মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:৪২ অপরাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম : বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে গমনেচ্ছু হজ যাত্রীদের সমস্যা যেন একেবারেই পিছু ছাড়ছে না। একের পর এক জটিলতা লেগেই আছে। এবার ই-ভিসা জটিলতার কারণে প্রায় অর্ধেক হজ যাত্রীর নির্দিষ্ট সময়ে সৌদি আরব পৌঁছা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। অনলাইনে ভিসা আবেদন করার সময় ছবি ও ভিসাসংক্রান্ত তথ্য পূরণে ত্রুটি হওয়ায় প্রায় অর্ধেক হজযাত্রীর পাসপোর্টে সৌদি ভিসা লাগেনি। এ জন্য অনেকেই নির্দিষ্ট সময়ে হে যেতে পারছেন না। দেখা গেছে, একই পরিবারের দুই জন ভিসার আবেদন করলেও ই-ভিসা জটিলতার কারণে একজনের ভিসা লেগেছে আর অন্যজনের পাসপোর্টে ভিসা না দিয়ে ফেরত পাঠানো হয়েছে। আবার অসুস্থ মায়ের সঙ্গে যাওয়ার জন্য ছেলে আবেদন করলেও ছেলের পাসপোর্টে ভিসা লেগেছে কিন্তু মায়েরটাতে ভিসা লাগেনি। এ কারণে রোববার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের হজ ফ্লাইট শুরুর সময় অনেক যাত্রী যেতে পারেননি। ফ্লাইট খালি থাকায় তিন-চার দিন পরে যাঁদের যাওয়ার কথা, তাঁদের গতকালই পাঠানো হয়েছে। এভাবে যাত্রী পূর্ণ করে রোববার সকালে চার শতাধিক হজযাত্রী নিয়ে বিমানের প্রথম হজ ফ্লাইট জেদ্দার উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছে।
সৌদি কর্তৃপক্ষ নির্দিষ্ট সময়ে ভিসা দিতে না পারলে একই পরিবারের সদস্যদের আলাদা ফ্লাইটে যেতে হবে। অনেক যাত্রী হজে যেতে পারবে না। হাজিদের দ্বিগুণ বিমান ভাড়া দিতে হবে এবং সরকারের পাঁচ কোটি টাকার বেশি ক্ষতির আশঙ্কা সরকারের। এ অবস্থায় হজযাত্রীদের তাড়াতাড়ি ভিসা দিতে সৌদি সরকারকে অনুরোধ করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। গতকাল ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে সৌদি দূতাবাসে চিঠি পাঠানো হয়। প্রসঙ্গত, এ বছরই প্রথম হজে যাওয়ার জন্য অনলাইনে ভিসার আবেদন বা ই-ভিসা চালু করা হয়।
ধর্মসচিব চৌধুরী মো. বাবুল হাসান বলেছেন ‘সৌদি দূতাবাস আমাদের অসহযোগিতা করেছে। গতকালও প্রায় আড়াই শ পাসপোর্টে ভিসা না দিয়ে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে বেশির ভাগ সরকারি কর্মকর্তা ভিসা পাননি।’ সচিব জানান, গতকাল হজ ফ্লাইট খালি যাচ্ছিল। যাঁদের দু-তিন দিন পর যাওয়ার কথা, তাঁদের ডেকে এনে ফ্লাইট পূর্ণ করা হয়। ভিসা না হওয়ার অভিযোগ নিয়ে কাল অনেকেই মন্ত্রণালয়ে আসেন। তিনি বলেন, বেসরকারি ক্ষেত্রেও একই অবস্থা, তারা ভিসা না দিয়ে পাসপোর্ট ফেরত দিচ্ছে। এ অবস্থায় প্রত্যেক হজযাত্রীকে বিমান ভাড়া দুইবার গুনতে হতে পারে।
ঢাকার সৌদি দূতাবাসে পাঠানো চিঠিতে ধর্মসচিব জানিয়েছেন, সরকারি ব্যবস্থাপনায় যাঁরা হজে যাবেন, তাঁদের যাত্রার সময়সূচি নিশ্চিত করা হয়েছে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত অর্ধেক হজযাত্রীর পাসপোর্টে ভিসা লাগেনি। সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীরা যেন দ্রুত ভিসা পান, সে ব্যাপারে দূতাবাসের সহযোগিতা প্রয়োজন। এই হজযাত্রীদের জন্য মক্কা ও মদিনায় বাসা ভাড়া থেকে শুরু করে সব ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু বিমানের একটি হজ ফ্লাইট সূচি বিলম্ব হলে পুরো প্রক্রিয়া ব্যাহত হবে। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেননও আশঙ্কা করছেন, ফ্লাইট খালি গেলে বা ফ্লাইট বাতিল হলে ফ্লাইট সূচিতে বিপর্যয় ঘটবে। ফলে হজযাত্রী এবং সরকার উভয়ের ক্ষতি ও ভোগান্তি হবে।
রোববার রাতে সৌদি আরবে ই-হজ সিস্টেমে ভিসার ছবি প্রসঙ্গে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, সৌদি দূতাবাসের ভিসা প্রিন্টিং সিস্টেমে সৌদি আরবের ই-হজ সিস্টেমের অনুমোদিত ফটো কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভিসার জন্য প্রিন্ট করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই দূতাবাসের নিয়মানুযায়ী ছবি দিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ছবি দিতে ফায়ারফক্স ইন্টারনেট ব্রাউজার ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। এবার বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ১ হাজার ৭৫৮ জনের হজ পালনের কথা রয়েছে। এঁদের মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন ২ হাজার ৭০০ জন। সূত্র : শীর্ষ নিউজ