মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:২৯ পূর্বাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক: অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৭৯৮-৬৭৬৩০১
প্রতিহিংসার রাজনীতিতে জর্জরিত টিলাগড় ছাত্রলীগ,চার মাসেই কেড়ে নিল তিন মেধাবীর জীবন

প্রতিহিংসার রাজনীতিতে জর্জরিত টিলাগড় ছাত্রলীগ,চার মাসেই কেড়ে নিল তিন মেধাবীর জীবন

আশরাফ আহমেদ, এম.সি কলেজ প্রতিনিধি: ৩৬০ আউলিয়ার দেশ, চায়ের দেশ নামে পরিচিত সিলেট নগরীর একটি ঐতিহ্যবাহী এলাকা টিলাগড়। যেখানে অবস্থান সিলেট তথা দেশের প্রাচীন ও সুনামধন্য বিদ্যাপীঠ মুরারিচাঁদ (এম.সি) কলেজ। এছাড়া রয়েছে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারী কলেজ, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজসহ দেশের বেশকিছু নামকরা প্রতিষ্ঠান। যে কারনে সিলেটসহ দেশের ভিবিন্ন স্থান থেকে আগত শিক্ষার্থীর কোলাহলে সবর্দাই মুখরিত থাকে ঐতিহ্যবাহী এই টিলাগড়। আর এজন্য এক সময় সিলেটের ছাত্র রাজনীতির পীঠস্থান বলে আখ্যায়িত করা হত এই টিলাগড়কে।
কিন্তু বর্তমানে প্রতিহিংসার রাজনীতির প্রভাবে সেসব সুনাম হারিয়ে এখন সিলেটজুড়ে এক আতঙ্কের নাম টিলাগড়। অতিথের যেকোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতিকে পেছনে ফেলে টিলাগড়ের ছাত্ররাজনীতি এখন ভয়াবহ আকার ধারন করেছে। নিজেদের আদিপত্য বিস্থারকে কেন্দ্র করে টিলাগড় ছাত্রলীগের রন্জিত গ্রুপ ও আজাদ গ্রুপের মধ্যে চলছে একের পর এক মরন খেলা।
আর নিজেদের মধ্যে প্রতিহিংসার এই গ্রুপিং রাজনীতির কবলে পড়ে একের পর এক বলি হচ্ছে মেধাবী কিছু ছাত্রের প্রাণ।
অন্য কোন দলের সক্রিয় প্রভাব না থাকার ধরুন টিলাগড়ে বতর্মানে ছাত্রলীগের আজাদ-রন্জিত নামক দুটি গ্রুপের আদিপত্য চলেছে। এরমধ্যে এম.সি ও সরকারি কলেজে নিজেদের একক আধিপত্য বিস্থারকারি রন্জিত গ্রুপটি আজাদ সমর্থীত গ্রুপের চেয়ে বেশি শক্তিশালী। নিজেদের মধ্যে কোন্দলের ধরুন প্রায়ই গ্রুপ দুটির মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। দেশীয় অস্র দ্বারা চলে রক্তক্ষরনের মত সব অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। এবং  প্রতিহিংসার এই মরন যুদ্ধে প্রায়ই নিভে যেতে দেখা যায় এক একটি তাজা প্রাণ। যার ফলে টিলাগড়সহ তদসংলগ্ন এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করে। যে কারনে এই অঞ্চলের সাধারন মানুষকে সর্বদাই হতাশা আর ভয়ের মধ্যে থাকতে হয়।

এক সময়ের গৌরবগাতা টিলাগড়কে এখন অনেকেই লাশের টিলাগড়, মৃত্যুকূপ ইত্যাদি ব্যঙ্গাত্মক শব্দ দ্বারা বিচার করেন। যার কারন একটাই, প্রতিহিংসার রাজনীতি। বছরখানেক আগের ঘটনাগুলো বাদ দিলেও গত তিনমাসে এই টিলাগড়ে ছাত্রলীগের গ্রুপিং কেড়ে নিয়েছে তিনটি তাজা প্রাণ। খালি হয়েছে তিন মায়ের বুক। নিহতরা হচ্ছেন জাকারিয়া মোহাম্মদ মাসুম, ওমর আহমদ মিয়াদ ও সর্বশেষ  তানিম খান। এরমধ্যে মাসুম ছিলেন ছাত্রলীগের সুরমা গ্রুপের কর্মী। হামলাকারীরা সরাসরি টিলাগড় কেন্দ্রীক ছাত্ররাজনীতির সাথে জড়িত।
এর আগে গত ১৬ অক্টোবর প্রকাশ্যে দিবালোকে কুপিয়ে হত্যা করা হয় ছাত্রলীগের হিরন মাহমুদ নিপু গ্রুপের সক্রিয় কর্মী এমসি কলেজ ছাত্রলীগ নেতা ওমর আহমদ মিয়াদকে। মিয়াদের রক্তের দাগ শুকানোর আগেই রবিবার (৭ জানুয়ারি) রাত ৯টার দিকে টিলাগড়েই নিভলো তানিম খান (২২) নামের আরেক ছাত্রলীগ কর্মী জীবন প্রদীপ ।
এ তিন খুনই শুধু নয়। এরও প্রায় ৭ বছর আগে ২০১০ সালের ১২ জুলাই অভ্যন্তরীণ বিরোধের জের ধরে টিলাগড়ে খুন হন এমসি কলেজের গণিত বিভাগের ৩য় বর্ষের ছাত্র ও ছাত্রলীগ কর্মী উদয়েন্দু সিংহ পলাশ। সব মিলিয়ে টিলাগড় এখন পুরো সিলেটে এক আতঙ্ক হয়ে দাড়িয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও বাস্তব যে আজ অবদি একটি খুনেরও সঠিক বিচার হয়নি। সাময়িকভাবে আসামিদের ধরা হলে ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক মামা,খালুদের সার্বিক সহায়তায়, কিছুদিন পর সহজেই যামিনে বের আসেন মায়ের বুক খালি করা এসব ঘাতকরা। আবারও চলে তাজা প্রাণ কেড়ে নেওয়ার মহোৎসব।
এই বিষয়ে এম.সি কলেজের সমাজবিঙ্গান ভিবাগের এক শিক্ষকের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, অপরাধীরা অপরাধ করে প্রভাবশালীদের সহায়তাই সহজেই পাড় পেয়ে যাচ্ছে, তাদের সঠিক বিচার না হওয়ার ধরুন, সমাজে দিন দিন অপরাধ প্রবনতা বেড়েই চলছ।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com