বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০২:০৭ পূর্বাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম: একই ধর্মের অনুসারী হওয়ার পরও ধর্মীয় কাজে বাঁধা প্রদানের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার তাড়ল ইউনিয়নের উজানধল গ্রামের সনাতন ধর্মাবলম্ভীদের পুজা-পার্বনের জায়গা ‘শিবগাছ’ নামক দেবতা গাছে পুজা করতে নিষেধ দিয়েছে গ্রামের একটি প্রভাবশালী মহল। এ নিয়ে সনাতন ধর্মীবলম্ভীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করায় অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে বাধ্য হয়েই গ্রামের মৃত মহেন্দ্র শুক্লবৈদ্যের পুত্র মনোরঞ্জন শুক্লবৈদ্য বাদি হয়ে গত ৬ নভেম্বর গ্রামের ৩৬ জনের স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে দাখিল করা হয়। অভিযোগপত্রে একই গ্রামের মৃত দেবেন্দ্র চৌধুরীর পুত্র দুলন চৌধুরী ও নুপুর চৌধুরী, মৃত সরিন্দ্র দাসের পুত্র সুদিন্দ্র দাস, মৃত যামিনী কান্ত চক্রবর্তীর পুত্র জ্যোতিষ চক্রবর্তী, মৃত হরিপদ শর্মার পুত্র রাখাল শর্মা, সুরেশ দাসের পুত্র সুকেশ দাস, মৃত বীরবল বিশ্বাসের পুত্র রাধা বিশ্বাস, মৃত সুধাংশু দাসের পুত্র হিমাংশু দাস, মনোরঞ্জন দাসের পুত্র বিশ্ব দাস, মৃত যামিনী দাসের পুত্র সুকেশ দাসকে বিবাদি করা হয়।
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, ‘উজানধল গ্রামের শ্রী শ্রী শিবগাছ নামক ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের টাকার হিসাব-নিকাশ নিয়ে উপরোক্ত ২য় পক্ষ দুলন চৌধুরীর সাথে অভিযোগ কারীদের মনোমালিন্য ও বিরোধ দেখা দেয়। এরই আক্রোশে বিবাদিগণ বাদিপক্ষের লোকজনের জানমালের ক্ষতিসাধন করতে রাস্তাঘাটে বিভিন্ন ধরণের হুমকি দেয় এবং শিবগাছে পুজা করতে গেলে প্রাণে হত্যা করা হবে বলে অগ্রিম জানিয়ে দেয়।’ ফলে নিরুপায় হয়ে বাদিপক্ষ নিজেদের জানমালের নিরাপত্তা ও রাস্তাঘাটে নির্বিঘেœ চলার স্বাধীনতার জন্য দিরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে একটি অভিযোগ দাখিল করেন।
সূত্র আরো জানায়, অভিযোগপত্রটি পাওয়ার পরই দিরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মঈন উদ্দিন ইকবাল স্বাক্ষরিত একটি নোট দিরাই থানার অফিসার ইন-চার্জকে ‘আইন অনুযায়ি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ’-এর জন্য অনুরোধ করেন।
এ ব্যাপারে দুলন চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, শিবগাছ নিয়ে গ্রামের কারো সাথে কোন দ্বন্দ্ব নেই; ধর্মীয় কাজে বাঁধা দানের বিষয়ে যে অভিযোগ করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। তিনি কাউকে প্রাণনাশের হুমকি দেননি বলেও জানান।
দিরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মঈন উদ্দিন ইকবাল অভিযোগপত্র পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে জানান, বিষয়টি তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে, প্রতিবেদন আসার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।