রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:০২ অপরাহ্ন
জিয়াউর রহমান, কানাইঘাট:
বাংলাদেশের গৌরব আর সিলেটের অহংকার, গীতিকার ও সুরকার চৌধুরী আব্দুল ওদুদের জন্ম সিলেট জেলার কানাইঘাট থানার ঝিংগাবাড়ী চরিগ্রাম নামক গ্রামে। তার পিতার নাম হাজী মুক্তার আহমদ চৌধুরী ও মাতার নাম শাহিদা বেগম। তিনি আট ভাই-বোনদের মধ্যে সবার বড়।
প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার জন্য তিনি বেশ কয়েকটি স্কুল-মাদরাসা পরিবর্তন করেন। প্রায় সবখানেই তিনি লেখাপড়ায় ব্যর্থতার পরিচয় দিলেও সাংস্কৃতিক প্রাঙ্গনে তিনি সর্বদাই ছিলেন উজ্জ্বল। বিভিন্ন কারণে তিনি লেখাপড়ায় বেশি দূর এগিয়ে যেতে পারেন নি। মাধ্যমিক গণ্ডিতেই তার লেখাপড়ার সমাপ্তি ঘটে।
অবশেষে ১৯৯০ সালে তিনি লেখাপড়া শেষ করে চাকুরির উদ্দেশ্যে সৌদিআরবে পাড়ি জমান। কিন্তু দেশে থাকাকালীন সময়ে টুকাটুকি লেখার নেশা ছিল। সেই আশা প্রবাস জীবনে শত ব্যস্তাতার মধ্যেও বাসা বাধে। তিনি লেখালেখি শুরু করেন মনের সমস্ত আবেগ দিয়ে।
গীতিকার ও সুরকার আব্দুল ওদুদ ছিলেন একজন বহুমাত্রিক মানুষ। এ পর্যন্ত তিনি কয়েকটি গান-কবিতা, উপন্যাস ইত্যাদি রচনা করেছেন। যখন আব্দুল ওদুদ গান পরিবেশন করতেন দর্শক শ্রোতারা সে গানের মধ্যে খুঁজে পেতেন নিজেদের প্রতিবাদের বাসনা।
বাংলার মাটি ও মানুষের সঙ্গে নিবিড়িতভাবে সম্পৃক্ত তার সমস্ত লোকালয়। শত ব্যস্ততার মধ্যে সমস্ত আবেগ দিয়ে বিভিন্ন ইসলামী গজল আর গান লিখে সুর তিনি নিজেই করতেন। একদিকে কাজের চাপ, অন্যদিকে মনের গোপন বাসনা, উৎসাহিত করেন বন্ধুমহলে তার গান শোনার জন্য, ছুটির দিন সারা রাত শুনা যায় আব্দুল ওদুদের গান। অনেক দূর থেকে প্রবাসী বাঙ্গালীরা চলে যান তার বাসায় তার গান শুনার জন্য।
গতকাল সন্ধ্যায় টেলিফোনের মাধ্যমে জানা যায়, ৩৬৬টি গান তিনি নিজেই লিখেছেন ও বেশ কয়েকটি গল্প-উপন্যাস রচনা করেন। শুধু তাই নয় রচনার পাশাপাশি এর সুরও দিয়েছেন তিনি নিজেই।
বেশ কয়েকটি দৈনিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকায় তার গান ও উপন্যাস প্রকাশিত হয়েছে। প্রবাস জীবনে তার গান ও উপন্যাসের মাধ্যমে তিনি দেশপ্রেমের মাধ্যমে যে দৃষ্টান্ত দেখিয়েছেন তা তুলনা বিরল। তার গানের মাধ্যমে দেশের প্রতি ভালবাসা, মমত্ববোধ, আত্মত্যাগ ইত্যাদির প্রতি মানুষের স্বাভাবিক একটি আকর্ষণ সৃষ্টি হয়।
তিনি তার আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আমি একজন বড় মাপের গীতিকার ও সুরকার হতে চাই। বিশ্বের কাছে গানের মাধ্যমে বাংলাদেশকে আবার নতুন করে পরিচয় করিয়ে দিতে চাই, এই কামনা আমার।