শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৫৯ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক: অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৭৯৮-৬৭৬৩০১

অপরাধবিজ্ঞানের চোখে ‘বন্দুকযুদ্ধের’ পরিণতি

আমার সুরমা ডটকম ডেস্কঅবাক করা ব্যাপার, ক্ষমতায় আসার প্রায় ৯-১০ বছর পর মাদক নিয়ন্ত্রণে কর্মসূচি নিল সরকার! সাদা চোখে কর্মসূচিটি সাধারণ মানুষের কাছে ‘ভালো’ বলেই মনে হবে। কারণ বাস্তবেই মাদক ও মাদকাসক্তির মারাত্মক প্রভাব ছড়িয়েছে আর এর সঙ্গে অনেক অপরাধেরও ওতপ্রোত সম্পর্ক আছে। অর্থনীতিতে যেমন কোনো পণ্যের দাম বাড়ার বা মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে অর্থনীতির অন্যান্য চলক বা ক্ষেত্রের অনেক কিছুর কার্যকারণ সম্পর্ক থাকে, তেমনি মাদকের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে আছে আরও অনেক অপরাধ। ব্যক্তিগতভাবে যদি কোনো ব্যক্তি মাদক নিতে থাকে, তবে সে চুরি, ছিনতাই, রাহাজানি ও ডাকাতির সঙ্গেও জড়াতে পারে বলে অপরাধবিজ্ঞান আমাদের জানায়। কোনো এলাকায় মাদক সুলভ হওয়া মানে তার সঙ্গে সম্পর্কিত অপরাধ যেমন: মাদক উৎপাদন ও পাচার, অস্ত্র চোরাচালান, গণিকাবৃত্তি, ইভ টিজিং ও যৌনসন্ত্রাস বেড়ে যেতে পারে। অপরাধ বৈজ্ঞানিক একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, যদি কোনো দেশে শুধু মাদক বন্ধ করা যায়, তবে সেখানে হয়তো প্রায় ৫০ শতাংশ অপরাধ কমে যেতে পারে। শতকরা হার ভিন্ন হলেও মাদকের সঙ্গে যে অপরাধের সম্পর্ক—এ বিষয়ে কেউ দ্বিমত পোষণ করে বলে মনে হয় না।

তাই মাদক নির্মূলের সিদ্ধান্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে অপরাধ বিষয়ে পাঠদানের সঙ্গে যুক্ত বলে আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে, শুধু ‘মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ কর্মসূচি দ্বারা মাদক নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে? নাকি সত্যিকার অর্থে মাদকের বিস্তার রোধে তার উৎপাদন, বিনিময়, বাজারজাতকরণ রোধ করতে হবে? অথবা মাদকের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের আর্থসামাজিক অবস্থান জেনে রোধের উপায় বের করতে হবে? সেটাই প্রশ্ন!

নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও সমাজবিজ্ঞানী ডেভিড গারল্যান্ড তাঁর ‘ক্রিমিনোলজি, সোশ্যাল থিওরি অ্যান্ড চ্যালেঞ্জেস অব আওয়ার টাইম’ নামক প্রবন্ধে ব্রিটিশ অপরাধবিজ্ঞানের জনক লিওন রাডজিনোভিজের একটি কথাকে উদ্ধৃতি দেন এভাবে, ‘অপরাধবিজ্ঞানীদের দুঃখ এই জায়গায় যে তাঁরা গবেষণা করে শাস্তির যে সংস্কারের কথা বলেন, তা ব্যর্থ হয়ে যায় অপরাধ ও শাস্তির বিষয়ে গণমানুষের আকাঙ্ক্ষা ও মিডিয়ার প্রভাবে।’ গারল্যান্ড দেখিয়েছেন, ইউরোপীয় দেশগুলোতে অপরাধবিজ্ঞানীদের কৃতিত্ব হলো শাস্তি ও অপরাধ নিয়ন্ত্রণের মানবিক রূপান্তর ঘটানো। কিন্তু বিচার ও শাস্তি শুধু অপরাধবিজ্ঞানীদের জ্ঞানজাত চিন্তার ওপর নির্ভর করে না; বরং তা অনেকাংশে নির্ভর করে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা, বিশেষ করে পুলিশ ও বিচারব্যবস্থা এবং জনপ্রিয় মিডিয়া ও জনসংস্কৃতির ওপর। তাই ১৯৮০-এর দশকের পর থেকে পাবলিকের চাপে কিংবা মিডিয়ার নেতিবাচক প্রভাবে সরকার ও রাষ্ট্র সব সময় ভয়াবহ শাস্তির বিধানের পক্ষে থাকে। ফলে তখন পাশ্চাত্যের অনেক সরকারই ক্ষমতায় আসা অথবা থাকার জন্য ‘অপরাধের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’, ‘মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’, ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ কিংবা ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ নামক স্লোগান ব্যবহার করে জনগণকে প্রভাবিত করে। একই প্রবন্ধে তিনি দেখান, কীভাবে নব্য উদারনীতিবাদের সংকট ঢাকতে ১৯৮০-এর দশকে ‘মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ প্রত্যয়টিকে ব্যবহার করে জনমানুষের অনুভূতি নিয়ে খেলা করা এবং মানুষের চোখে ধুলা দিয়ে ক্ষমতা সংহত করার চেষ্টা হয়েছে।

আমাদের দেশেও সরকারের মাদকবিরোধী অভিযানের সঙ্গে যুক্ত আছে কয়েকটি প্রেক্ষাপট বা বাস্তবতা। গত কয়েক বছরে সরকার মাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সম্পূর্ণ ব্যর্থ ছিল। ফলে মাদক-মূলক অপরাধও ব্যাপকভাবে বেড়েছে। কোনো দেশে সংখ্যাতাত্ত্বিকভাবে অপরাধের হার বেড়ে গেলে বুঝতে হবে, সেখানে প্রচলিত বিচারব্যবস্থা কিংবা অপরাধ নিয়ন্ত্রণের নীতি ও কৌশল বাস্তবে ব্যর্থ হয়েছে। এমন যদি অবস্থা হয় যে মানুষের আর প্রচলিত বিচারব্যবস্থার ওপর কোনো আস্থা নেই, তবে সে হয় নিজ হাতে আইন তুলে নেবে অথবা যেকোনো ধরনের বিচারবহির্ভূত কর্মকাণ্ডকে অবধারিতভাবেই সহায়তা করবে।

বর্তমান অপরাধ নিয়ন্ত্রণ সংস্থার ‘স্বল্পমেয়াদি কৌশল’ হিসেবে পাতি মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সরাসরি ‘বন্দুকযুদ্ধ’, ‘ক্রসফায়ার’ ও ‘এনকাউন্টার’ আপাতদৃষ্টিতে জনগণের একাংশের কাছে প্রশংসিত হলেও অপরাধবিজ্ঞানী হিসেবে আমাদের কাছে বিষয়টি চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন। কঠোর শাস্তির মাধ্যমে কোনো নির্দিষ্ট অপরাধ হয়তো সাময়িকভাবে কমানো সম্ভব; কিন্তু অপরাধের মূল কারণগুলো বের করে সেভাবে পদক্ষেপ না নিলে সেই অপরাধ ফিরে ফিরে আসবে। পাশাপাশি গত কয়েক দিনের ক্রসফায়ার ও এনকাউন্টারের শিকারদের দিকে লক্ষ করলে দেখা যায়, দেশের নামকরা বা চিহ্নিত বড় মাদক ব্যবসায়ীরা কিন্তু ধরাছোঁয়ার বাইরে। নিহত ও গ্রেপ্তার হয়েছে শুধু ক্ষুদ্র অপরাধীরা। এসব কর্মকাণ্ড বিশ্লেষণ করলেই বোঝা সম্ভব যে সরকার কি আসলেই মাদক নির্মূলের পক্ষে, নাকি মাদক নির্মূলের নামে একধরনের রাজনীতি শুরু করেছে সাধারণ জনগণের সঙ্গে? প্রশ্ন থেকেই যায়।

দ্বিতীয়ত, রাষ্ট্রপক্ষ থেকে ভিন্নমতের কিংবা বিরোধী পক্ষের ওপর যে কাঠামোগত সহিংসতা—মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কর্মসূচির মাধ্যমে চলমান রাখা যায়। ভিন্নমত কিংবা বিরোধী পক্ষ যাতে কোনো ধরনের গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রাম জোরদার না করতে পারে, তা নিশ্চিত করার জন্য রাষ্ট্রকে সন্ত্রাস ও ভায়োলেন্সকে ‘গ্রহণযোগ্য’ করার প্রয়োজন পড়ে। কোনো ব্যক্তিকে খুন, অপহরণ কিংবা ক্রসফায়ারে দিতে হলে তাকে একটা তকমা বা অপবাদ দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে। বিরোধী পক্ষকে ‘কলঙ্কিত’ করার কৌশল হিসেবে তাকে মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে তকমা দেওয়াটা খুব কাজের উপায়। এভাবে সাধারণ মানুষকেও বোকা বানানো যায়। ভয়ের সংস্কৃতি জারি করে মানুষকে নিয়মতান্ত্রিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করার অপকৌশল হলো এসব কর্মসূচি, নীতি কিংবা কার্যক্রম। বিখ্যাত ফরাসি দার্শনিক মিশেল ফুকো যাকে বলছেন একধরনের ‘ডিসিপ্লিনিং’ বা ‘বশীকরণ’।

প্রশ্ন হলো, মাদক নিয়ন্ত্রণে এ ধরনের যুদ্ধংদেহী স্বল্পমেয়াদি কৌশল দিয়ে বাস্তবে অপরাধকে কতটুকু নিয়ন্ত্রণ করা যাবে? প্রথমত, কয়েক দিন অপরাধীরা গা ঢাকা দিয়ে থাকবে। কিছুদিন চুপ থাকলেও সরকারের এ কর্মসূচি বন্ধ হয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সুদে-আসলে তারা লাভ তুলে নেওয়ার জন্য আরও বেপরোয়া হয়ে উঠবে। ফলে চক্রাকারভাবে এ ধরনের ধরপাকড়, হত্যা কিংবা ক্রসফায়ার অন্যান্য অপরাধের ক্ষেত্র তৈরি করবে বলেই আমরা বিশ্বাস করি। মাদক ব্যবসায়ীরা অন্যান্য অপরাধ সংঘটনে যুক্ত হতে পারে বলেই মনে হয়।

তৃতীয়ত, প্রচলিত পুলিশ কিংবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়ে এ ধরনের কর্মসূচির ফল নেতিবাচক হওয়াই স্বাভাবিক। কারণ ক্ষমতাকাঠামোতে থাকা সরকারদলীয় লোকজন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের অনেকেই মাদক ব্যবসা ও পাচারের সঙ্গে যুক্ত থাকেন। গত সোমবারের পত্রিকায় প্রকাশিত একটি খবর হলো, তেজগাঁও, মহাখালী রেললাইনের দুই পাশে মাদক নিয়ে পুলিশের রেইডের পরিপ্রেক্ষিতে এক মহিলা বলছেন, ‘অন্য মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশি তথ্যের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশি অভিযানের আগাম খবরে সবাই পালিয়েছে।’ আমরা দেখেছি মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্প, হাজারীবাগ, তালতলা বস্তি, কড়াইল বস্তিসহ যেখানেই ঢাকঢোল পিটিয়ে শামিয়ানা টাঙিয়ে অভিযান চালানো হচ্ছে, তা একধরনের আইওয়াশ। গুরুতর মাদক ব্যবসায়ী ও পাচারকারীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে। ছিঁচকে কিংবা একেবারে ছোট যারা, তারাই শুধু খুন হচ্ছে। সত্যিকার অর্থে যদি মাদক ব্যবসায়ীদের ধরার ইচ্ছা সরকারের থাকত, তবে অনেক আগেই তাদের ধরা যেত বা ধরা হতো। সরকারের কাছে মাদক ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন পর্যায়ের তালিকা থাকলেও এত দিন তাদের ধরা হয়নি। সরকারের উচ্চপর্যায়ের অনেক মন্ত্রী, এমপিও মাদক ব্যবসায় যুক্ত বলে পত্রিকায় প্রকাশ। কিছু কিছু পত্রিকা বলছে, ‘লিস্ট অনুযায়ী ১৪০০০ মাদক ব্যবসায়ীকে ধরা হবে’। আবার পুলিশের বিবৃতি অনুযায়ী কোনো পত্রিকা বলছে, ‘৪০ জন টপটেরর মাদক ব্যবসায়ীকে নিশ্চিহ্ন করব’। আসলে এ ধরনের তালিকা পুলিশের কাছে অনেক আগে থেকেই আছে; কিন্তু তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

অপরাধবিজ্ঞান উত্তর খোঁজে যে কেন মানুষ অপরাধ করে বা অপরাধের সঙ্গে জড়ায়? কেন মাদক নেয়? কিংবা কেন সন্ত্রাসবাদে জড়ায়? যদি কোনো সমাজে নীতিহীনতা, মূল্যবোধবিরোধী কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়, তখন সমাজে একধরনের বিশৃঙ্খলা দেখা যায়। ওই বিশৃঙ্খল সমাজে মানুষের মধ্যে একধরনের নৈরাজ্যিক অবস্থা কাজ করে। মানুষ তার জীবনের বাস্তব কোনো অর্থ খুঁজে পায় না। অথবা মানুষের যদি তার অধিকার কিংবা অভাব মেটানোর সচ্ছলতা না থাকে, তবে মানুষ সমাজে গ্রহণীয় পথগুলোর বাইরে বিকল্প পথ খোঁজে। যে বেকার ছেলেটি বহুদিন চাকরি পাচ্ছেন না কিংবা যে রিকশাচালকটি সত্য পথে দিনযাপন করেও দিন চালাতে ব্যর্থ, তখন তিনি কী করবেন? ফরাসি সমাজবিজ্ঞানী ডুর্খেইম ও আমেরিকান সমাজবিজ্ঞানী মার্টন দেখান, ‘জীবনে অর্থহীনতা ও নৈরাজ্যের কারণে মানুষ অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হয়।’ সমাজের প্রচলিত মূল্যবোধ, বিশ্বাস, পারিবারিক দায়িত্ব-কর্তব্যবোধ, কারও প্রতি আবেগ তাকে প্রভাবিত করতে পারে না বলেই সে ভিন্ন পথে মুক্তি খোঁজে কিংবা সমাধান চায়। এসব থেকেই কেউ হয়ে ওঠে মাদকাসক্ত বা ভয়াবহ অপরাধী, খুনি কিংবা সন্ত্রাসবাদী। অপরদিকে অপরাধবিজ্ঞানী সাদারল্যান্ডের মতে, কোনো শিশু বা যুবকের মাদকাসক্ত বা মাদক ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত থাকার জন্য তার আশপাশের পরিবেশ এবং তার সঙ্গ অনেকাংশে দায়ী। অনেক সময় না বুঝেই সে অন্যদের দেখাদেখি বা সঙ্গের মাধ্যমে মাদকাসক্তি বা মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে। সমাজের মধ্যে দারিদ্র্য, বৈষম্য, সুযোগহীনতা, নৈরাজ্যের মতো সর্বব্যাপী অসুখ জিইয়ে রেখে এবং তা দূর করার দীর্ঘমেয়াদি কার্যকরী নীতি ও কার্যক্রম না নিয়ে শুধু স্বল্পমেয়াদি কৌশল হিসেবে ক্রসফায়ার, গুম, খুন, হত্যা দিয়ে মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে তা বাস্তব হবে বলে আমাদের মনে হয় না। কেননা কোনো দেশে, কোনো কালে এমন কাজের সাফল্যের তেমন কোনো নজির নেই।

মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম: সহযোগী অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান, ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগ, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
jahir_smile2008@yahoo.com

সুব্রত ব্যানার্জী: সহকারী অধ্যাপক, ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগ, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, স‌ন্তোষ, টাঙ্গাইল-১৯০২। ই-মেইল: banarjee.subrata@gmail.com
-প্রথমআলো

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com