বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ১২:৪০ পূর্বাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক: অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৭৯৮-৬৭৬৩০১
শ্রদ্ধা ভালবাসায় মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক সালেহ চৌধুরীর রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন সম্পন্ন

শ্রদ্ধা ভালবাসায় মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক সালেহ চৌধুরীর রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন সম্পন্ন

আমার সুরমা ডটকম: দেশের প্রবীণ সাংবাদিক ও বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা সালেহ চৌধুরীর দাফন সম্পন্ন হয়েছে। রবিবার দুপুরে মরহুমের নিজ গ্রাম সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার গচিয়া সামছুদ্দিন-সিকান্দার উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তৃতীয় জানাযা শেষে গ্রামে পারিবারিক গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। সকাল থেকে তার গ্রামের বাড়ী গচিয়ায় জেলার বিভিন্ন অব্জল থেকে তাকে শেষ বিদায় ও শ্রদ্ধা জানাতে কয়েক হাজার লোক জড়ো হন, সাড়ে ১০টায় ঢাকা থেকে সালেহ চৌধুরীর লাশ এসে পৌছলে সেখানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। এরপর লাশ নিয়ে যাওয়া হয় তার কৈশোরের স্মৃতি বিজড়িত গচিয়া সামছুদ্দিন-সিকান্দার উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে। বিদ্যালয় প্রাঙ্গণের শহীদ মিনারে লাশ রেখে রাষ্ট্রীয় সালাম প্রদান করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদুজ্জামান পাবেল। গার্ড অব অনার শেষে এই কিংবদন্তীর মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন সুনামগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক, স্থানীয় সংসদ সদস্য ড. জয়া সেনগুপ্তার পক্ষে দিরাই উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ, জেলা প্রশাসক সাবিরুল ইসলাম, সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম. এনামুল কবির ইমন, মুক্তিযোদ্ধা বজলুল মজিদ চৌধুরী খসরু, দোয়ারাবাজার উপজেলা চেয়ারম্যান ইদ্রিস আলী বীরপ্রতীক, সুনামগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার ও ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি আবু সুফিয়ান, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক সদস্যসচিব মালেক হুসেন পীর, দিরাই উপজেলা চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান তালুকদার, পৌরসভার মেয়র মোশাররফ মিয়া। এছাড়াও দিরাই প্রেসক্লাব, দিরাই উপজেলা আওয়ামীলীগ ও অংগ সংগঠনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামজিক সংগঠন তার মরদেহে পুষ্পার্ঘ্য অর্পন করে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। দুপুর আড়াইটায় বিদ্যালয় মাঠে জানাযা শেষে বাড়ীর আঙ্গিনায় পারিবারিক কবরস্থানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তার লাশ দাফন করা হয়।
উল্লেখ্য, সালেহ চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধের ৫নং সেক্টরের টেকেরঘাট সাব-সেক্টরে থেকে হাওরাঞ্চলের আঞ্চলিক সমন্বয়ক হিসেবে যুদ্ধ করেন। একই সঙ্গে যোদ্ধা ও সংগঠকের দায়িত্ব পালন করেন। টেকেরঘাট সাবসেক্টর প্রতিষ্ঠায় তার অসামান্য অবদান রয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা ভাতায় তিনি শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের কবর সংরক্ষণ করে গেছেন। সাংবাদিক সালেহ চৌধুরী স্বাধীনতাপূর্ব ‘দৈনিক পাকিস্তান’-এর সাব এডিটর ছিলেন। স্বাধীনতার পরে তিনি এই পত্রিকার ফিচার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। পরে কমনওয়েলথ জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের বাংলাদেশের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। দাবা ও আঁকাআঁকির নেশার মধ্যেও নিয়মিত জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিক পত্রিকায় লেখালেখি করেছেন। মুক্তিযুদ্ধ, অনুবাদ, সাহিত্য, জীবনীসহ বিভিন্ন বিষয়ে তার একাধিক গ্রন্থ রয়েছে। সর্বশেষ তিনি ‘ভাটি এলাকায় মুক্তিযুদ্ধ’ নামে একটি গ্রন্থ প্রকাশ করেছেন। সাংবাদিক সালেহ চৌধুরী স্বাধীনতাযুদ্ধ চলাকালে ৬ ডিসেম্বর সুনামগঞ্জে যে অনন্য শহীদ মিনার নির্মিত হয় তার নক্সাকার ছিলেন। সবুজ জমিনে লালবৃত্তের উপরে লেখা ‘যাদের রক্তে মুক্ত এ দেশ’ তার দেওয়া শ্লোগান। এছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘অপরাজেয় বাংলার’ নামকরণও তিনি করেছেন। বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী সাংবাদিক সালেহ চৌধুরী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে গঠিত সেক্টরস কমান্ডার ফোরামের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকায় মারা যান সাংবাদিক সালেহ চৌধুরী। সেখানে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় প্রথম যানাজা ও জাতীয় প্রেসক্লাবে দ্বিতীয় যানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com