধুরী, ইউপি চেয়ারম্যান শিবলী আহমেদ বেগ, রেজুয়ান খান, যুবলীগ নেতা আব্দুল হক মিয়া, কলিম উদ্দিন, লালন মিয়া, মোহন চৌধুরী, জুয়েল মিয়া, হাসান চৌধুরী, স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায়, ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সায়েল চৌধুরী প্রমুখ। বক্তারা বলেন, গত ১৭ জানুয়ারি হাওর জনপদের কুখ্যাত সন্ত্রাসী একরার ও তার ছোট ভাই সিলেটের ছাত্রদল ক্যাডার বদরুল ইসলাম আজাদের নেতৃত্বে একটি সশস্ত্র বাহিনী কর্তৃক ঘোড়ামার সাতপাকিয়া জলমহাল দখল করতে গেলে মৎস্যজীবিদের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিরীহ তিনজন লোকের প্রাণহানি হয়। এ প্রাণহানিকে কেন্দ্র করে একরার তার অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে দিরাই থানায় উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রায়, পৌরসভার মেয়র মোশাররফ মিয়া, উপজেলা চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান তালুকদারকে আসামী করে মামলা দায়ের করে। অথচ এ ঘটনার সাথে তাদের আদৌ কোন সম্পৃক্ততা নেই। ঘটনার দিন প্রদীপ রায় ঢাকায়, মেয়র পৌর অফিসে ও উপজেলা চেয়ারম্যান নিজ কার্যালয়ে অফিসিয়াল কাজে এবং উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক দলীয় কার্যালয়ে ছাত্রলীগের মিটিংয়ে ছিলেন। উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে মিথ্যা মামলা দায়েরের মাধ্যমে সে মামলা বাণিজ্যে লিপ্ত হয়েছে। সিলেটের ছাত্রদল ক্যাডার একাধিক ছিনতাই মামলার আসামী তার ভাই বদরুল আজাদ রানা ২০১৪ সালে ছিনতাই মামলায় জেল খেটেছেন। রানা সিলেট ছাত্রদলের আর্মস ক্যাডার। রানার নেতৃত্বেই মঙ্গলবার জলমহাল ট্রাজেডির ঘটনা ঘটে। তার বড় ভাই কামিল শিবিরের সক্রিয় কর্মী ছিল। জামায়েতের পুষ্ঠপোষকতায় সে বিভিন্ন ব্যবসা বাণিজ্য করে অর্থের পাহাড় ঘরে তুলে। সে বর্তমানে যুক্তরাজ্যে বসবাস করলেও জঙ্গি কানেকশনের মাধ্যমে সে অর্থের যোগান দিচ্ছে। ঘটনার দিন সকাল বেলা একরার তার বাহিনীর লোকজন নিয়ে আকিলনগর গ্রামের নিরীহ লোকজনকে ডেকে আনেন। এরপর অন্তত দেড় দুইশত লোক নিয়ে জলমহাল দখলের উদ্যেশে রওয়ানা হন। একরারের এই উদ্দেশ্য তার বাহিনীর লোক ছাড়া গ্রামের সাধারণ মানুষ জানতেন না, একপর্যায়ে ইজারাদার কর্তৃক নির্মিত খলাঘরের দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে খলাঘরে থাকা প্রতিপক্ষ ধনঞ্জয় দাসের লোকজন খলাঘর থেকে বের হয়ে তাদের বাঁধা দিলে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই এবং অবিলম্বে এ ষড়যন্ত্রমূলক মামলা থেকে রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক ও জনপ্রতিনিধিবৃন্দের নাম প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।