বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০১:১৮ পূর্বাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম: বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি ও সহকারি শিক্ষকদের অগোছরে বিদ্যালয়ের রড বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। তবে এ ঘটনায় পরস্পর বিরোধি বক্তব্য পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয় ও গ্রামবাসির সূত্রে জানা যায়, সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার পৌরসভার ভরারগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা বিউটি রাণী ভৌমিক গত জানুয়ারি মাসে বিদ্যালয়ের সংস্কার কাজ করার পর থেকে যাওয়া কিছু রড সংশ্লিষ্ট অফিস, বিদ্যালয়ের শিক্ষক ম-লীর কোন ধরণের অনুমোদন না থাকলেও দপ্তরীকে দিয়ে প্রায় ১ মণ রড বিক্রি করান। তবে এ নিয়ে পরস্পর বিরোধি বক্তব্য পাওয়া গেছে।
রড বিক্রির ঘটনা সঠিক উল্লেখ করে প্রধান শিক্ষিকা বলেছেন, যে সময় রড বিক্রি করা হয়েছে, সে সময় তিনি শাল্লায় একটি প্রশিক্ষণে ছিলেন। তবে তার এ কথা নাকচ করে দিয়ে দপ্তরী রাসেল মিয়া বলেছেন, আমি প্রধান শিক্ষিকার অনুমতি নিয়েই তা বিক্রি করেছি, এ দিন তিনি বিদ্যালয়ে ছিলেন, পরদিন তিনি প্রশিক্ষণের জন্য শাল্লায় গেছেন। রাসেল মিয়া আরো জানান, গত জানুয়ারি মাসে বিদ্যালয়ের বাথরুম সংস্কারের পর কিছু রড থেকে যায়। প্রধান শিক্ষিকা তাকে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন খাতে খরচের জন্য রডগুলো বিক্রি করতে বলেন। একদিন বিকেলে ভাঙ্গারির কাছে আমি ২৫ কেজি রড বিক্রি করে টাকা প্রধান শিক্ষিকার কাছে দিয়ে দেই। পরে সেই টাকা দিয়ে দিরাইয়ের একটি অনুষ্ঠানের যাতায়াত বাবত খরচ করা হয়।
তবে এই বিষয়ে তিনি অস্বীকার করে বলেন, আমি একদিন রড বিক্রির ব্যাপারে আলাপ করেছিলাম বটে, তবে কোন দিন বিক্রি হয়েছে, তা বলতে পারব না। আমি তখন প্রশিক্ষণে ছিলাম, পরে প্রশিক্ষণ থেকে এসে তা শুনতে পাই দপ্তরী রাসেল মিয়া ১৫-১৬ কেজি রড বিক্রি করেছে, তা শুনে আমি তাকে বকাঝকা করেছি, এখনও তার কাছে টাকা রয়েছে।
বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষিকা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, প্রধান শিক্ষিকা নিজের আধিপত্য ধরে রাখতে অনেক অনিয়মই করে থাকেন। বিদ্যালয়ের রড বিক্রি করে দিলেন, অথচ আমরা কোন শিক্ষিকাই জানি না। তাছাড়া তিনি নিজের ইচ্ছা মত প্রতিষ্ঠানটি চালানোর জন্য পরিচালনা কমিটিও গঠন করতে চাচ্ছেন না।
এদিকে ভরারগাঁও গ্রামের বেশ কয়েকজন জানান, উপজেলার সবকটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটি গঠন হয়ে গেলেও এখানে করা হচ্ছেনা। প্রধান শিক্ষিকা নিজের ইচ্ছেমত প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্যই তা করছেন বলেও তারা অভিযোগ করেন। তারা আরো জানান, বিদ্যালয়ের রড কারো অনুমতি ছাড়াই দপ্তরীকে দিয়ে বিক্রি করে দিয়ে এখন নিজে বাঁচার জন্য না জানার ভান ধরে শুধুমাত্র দপ্তরীর ওপর দোষ চাপাচ্ছেন।
দিরাই উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের এটিও মোঃ আব্দুর রাজ্জাক জানান, ভরারগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটি গঠনের ব্যাপারে আমি প্রধান শিক্ষিকাকে অনেকবার বলেছি, কিন্তু তিনি এখন পর্যন্ত তা গঠন করতে পারছেন না। তিনি যদি শীঘ্রই তা গঠনে ব্যর্থ হন, তবে তার বেতন-ভাতা বন্ধ করে দেব।