মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:৪৪ অপরাহ্ন
সাইফ উল্লাহ, বিশেষ প্রতিবেদক (সুনামগঞ্জ): সুনামগঞ্জে হত দরিদ্রদের খাদ্য সহায়তা ওএমএস চাল বিক্রি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ফসলহারা কৃষকের মাঝে হাহাকার বিরাজ করছে। মানবিক বিবেচনায় ওএমএস চালুর দাবিতে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের নিকট চিঠি লিখেও কোন সদুত্তর পাচ্ছেন না। জরুরি ভিত্তিতে ওএমএস চালুর দাবি ফসলহারা কৃষকদের। খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানা গেছে, যে গত ২৯ মার্চ থেকে জেলার ছোট বড় ১৪২টি হাওরের ফসল ডুবির ঘটনা ঘটে। এক ছটাক ধান ও কেউ গোলায় তুলতে পারেনি। কৃষকদের ঘরে ঘরে খাদ্যের হাহাকার চলে। পেটের তাগিদে এলাকা ছেড়ে বড় শহরে পাড়ি জমায় ফসলহারা কৃষক। খাদ্য সংকট মোকাবেলায় সরকার সারা জেলায় গত ১০ এপ্রিল থেকে ৪২টি পয়েন্টে ১৫ টাকা দরে চাল ও ১৭ টাকা দরে আটা বিক্রয় কেন্দ্র খোলে। পরবর্তীতে প্রতিটি ইউনিয়নে একজন করে ডিলার সংখ্যা বাড়িয়ে ১১০ এ উন্নীত করা হয়। আটার চাহিদা না থাকায় খোলা বাজারে শুধু চাল বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়। প্রতিদিন হতদরিদ্ররা ডিলার পয়েন্টে কমমূল্যে চাল ক্রয়ের সুযোগ পায়। ফলে ফসলহারা কৃষকদের দুই বেলা আহারের দিন কেটেছে। গত ১ জুলাই থেকে ওএমএসএর চাল বিক্রি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গ্রামে গ্রামে খাদ্যের হাহাকার চলছে। ডিলার কেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরও প্রতিদিন চাল নিতে লাইনে এসে দাঁড়ায় হতদরিদ্ররা। চাল না পেয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে শূন্য হাতে। তবুও আশায় বুক বেঁধে আছেন কখন চালু হবে ওএমএসএর চাল বিক্রি। ডিলাররা হতদরিদ্রদের ওএমএসএর বন্ধের বিষয়টি বুঝাতে পারছেন না। উল্টো ডিলারদের ধমক খেতে হচ্ছে হতদরিদ্রদের। শহরের ওয়েজখালী পয়েন্টের ডিলার রতন কুমার ধর জানান, আমাকে ডিলার পয়েন্টে না পেয়ে হতদরিদ্ররা আমার বাসা ঘেরাও করে। সরকার যে ওএমএস বন্ধ করে দিয়েছে সেই কথাটি আমি ফসলহারা হতদরিদ্রদের বুঝাতে পারছি না। দক্ষিণ সুনামগঞ্জের ডিলার শাকির জানান, সূর্য উঠার আগেই শত শত হতদরিদ্ররা আমার এখানে লাইন ধরে চাল নেয়ার জন্য। দ্রুত ওএমএস চালু না হলে প্রতিটি গ্রামে খাদ্যাভাব দেখা দেবে। জয়কলস গ্রামের কৃষক অবণী মোহন জানান, আগে আমরা ১৫ টাকা কেজি দরে ওএমএসএর চাল পাইতাম। এখন ওএমএসএর চাল বন্ধ হয়ে গেছে। বেশি মূল্যে চাল কেনার সামর্থ আমাদের নেই। আমার মতো অনেকেই কম মূল্যে চাল না পেয়ে অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জাকারিয়া মোস্তফা জানান, ওএমএস চাল বিক্রি চালু রাখার আমরা মন্ত্রণালয়ে চিঠি লেখেছি। কিন্তু এখনও সদুত্তর পাইনি। সদুত্তর ফেলেই ফের ওএমএস চালু করা হবে।