সোমবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩৭ অপরাহ্ন
মোঃ মানিক মিয়া, জামালগঞ্জ (সুনামগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা: সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ-ধর্মপাশা-তাহিরপুর হাওরাঞ্চলে নদী পথে বালু-পাথর বহনকারী ইঞ্জিন চালিত স্টিল বডির ৩ শতাধিক ভলগেট নৌকা প্রায় ১৫ দিন ধরে জামালগঞ্জ অংশের বৌলাই নদীর প্রবেশ পথে আটকা পড়ে আছে। উপজেলার আবুয়া নদীর মুখ থেকে পা-ব নদী হয়ে রামজীবনপুর পর্যন্ত প্রায় আড়াই কিলোমিটার নদী পথে মালবাহী নৌযান গুলো আটকা পড়েছে।
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বড়ছড়া, টেকেরঘাট, ছাড়াগাঁও শুল্কস্টেশন থেকে কয়লা, ফাজিলপুর থেকে বালু ও নুরী পাথর ক্রয় করে সারাদেশে যোগান দেয় ব্যবসায়ীরা। এসব আমদানিকৃত পণ্য বহনের একমাত্র মাধ্যম জামালগঞ্জ, তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর ও ধর্মপাশার নদীপথ। ওই নদীর নাব্যতা হারিয়ে নদীর তলদেশ খনন না থাকার কারণে বালু-পাথর বহনকারী স্টিলবডির নৌযান আটকা পড়েছে। বাজিতপুর, কিশোরগঞ্জ, আশুগঞ্জ, ফতুল্লা, নারায়নগঞ্জ, সুনামগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলার মালবাহি নৌয়ান শ্রমিকরা ওই নদীতে আটকা পড়ে মানবেতর দিন অতিবাহিত করছেন।
শ্রমিকরা জানান, প্রায় ১৫ দিন ধরে তারা আটকা পড়ার কারণে থাকা-খাওয়ার সমস্যাসহ এলাকার কথিপয় অসাধু চক্রের হাতে লাঞ্চনা-বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন। নৌপুলিশ টহলে থাকলে সাময়িক সময় নৌ-শ্রমিকরা ভালো থাকলেও পুলিশ চলে আসলে তারা চরম আতংকগ্রস্থ অবস্থায় সময় পাড় করছেন। নাম না বলার শর্তে কয়েকজন নৌ-শ্রমিক জানান, এখন বিভিন্ন দোহাই দিয়ে নৌ-পুলিশের ছত্রছায়ায় থেকে নিরবে কিছুটা চাঁদাবাজী হচ্ছে। অবশ্য নৌপুলিশের দায়িত্বে থাকা এ.এস.আই আল আমীন বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ মালবাহী নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি সফিজুল ইসলাম বলেন, নদীর নব্যতা হারিয়ে পানি কমে যাওয়ার কারণে প্রায় ১৫ দিন ধরে নৌযান ও শ্রমিকরা আটকা পড়েছেন। কয়েক দফা গিয়েও তাদের চলাচলের ব্যবস্থা করতে পারছিনা। সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী তালুকদার ও সাংগঠনিক সম্পাদক মো: শাহানুর মিয়া জানান, আটকা পড়া শ্রমিকদের সমস্যা সমাধান করতে বারাবার নদীপথে গিয়ে চেষ্টা করেছি। প্রথম দিকে কয়েকটি স্টিল বডির নৌকা যাতায়াত করলেও এখন একটি নৌকা নদীর মাঝখানে ডুবে পড়ার কারণে নৌযান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। আশা করি কয়েক দিনের মধ্যেই এই সমস্যার সমাধান হবে।
জামালগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের সাাবেক ডেপুটি কমান্ডার ইউসুফ আল-আজাদ বলেন, নদী খনন না হলে এই সমস্য সমাধান হবেনা। শ্রমিকরা নদীতে আটকা পড়েছেন শুনেছি। নৌ-পুলিশের দোহাই দিয়ে কিছু চাঁদা আদায়ের ব্যাপারে আমাকেও কয়েকজন জানিয়েছেন। রক্ষকরা যদি ভক্ষক হয় তা হলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে আমাদের এলাকায়।
জামালগঞ্জের লালপুরে অবস্থান রত নৌপুলিশের এএসআই আল আমীন বলেন, এখন নদীপথে চাঁদাবাজী বন্ধ, পুলিশের ছত্রছায়ায় থেকে কেই চাঁদা আদায় করেনা।