শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:০২ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক: অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৭৯৮-৬৭৬৩০১
নিজামি-মীর কাসেমের আপিলের শুনানি মঙ্গলবার

নিজামি-মীর কাসেমের আপিলের শুনানি মঙ্গলবার

nijami-kasjem-300x202

আমার সুরমা ডটকম : একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী ও নির্বাহী পরিষদের সদস্য মীর কাসেম আলীর মামলার আপিলের শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় আনা হয়েছে। মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানির জন্য কার্যতালিকায় আনা হয়েছে। এ বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেন বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। মতিউর রহমান নিজামীর মামলা আপিলের শুনানির জন্য কার্যতালিকায় ১০ নম্বরে রাখা হয়েছে। অপরদিকে মীর কাসেম আলীর মামলার সারসংক্ষেপ জমা দেয়ার বিষয়ে আদেশ দিতে কার্যতালিকায় দুই নম্বরে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, “মতিউর রহমান নিজামীর আপিলের শুনানি এবং মীর কাসেম আলীর মামলার সারসংক্ষেপ জমা দেওয়ার বিষয়ে শুনানির জন্য কার্যতালিকায় আনা হয়েছে।”

এ বিষয়ে মতিউর রহমান নিজামীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট শিশির মোহাম্মদ মনির বলেন, “মামলাটি মঙ্গলবার শুনানির জন্য আদালতের কার্যতালিকায় এসেছে। আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় মামলাটি ১০ নম্বরে রয়েছে। সেখানে লেখা রয়েছে, ‘মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী বনাম চিফ প্রসিকিউটর, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এছাড়া মীর কাসেম আলীর মামলার সারসংক্ষেপ জমা দেয়ার বিষয়ে আদেশের জন্য রয়েছে।” এর আগে গত ১০ মার্চ মতিউর রহমান নিজামীর মামলার সারসংক্ষেপ জমা দেয়ার নির্দেশ দেন আদালত। আসামিপক্ষ ও রাষ্ট্রপক্ষকে ৩১ মার্চের মধ্যে এই সারসংক্ষেপ জমা দিতে বলা হয়। আদালত বলেন, এ সময়ের মধ্যে সারসংক্ষেপ জমা না দিলে ধরে নেওয়া হবে, শুনানির জন্য উভয় পক্ষ প্রস্তুত রয়েছে।

আদালতে নিজামীর পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট-অন-রেকর্ড জয়নুল আবেদীন ও অ্যাডভোকেট শিশির মোহাম্মদ মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। ট্রাইব্যুনালের রায়ের পর আপিলের শুনানির জন্য তিনবারের মতো নিজামীর মামলাটি কার্যতালিকায় এলো। গত বছরের ২৩ নভেম্বর মোট ১৬৮টি যুক্তি দেখিয়ে এই আপিল আবেদন করেন নিজামীর আইনজীবীরা। ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর ওই রায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ মতিউর রহমান নিজামীকে ফাঁসির আদেশ দেন। তার বিরুদ্ধে আপিল করেন মতিউর রহমান নিজামী।

এর আগে ২০১০ সালের ২৯ জুন ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের একটি মামলায় মতিউর রহমান নিজামীকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই বছরের ২ আগস্ট তাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ২০১২ সালের ১১ ডিসেম্বর তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ উপস্থাপন করেন ট্রাইব্যুনাল। ২৮ ডিসেম্বর আদালত অভিযোগ আমলে নেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, লুট, ধর্ষণ, উসকানি ও সহায়তা, পরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্র এবং বুদ্ধিজীবী হত্যার ১৬টি অভিযোগ আনা হয়। আটটি অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পর মোট চারটি অভিযোগে তাকে সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেয়া হয়েছে। প্রমাণিত অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে হত্যা, বুদ্ধিজীবী গণহত্যা, লুণ্ঠন, ধর্ষণ, দেশত্যাগে বাধ্য করা, নির্যাতন ইত্যাদি। চট্টগ্রামের চাঞ্চল্যকর ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায়ও নিজামীর বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে।

অপরদিকে ২০১৪ সালের ২ নভেম্বর মীর কাসেম আলীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়ে রায় ঘোষণা করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ এ রায় দেন। রায়ে প্রসিকিউশনের আনীত ১৪টি অভিযোগের মধ্যে ১০টি অভিযোগে মীর কাসেম আলীকে দোষী প্রমাণিত করা হয়। তবে চারটি অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে এসব অভিযোগ থেকে খালাস দেয়া হয়।

প্রমাণিত অভিযোগগুলোর মধ্যে ২ নম্বর অভিযোগে তাকে ২০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়। ৩, ৪, ৬, ৭, ৯ ও ১০ নম্বর অভিযোগে তাকে সাত বছর করে মোট ৪২ বছর কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়। এ ছাড়া ১৪ নম্বর অভিযোগে ১০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। এই আটটি অভিযোগে তাকে ৭২ বছর কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়। এ ছাড়া ১১ ও ১২ নম্বর অভিযোগে মীর কাসেম আলীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। এ রায়ের বিরুদ্ধে মীর কাসেম আলীর পক্ষে অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন তুহিন ২০১৪ সালের ৩০ নভেম্বর এই আপিল করেন। মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ট্রাইব্যুনালের আদেশে ২০১২ সালের ১৭ জুন মীর কাসেম আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com