শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:৫২ পূর্বাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম : বরিশাল নৌ-রুটে অনেকটা লঞ্চ দেখা গেলেও তবে এম-ভি গ্রিন লাইন ওয়াটার ওয়েজের লঞ্চটি একটু ব্যতিক্রম, যেমন সুন্দর কেটাগরি, তেমন কার্যক্রম, যেন যাত্রীদের নয়, সারা দক্ষিনের মন জয় করে নিবে ঐ গ্রিন লাইন ওয়াটার ওয়েজ লঞ্চটি। এই প্রত্যাকে সামনে রেখে গ্রিন লাইনটি ট্রাইলে এসেছিল ঢাকা-থেকে বরিশালে। গ্রিন লাইনটি বিমানের আদলে গড়া অত্যাধুনিক জাহাজে মাত্র ৫ ঘণ্টায় ঢাকা-বরিশাল রুটে সার্ভিস শুরু হতে যাচ্ছে। ৮ সেপ্টেম্বর নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান দিবা সার্ভিসের জন্য গ্রিন লাইন ওয়াটার ওয়েজের এমন দুটি জাহাজ উদ্বোধন করবেন। প্রায় ৬০০ যাত্রী বহনে সক্ষম এ জাহাজে একদিনের মধ্যেই বরিশাল থেকে ঢাকা গিয়ে আবার বরিশালে ফেরা সম্ভব বলে কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে। বৃহস্পতিবার বরিশালে পরীক্ষামূলক সার্ভিস দিয়েছে ঢাকা থেকে বরিশাল-আবার বিকাল ৫টায় বরিশাল থেকে ঢাকা জাহাজ দুটি।
গ্রিন লাইন ওয়াটার ওয়েজ বরিশালের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা মোঃ বাদশা বলেন, এমভি গ্রিন লাইন-২ ও এমভি গ্রিন লাইন-৩ আগামী ৮ সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে নৌ-পরিবহনমন্ত্রী হতে শুভ উদ্বোধন করা হবে। বিমানের আদলে গড়া এ জাহাজ সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। মাত্র ৫ ঘণ্টায় এ জাহাজে ঢাকা-বরিশাল যাতায়াত করা যাবে। এতে দুই ক্যাটাগরির আসন ব্যবস্থা রয়েছে। ইকোনোমি ক্লাসের ভাড়া ৭০০ টাকা এবং বিজনেস ক্লাসের ভাড়া ১০০০ টাকা। এ ভাড়ার মধ্যেই রয়েছে খাবারের সু-ব্যবস্থা। সবাই একই রকম সার্ভিস পাবে, যখন যার দরকার হবে, যোগাযোগ করে আইননুযায়ী টিকিট পাবে। গ্রিন লাইন ওয়াটার ওয়েজের এক কর্মকর্তা বলেন, প্রতিদিন বিকাল ৩টায় ও সকাল ৮টায় তাদের জাহাজ যাত্রা করবে। যাত্রীদের নিরাপত্তায়ও তাদের বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে। নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগ ঢাকার উপ-পরিচালক মোঃ কবির হোসেন বলেন, ঢাকা-বরিশাল রুটে গ্রিন লাইন ওয়াটার ওয়েজের দুটি জাহাজ যাত্রী সার্ভিস শুরু করতে যাচ্ছে। কেননা পদ্মা সেতু হলে নৌপথের যাত্রীসেবা টিকিয়ে রাখতে এ ধরনের দ্রুতগতিম্পন্ন জাহাজ দরকার হবে মনে করেন তিনি। জানা গেছে, এমভি গ্রিন লাইন-২ ও এমভি গ্রিন লাইন-৩ এর নির্মাণ ব্যয় হয়েছে প্রায় ১৫-১৬ কোটি টাকা। জাহাজ দুটি ক্যাটাম্যারান টাইপের ব্রিটিশ এয়ারলাইনসের বিমানের মতো চেয়ার সিট। এর নিচের অংশ স্টিল আর উপরের অংশ ফাইবারের তৈরি। যে কারণে ডুববে না বরং উল্টে গেলেও ভাসমানই থাকবে- এমনটাই দাবি গ্রিন লাইন কর্তৃপক্ষের।
লঞ্চটির মধ্যে যাত্রীদের মধ্যে সুবিধা রয়েছে, একই ভাড়ার মধ্যে তৃপ্তি খাবার, বেবি কেয়ার, মেডিকেল, কেন্টিন, এসি, টয়লেটসহ বিভিন্ন ধরনের সার্ভিস যা সম্মূন্ন যাত্রী সেবাদের জন্যই।
বরিশাল বন্দর ও পরিবহন বিভাগের যুগ্ম পরিচালক মোঃ মোস্তফিজুর রহমান জানান, ৮ সেপ্টেম্বর জাহাজ দুটি উদ্বোধন করা হবে। ৯ সেপ্টেম্বর বরিশাল থেকে প্রথম যাত্রা করবে। এ জাহাজ চালু হলে এই অঞ্চলের মানুষ দিনের বেলায়ও যানজটমুক্ত পরিবেশে ঢাকায় যাওয়া-আসা করতে পারবেন। এজন্য বরিশাল ঘাটের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বরিশালের এক প্রবাসী ও বীরশ্রেষ্ট ব্যবসায়ী শুভ বলেন, লঞ্চ মালিকদের কাছে জিম্মি বরিশালের যাত্রীরা প্রায় জিম্মি থাকেতে হয়। থাকেনা টিকিট, যাচ্ছে কালো বাজারে, লঞ্চটি দেখে আমাদের পছন্দ হয়েছে তবে অন্য লঞ্চ মালিকদের মত কালো বাজারো টিকিট বিক্রি না করে, যাত্রীরা সবাই এক, সবাই চাই একটু ভাল জায়গায় যেতে এবং তিনি এ কথাও বলে বরিশালের লঞ্চ মালিকদের জন্য অন্য কোনো নৌযানও এসে টিকে থাকতে পারেনা। সে অনুযায়ী লঞ্চের রোটেশন প্রথা ভাঙতে এমন অত্যাধুনিক দ্রুতগতির জাহাজ চালু হওয়া দরকার। লঞ্চ রোটেশন প্রথা বাতিল কমিটির সদস্য সচিব কাজী এনায়েত হোসেন শিপলু বলেন, ডে সার্ভিসে ওয়াটার ওয়েজ জাহাজ বরিশালের মানুষের জন্য এটা একটি সু-খবর। তবে এ জাহাজ যাতে লঞ্চ মালিকদের চক্রান্তে বে-ক্রুজের মতো বন্ধ না হয়ে যায় সে বিষয়ে প্রশাসনকে সতর্ক থাকতে হবে।
জাহাজটি বরিশাল ঘাটে আসলে অনেকট যাত্রীদের মূখ থেকেই শোনা গেছে জাহাজটি অত্যান্ত সুন্দর, মনোরম পরিবেশ, রয়েছে অত্যাধুনিক যাত্রী সেবা, পটুয়াখালী থেকে আসা একযাত্রী বলেন, আমি সব সময় পটুয়াখালী থেকে বরিশাল লঞ্চঘাট এসে ঢাকা যাতায়াত করি, তবে এমন একটি লঞ্চ দেখে আমার অনেক ভাল লাগছে, তিনি এমনটাই প্রত্যাশা করেন ব্রে-কুজের মত না হয়, এর জন্য সরকারের কাছে তিনি দাবি জানান, এ রকমের একটি সুন্দর যাত্রী সার্ভিস যেন নষ্ট না করে।
গ্রিন লাইন ওয়াটার ওয়েজের মালিক আলহাজ্ব মোঃ আলাউদ্দিন লঞ্চটির বিষয়ে জানান, এটি একটি সম্পুন্ন অত্যাধুনিক লঞ্চ, কেয়ার করা হয়ে দক্ষিণাঞ্চলের সকল যাত্রীদের, আমাদের কাছে সবাই সমান, টিকিট থেকে লঞ্চটির কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে সরকারি অনুমতি অনুযায়ী, টিকিট যাবে না কালো বাজারে, লঞ্চটি থাকবে মনোরম পরিবেশে, থাকবে সকল ব্যবস্থা, চলবে দ্রুত গতিতে। এমনটা আশা নিয়েই এমভি গ্রিন লাইন-২ ও এমভি গ্রিন লাইন-৩ আগামী ৮ সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে নৌ-পরিবহনমন্ত্রী হতে শুভ উদ্বোধন করাবেন তিনি। এমনটা প্রত্যাশা যেন সবার যাত্রীদের মধ্যে থাকে।