বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪১ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার, জামালগঞ্জ (সুনামগঞ্জ): সুনামগঞ্জ জেলার বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে দু’টি অঞ্চলে বিভক্ত হয়ে চলছে রমরমা ভেজাল ঔষধের ব্যবসা। সরেজমিন দেখা যায়, ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে বিভিন্ন হাট, বাজার ও পয়েন্টে ফার্মেসী নামক হাতুরে ডাক্তারের চেম্বার। একদিকে ভারতীয় সীমান্তবর্তী পাহাড়ি এলাকা, অন্যদিকে হাওরাঞ্চল বেষ্টিত এ প্রত্যান্ত অঞ্চলের সদরেরর সাথে অনেকটা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। বিশ^ম্ভরপুর উপজেলার প্রায় ১ লক্ষ ৭৫ হাজার জনগোষ্ঠির একটি মাত্র ২৫ শয্যা হাসপাতালে ডাক্তার নেই বললেই চলে। অন্যদিকে এ অঞ্চলের শিক্ষার হারও অনেকটা কম থাকায় সচেতনতার অভাবে বাধ্য হয়েই গ্রাম্য ডাক্তারদের নির্ভরশীল হতে দেখা যায় নি¤œবিত্ত ও মধ্যবিত্ত লোকদের। উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে ৬টি স্বাস্থ্য কেন্দ্র থাকলেও ডাক্তারের দেখা মেলেনি কোন সময়ই বলে অভিযোগ সাধারণ মানুষের। তাই অপারগ হয়ে এসব নাম না জানা কোম্পানীর ঔষধ খেয়ে রোগমুক্ত তো হচ্ছেই না, বরং ব্যাধি আরও চরম আকার ধারণ করে তিলে তিলে রোগাক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে। বিশেষ করে উপজেলার সীমান্তবর্তী মথুরকান্দি বাজার, জিগাতলা পয়েন্ট, মাছিমপুর বাজার, স্বরূপগঞ্জ বাজার, আনন্দ বাজার, কাটাখালী বাজার, বসন্তপুর বাজার, মিয়ারচর বাজার, ভাদেরটেক বাজার, মুজিববাজার, ঝিনারপুর বাজার, বাঘবেড় বাজার ইত্যাদি এলাকা এবং হাওরাঞ্চলের সাতগাও নতুনবাজার, রঙ্গারচর চৌরাস্তার পয়েন্ট, ফতেপুর বাজার, নিয়ামতপুর বাজার ইত্যাদি পয়েন্টে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে ফার্মেসী নামক গ্রাম্য ডাক্তারদের চেম্বার। এসব ফার্মেসীতে বৈধ কোম্পানীর ঔষদের চেয়ে নাম না জানা কোম্পানীর ঔষধ বিক্রিতে লাভ বেশি হওয়ায় এদিকেই ঝুঁকছে ফার্মেসীর মালিকরা। এমনকি তাদের দোকানের ফার্মেসী ব্যবসার বৈধতা কতটুকু তা কর্তৃপক্ষই জানেন। কারণ বিরল চিকিৎসার ঔষধও মেলছে এসব দোকানে, থাকছে নানা নেশা জাতীয় ও সেক্স এর ঔষধ। যা সেবনে যুব সমাজকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়ে দেশকে নিয়ে যাচ্ছে অসুস্থ এক জাতির দেশে। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় জাতির জীবন আজ সংকটাপন্ন। এ ব্যপারে বিশ^ম্ভরপুর উপজেলার গ্রাম ডাক্তার সমিতির সভাপতি সৈয়দ আহমদ জানান, যারা ভেজাল ঔষধ বিক্রি করে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা খুবই জরুরী এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা ছাড়াই ফার্মেসী ব্যবসায়ি হওয়ায় তাদের কাছে সাধারণ মানুষের জীবন মরনের কোন মূল্যই নেই। আমরা অনেক নিয়ম করেও কোন প্রতিকার পাইনি, বরং তাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করা প্রায় অসম্ভব। এ ব্যাপারে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ জানান, ঔষধ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যা আমাদের সতর্কতা ও সচেতনার সাথে সরবরাহ করা জরুরী। আর ভেজাল ঔষধের বিরুদ্ধে আমার অবস্থান ছিল সব সময় কঠোর, এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া সুলতানা জানান, যারা সাধারণ জনগণকে সহজ-সরল ভেবে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে এ সমস্ত কার্যক্রম চালাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।