শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৫ পূর্বাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক: অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৭৯৮-৬৭৬৩০১
ছাতকে চাচা-ভাতিজার দ্বন্দ্ব নিয়ে দু’গ্রামবাসিকে আসামি করায় উত্তেজনা

ছাতকে চাচা-ভাতিজার দ্বন্দ্ব নিয়ে দু’গ্রামবাসিকে আসামি করায় উত্তেজনা

চান মিয়া, বিশেষ সংবাদদাতা (সুনামগঞ্জ): ছাতকে চাচা-ভাতিজার দ্বন্দ্বের জের ধরে সংঘর্ষে করিমুনের মৃত্যুতে দু’গ্রামের নিরাপরাধ লোকজনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। ফলে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছেন সাধারণ লোকজন। এ নিয়ে এলাকায় চরম অসন্তেুাষ বিরাজ করছে। জানা যায়, উপজেলার ছৈলা-আফজলাবাদ ইউপির লাড়িগাঁও গ্রামের আব্দুল খালিকের ছেলে লায়েছ মিয়া ও পাশের ঘরের তার ভাতিজা মৃত হোছন আলীর ছেলে আরিফ আলীর মধ্যে দীর্ঘদিন থেকে বিরোধ চলে আসছিল। গত ২৫ জুন সন্ধ্যায় আরিফ আলীর পক্ষে জাহাঙ্গির ও লায়েছের পক্ষে আকিক মিয়ার মধ্যে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে লয়েছ ও আরিফ পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইট পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনায় আহত ফয়ছল (২৮), ইবরাহিমকে (২৪) সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও করিমুন নেছাকে (৭৬) ছাতক হাসপাতালে ভর্তি করেন। ২৭ জুন করিমুনকে ছাড়পত্র দেয়া হলে ২৯ জুন বাড়ি থেকে পুনরায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির পর ৩০ জুন মৃত্যুবরণ করেন। পরে চাচা-ভাতিজার মধ্যে সংঘটিত ঘটনায় পার্শ্ববর্তী খিদুরা ও লাড়িগাঁও গ্রামের ১৮ জনের মধ্যে ইউসুফ আলী, গিয়াস মিয়া, তাজুদ মিয়া, নুর মিয়া, আব্দুল মুমিন, আব্দুল আহাদ, ফজর আলী, বদরুল ইসলাম, সাহেলা বেগম ও বিলাল মিয়াসহ ৯ জনকে আসামি করে নিহতের ছেলে লায়েছ মিয়া বাদি হয়ে ছাতক থানায় হত্যা মামলা (নং-৫, তাং ০৩.০৭.২০১৭ ইং) দায়ের করেন।
এ ব্যাপারে ছাদেক মিয়া, শায়েস্তা মিয়া, সিরাজ উদ্দিন, আকদ্দুছ আলী, আব্দুুস ছোবহান, লিলু মিয়া, হিরন মিয়া, আব্দুল হান্নান, আছকন, আব্দুল মানিক, আব্দুল মন্নান, আবুল কালাম, বিলাল মিয়া, সিরাজ মিয়া, আব্দুল তাহিদ, নজরুল ইসলাম, ফয়জুল ইসলাম, আশুক মিয়া, ছুনু মিয়া, ময়নুল ইসলাম, ইবরাহিম আলীসহ এলাকার লোকজন জানান, হত্যা মামলায় পরিকল্পিতভাবে নিরাপরাধ লোকজনকে আসামি করা হয়েছে। তারা এদেরকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়ার দাবি জানিয়ে বলেন, আসামি পক্ষের বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাটসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালাচ্ছে বাদিপক্ষ। জানা গেছে, করিমুন মৃত্যুর প্রায় একমাস পূর্বে গত ২৮ মে খিদুরা জামে মসজিদে গ্রামের আব্দুল বারিকের ছেলে তুহিন মিয়া সহপাঠিদের সাথে তারাবীহ নামাজে যাবার পথে মৃত ঠাকুরধনের ছেলে জমসর আলীর নেতৃত্বে তাদের উপর হামলা করা হয়। এতে আব্দুল খালিকের ছেলে আব্দুস শহিদ ছাইলা বাদি হয়ে জমসর আলীসহ ২২ জনের নামে ছাতক থানায় মামলা (নং-৩০, তাং-২৪.০৬.২০১৭ ইং) ও একই ঘটনায় শুধু ঘটনাস্থল বদল করে জমসর আলী বাদি হয়ে আব্দুল বারিকসহ ৩৩ জনের বিরুদ্ধে থানায় পাল্টা মামলা (নং-১৬, তাং ০৮.০৭.২০১৭ ইং) দায়ের করেন। ছাইলা ও জমশর পক্ষের পাল্টাপাল্টি মামলায় নিষ্পত্তির জন্যে একাধিক সালিশ বৈঠক বসেও কোন সুরাহা হয়নি।
এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য আব্দুল ওয়াহিদ জানান, লাড়িগাঁও গ্রামের লায়েছ ও আরিফ দু’পক্ষই তার গোত্রের লোক হয়, একই বাড়িতে সবাই বসবাস করেছেন। এখন লাড়িগাঁও থেকে তিনি ১৫ বছর আগে স্থানীয় পায়রাবন্দে নতুন বাড়ি নির্মাণ করে এসেছেন। তিনি দু’পক্ষের পূর্ব বিরোধে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানান।
ছৈলা আফজলাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান গয়াছ আহমদ খিদুরা ও লাড়িগাঁও পৃথক দু’টি গ্রাম ও পঞ্চায়েত উল্লেখ করে বলেন, গত রমজানে খিদুরা মসজিদের হাফেজ নিয়োগ নিয়ে দু’পক্ষে বিরোধ দেখা দিলে তা নিষ্পত্তি হয়। পরে জমসর আলী ও ছাইলা পক্ষের মধ্যে মামলা হলে ঈদের দিন থানার ওসির সমন্বয়ে বিষয়টি নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেয়া হয়। দু’পক্ষ ৫ হাজার টাকা করে জামানত দেন। পরে লায়েছ ও আরিফে মধ্যে মারামারি হলে শ্বাসকষ্ট রোগি বৃদ্ধা করিমুন আহত ও ঘটনার ৫ দিন পর মারা যান। এতে জমসর আলীর আত্মীয়, নিহতের ছেলে লায়েছ বাদি হয়ে ৮ জনের নামে থানায় প্রথম এজাহার দায়ের করে। পরে জমসর আলীর ইন্ধনে এজাহার পরিবর্তন করে নিরপরাধ আরো ১০ জনের নাম অন্তর্ভূক্ত করা হয়। এ ব্যাপারে গত ১৭ জুলাই সুনামগঞ্জ পুলিশ লাইনে উর্ধ্বতন পুলিশ প্রশাসনের সাথে ইউপি চেয়ারম্যানদের মতবিনিময় সভায় তিনি করিমুনের মামলায় ৮ জন আসামি থেকে রাতারাতি ১৮ জনে উন্নীত করার বিষয়টি প্রশাসনকে অবহিত করে তা তদন্তের দাবি করেন। এ ব্যাপারে ছাতক থানার অফিসার্স ইনচার্জ আতিকুর রহমান মামলার তদন্ত চলছে বলে জানান।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com